গুরুমাতা পাগলের পাগলাই হেরি।
করযোড়ে দাড়াইয়া বলে হরি হfর॥
সন্ধ্যার পরেতে রাত্রি হ’ল দুই দণ্ড।
এমন সময় মেঘ হইল প্রচণ্ড॥
আইল প্রবল বৃষ্টি হ’ল দণ্ড চারি।
পাগল বাদল মধ্যে বলে হরি হরি॥
একবার ঘরে যায় হরিবোল দিয়া।
এক বীর বৃষ্টি মধ্যে পড়ে লাফাইয়া॥
বৃষ্টি মধ্যে ঘুরে যেন কুমারের চাক।
জলধর রবে দেয় হরিব’লে ডাক॥
জয় হরি বল মন গৌরহরি বল।
মেঘের গর্জন সঙ্গে গজ্জিছে পাগল॥
যখন শ্রীঅঙ্গে লাগে বিদ্যুতের আভা।
সে সময় হইতেছে বিদ্যুতের শোভা।
আকাশে বিদ্যুৎ শোভা জলদ গর্জন।
পাগলের হাবভাব তেমন তেমন॥
বিদ্যুতের জ্যোতি শূণ্ঠে নিক্ষরে যখন।
পাগলের অঙ্গ জ্যোতি হ’তেছে তেমন॥
উভয় জ্যোতিতে মিশামিশি ঠেকাঠেকি।
ধাধা দিয়া লোক চক্ষে লাগে চকুমকি॥
পাগল বিক্রম দেখি সবে জ্ঞান শূন্ত।
হরি হরি বলিতেছে নাহিক চৈতন্ত॥
মেঘের গর্জন কিম্বা পাগলের রব।
তাহা কিছু নির্দিষ্ট না হয় অনুভব।
জয় হরি বল ধ্বনি শুনা যায় বটে।
নিদিষ্ট না হয় শব্দ কোথা হ’তে উঠে।
চৈতন্য পাইয়। কেহ করিতেছে জ্ঞান।
পাগলের ধ্বনি কেহ করে অনুমান॥
বাহির বাটীতে ছিল চাদোয়। টানান।
অধিকারী কহে চাদ। শীঘ্র খুলে আন।
ছিড়ে যাবে ভিজিবে থাকিলে ঐ খানে।
পাগল করেন মান বিনয় বচনে॥
পাগল কহিছে যদি চাদোয় খসাবে।,
আপনার এত ভক্ত কোথায় বসিবে॥
শুনে মান করে 'অধিকারী মহাশয়।
পাগল সকল লোকে কহিয়া বসায়॥
চাদোয়ার নীচে থাক কেহ না উঠিও।
বৃষ্টি অন্তে সব লোক উঠিয়া যাইও।
সব লোকে বসাইল বৃষ্টির সময়।
বার বাটী অন্তঃপুরে পাগল ভ্রময়॥
কিছু পরে বড় ক্ষান্ত বায়ু বন্ধ পিছে।
জল বিন্দু নাহি পড়ে চাঁদোয়ার নীচে॥
বৃষ্টি অন্তে আকাশে প্রকাশে সব তারা।
পাগল বলিল এবে উঠহে তোমরা।
মহানন্দ মহানন্দ বলি ডাক দিল।
মহানন্দ ডাক শুনে নিকটে আসিল॥
মহানন্দ মাধবেরে কহিল পাগল।
তোমরা উভয় গিয়া দেখহে সকল॥
রসই করিবে যারা সবে দিল ডাক।
চুলা জ্বালাইয়া বলে শীঘ্র কর পাক।
সবে দেখে পাগলের শুকুনা বসন।
চাদোয় অনাৰ্দ্র পূর্ব্বে যেমন তেমন।
খাল, ঘাট, বাটী, আর পুকুরের পথ।
রথ খোলা শুকুন আছয় পূর্ব্ববৎ॥
মধ্যবাড়ী অন্তঃপুর সকল শুকনা।
জল কাদা কিছু নাহি দেখে সর্ব্বজন॥
দেখিয়া সকল লোকে মানিল বিস্ময়।
হরি হরি বলি সবে কার্য্যান্তরে যায়॥
পুকুরের দক্ষিণ পাড়ের দক্ষিণেতে।
বিঘত প্রম জল ঘোর ঝটিকাতে॥
পাগল জিজ্ঞাসা করে মহানন্দ ঠাই।
কেমন ছিলিরে বাপ! বল শুনি তাই॥
মহানন্দ বলে তাকি বলিতে হইবে।
যে ভাবে রাখিলে মোরা ছিলাম সেভাবে।
সেই ভাঙ্গা চাচ খানি দিয়। আচ্ছাদন।
সেখানে ছিলাম লোক দশ বার জন॥
আমরা শুকুনা আছি থেকে সেই স্থান।
তাহার নীচেতে জল বিঘত প্রমাণ॥
সেখানে অধিক বৃষ্টি ভাবে বোঝা যায়।
জলময় হইয়াছে শুকৃনা ডাঙ্গায়॥
দেখে শুনে সকলের লাগে চমৎকার।
কহিছে তারকচন্দ্র রচিয়া পয়ার॥
গুরুপাটে এই খেলা পাগল খেলিল।
হরিচাদ প্রীতে সবে হরি হরি বল॥