পাতা:শ্রীরায় রামানন্দ - রসিকমোহন বিদ্যাভূষণ.pdf/৫৩০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8 শ্ৰীয়ায় রামানন্দ। শ্ৰীমতীর এই উৎকণ্ঠাময়ী গীতিকা শ্রবণ করিয়া মন্দনিকা আর ক্ষণাঙ্ক বিলম্ব না করিয়া শ্ৰীকৃষ্ণের নিকট গমন করিলেন, যাইবার সময়ে বলিয়া গেলেন, “সখি এই বকুলপাদোপকণ্ঠেই আমাকে দেখিতে পাইবে।” এই স্থলে ভাবপ্রকাশ নামক তৃতীয় অঙ্কের যবনিক পতিত হইল। অতঃপরে মন্দনিক শ্ৰীকৃষ্ণসমীপে উপস্থিত হইয়া দেখিলেন, তঁহার মুখখানি মলিন হইয়া গিয়াছে।--শ্ৰীরাধাপ্রেমের তরঙ্গে তাহার হৃদয়ও প্ৰহত হইয়াছে। তিনি সহচর প্ৰিয়বয়স্তের সহিত অবস্থিত। এমন সময়ে মন্দনিকাকে দেখিয়া শ্ৰীকৃষ্ণের মুখমণ্ডলে আনন্দের উজ্জ্বলরেখা দেখা দিল,-তিনি শ্ৰীমতীর কথা তুলিলেন। মন্দনিক বলিলেন, “বৎস শ্ৰীমতীর কথা আর কি বলিব, তঁাহার লাবণ্য-মাত্ৰ-শেষ।” শ্ৰীকৃষ্ণের উৎকণ্ঠ ক্রমশঃই বদ্ধিত হইয়া উঠিল। তিনি শ্ৰীমতীকে যেরূপ নিগৃহীত করিয়াছেন, যে বাক্যে তিনি শ্ৰীমতীর দৃতিকে নিরাশ করিয়া দিয়াছেন, তাহা তাহার মনে পড়িল । তিনি মদনিকাকে বলিলেন “দেবী। তবে কি শ্ৰীমতী আমার অভিলাষ হইতে প্ৰতিনিবৃত্তা হইলেন ?” মন্দনিক বলিলেন “বৎস তাহার অবস্থার কথা শোন :- যদা নাসে দোষং গণয়তি গুরূণাং কুবচনে ন বা তোষং ধত্তে সরসবচনে নৰ্ম্মসুহৃদাম । বিষাভং শ্ৰীখণ্ডং কলয়তি বিধুং পাবকসমং তদাস্তান্তদ্বত্তিং ত্বরি গদিতুমিত্ৰাহমগমম ৷ অর্থাৎ আমি যখন দেখিলাম গুরুগণের গঞ্জনাময় বচনও তিনি দোষ বলিয়া গণ্য করিতেছেন না, নৰ্ম্মসখীগণের সরস বচনেও তিনি তুষ্ট হইতেছেন না, চন্দনকে তিনি বিষের মত মনে করিতেছেন, চন্দ্ৰ প্তাহার পক্ষে অগ্নির ন্যায় প্ৰতিভাত হইতেছে, তখন তঁাহার এই সকল কথা বলিবার নিমিত্তই আমি তোমার নিকট আসিলাম।” ং ইহা শ্ৰীমতীর উৎকণ্ঠীতিশায্য ও লোকাপেক্ষাস্থ্যাগেরই উদাহরণ।