পাতা:শ্রীশ্রীরামকৃষ্ণ কথামৃত পঞ্চম ভাগ.djvu/২৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কমল কুটারে রামকৃষ্ণ ও প্রাক্ত কেশব > > ক’রে, ভক্তিলাভ ক’রে সংসারে থাকা যায় ; জনকাদি ব্ৰহ্মজ্ঞান লাভ ক’রে ংসারে ছিলেন ; ব্যাকুল হয়ে তাকে ডাকৃতে হয়, তবে দেখা দেন ; তোমরা যা করে, নিরাকার সাধন, সে খুব ভাল ব্ৰহ্মজ্ঞান হ’লে ঠিক বোধ করবে, ঈশ্বর সত্য আর সব অনিত্য ; ব্রহ্ম সত্য, জগৎ মিথ্যা । সনাতন হিন্দুধৰ্ম্মে সাকার নিরাকার দুই মানে ; নানাভাবে ঈশ্বরের পূজা করে ; শাস্ত, দাস্ত, সখ্য, বাৎসল্য, মধুর। রোসন চৌকিওয়ালার একজন শুধু পো ধরে বাজায় অথচ তার বঁাশীর সাত ফোকর আছে ; কিন্তু আর একজন তারও সাত ফোকর আছে, সে নানা রাগ-রাগিণী বাজায় । “তোমরা সাকার মানে না, তাতে কিছু ক্ষতি নাই ; নিরাকারে নিষ্ঠা থাকৃলেই হলো । তবে সাকারবাদীদের টানটুকু নেবে। মা ব’লে তাকে ডাকলে ভক্তি-প্রেম আরও বাড়বে। কখনও দাস্ত, কখনও সখ্য, কখনও বাৎসল্য, কখনও মধুর ভাব। কোন কামনা নাই, তাকে ভালবাসি, এটি বেশ। এর নাম অহেতুকী ভক্তি। টাকা কড়ি, মান সন্ত্রম কিছুই চাই না ; কেবল তোমার পাদপদ্মে ভক্তি। বেদ, পুরাণ, তন্ত্রে এক ঈশ্বরেরই কথা আছে ও তাহার লীলার কথা ; জ্ঞান ভক্তি দুইই আছে। সংসারে দাসীর মত থাকবে ; দাসী সব কাজ করে, কিন্তু দেশে মন প’ড়ে আছে । মনিবের ছেলেদের মানুষ ক’রে ; বলে, ‘আমার হরি’ ‘আমার রাম’, কিন্তু জানে, ছেলে আমার নয়। তোমরা যে নিজনে সাধন করছ, এ খুব ভাল ; তার কৃপা হবে । জনক রাজা নির্জনে কত সাধন করেছিলেন, সাধন করলে তবে ত ংসারে নির্লিপ্ত হওয়া যায়। তোমরা বক্তৃতা দাও সকলের উপকারের জন্ত, কিন্তু ঈশ্বরলাভ ক’রে ঈশ্বর দর্শন করে, বক্তৃতা দিলে উপকার হয়। র্তার আদেশ না পেয়ে লোকশিক্ষা দিলে উপকার হয় না। ঈশ্বরলাভ না করলে তার আদেশ পাওয়া যায় না । ঈশ্বর লাভ যে হয়েছে, তার লক্ষণ আছে। বালকবৎ, জড়বৎ, উন্মাদবৎ, পিশাচবৎ হয়ে যায় ; যেমন শুকদেবাদি চৈতন্তদেব কখনও বালকবৎ, কখনও উন্মাদের দ্যায় নৃত্য করিতেন। হাসে, কাদে, নাচে গায়। পুরীধামে যখন ছিলেন, তখম অনেক সময় জড়-সমাধিতে থাকতেন।”