মধ্য খণ্ড । ১৬৫ এ গোলোক মাজীর বাড়ী বাসাঘর নিয় । প্রভাতে তারক আছে সেখানে বসিয় ॥ রামধন কীৰ্ত্তনীয়। সূৰ্য্য নারায়ণ । উত্তর পীড়ির পরে বসে দুইজন ॥ তারক বসিয়া আছে উত্তরের ঘরে । হরিনাম করিতেছে মৃদু মৃদু স্বরে ॥ মন গেছে ওঢ়ার্কাদি উড়িয়া নগরী। হরিচাদ পদ ভাবি বলে হরি হরি ॥ গেলোক মাঙ্গীর বাড়ী গোস্বামী গোলোক । এক আসিলেন সঙ্গে নাহি অন্ত লোক ॥ জয় হরি রেলরে গৌর হরিবল । হুহুঙ্কার করি এসে দাড়াল পাগল । প্রতিবাসী লোক সব শুনিতে পাইল । পাগলে দেখিতে সবে দৌড়াইয়া এল ॥ বসেছেন রামধন স্বৰ্য্য নায়ায়ণ । পাগলে দেখিয়া তারা বলে দুইজন ॥ ২ পাগলে যেরূপ দেখি কুষ কৃষ কায়। বেশী দিন বঁাচে হেন বিশ্বাস না হয় ৷ তারক সে কথা শুনি বলিল তখন । বড় মৰ্ম্মভেদী কয় কহিলে দুজন ॥ কথাগুনি গোস্বামী পাগল উঠে ঘরে । বসিলেন গিয়া তারকের শয্যা পরে ॥ তিন ঘর বাড়ীতে দক্ষিণ পোত খালি । উত্তরের ঘর ছেড়ে দিয়াছে সকলি । ঘর শূন্ত পোত আছে বর্ষ চারি পাঁচ । পোতা ঘেরা বন ভাণ্ডি আসালীর গাছ ॥ তাহার দক্ষিণে আম কাটালের বৃক্ষ । শাখা শাখা পল্লবে পল্লবে হ’য়ে ঐক্য ॥ বৃক্ষের তলায় স্থান অতি পরিষ্কার । পল্লবের স্নিগ্ধ ছায়া মৃত্তিকা উপর ॥ কয়ট দোহার ছিল গাছের তলায় ॥ পাগলের ধ্বনি শুনি আসিল তথায় ॥ দেখিয়া পাগল বড় হরিষ অন্তর। ঘর হ'তে আসিলেন তাদের গোচর ॥ জয় হরি বলরে গৌর হরি বল। নামে মহাধ্বনি করি উঠিল পাগল ॥ মেলা দেখা লোক যত পূৰ্ব্বমুখ ধায়। পাগলে দেখিতে সবে সেই বাড়ী যায় ॥ গোলোক মাজার দুই পুত্র আর নারী । পাগলে ঘেরিয়৷ তারা বলে হরি হরি ॥
- ~g:
বলবল হরিনাম শুনিতে অমৃত ॥ মাঙ্গী বলে জেনেরে কেনবা বল মিত। তুমি হৰ্ত্ত কর্তী হও সকলের পিত। আমি মম নারী মেয়ে ছেলে গরুঘর । তুমি এর কৰ্ত্ত এর সকল তোমার ॥ এই মম পুত্র কন্য। এই মম নারী। দিয়াছি তোমারে সব সমর্পণ করি। এক কন্যা বালিক। এ দুটি দুগ্ধ পোষ্য। তুমি সকলের গুরু এর সব শিষ্য ॥ মা নাই সংসারভুক্ত আছেন শাগুরী। সন্তানের স্নেহে থাকে গোলোকের বাড়ী ॥ পাগলে ধরিয়া পাগলের পায় পড়ি। ধূলায় লুণ্ঠি তা হয়ে যায় গড়াগড়ি ॥ " যাৱে পায় তীরে ধরি করে গড়াগড়ি। এইমত পাগলাই করে দণ্ড চারি ॥ লম্ফ দিয়া পড়ে গিয়৷ ভিটার উপর। লতাপাত ছিড়ে স্থান করে পরিষ্কার ॥ তাহা দেখি দলে যত দোহারের ছিল। সকলে ভিটার গাছ উঠাতে লাগিল । পাগল কহিছে তোর হরি বলে নাচ । আমি এক উঠাইব এ কয়ট গাছ ॥ মুহূৰ্ত্তেকে পরিষ্কার করিলেন ভিট। মেয়েদেরে বলিলেন আন জল ঝাটা ॥ যাহাকে বলেন যাহা তারা করে তাই । লেপন করিল ভিটা মেয়ের সবাই ৷ যারে পায় তীরে ধ’রে আনিল সত্বরে । লোক বসাইয়া দিল ভিটার উপরে ॥ সকলে মিলিয়া ব’লে বল, হরি বল । তার মধ্যে ফিরে ঘুরে নেটেছে পাগল ॥ ভ্ৰমিতেছে প্রেমে মেতে নহয় সত্ত্বনা । এমন সময় পেটে উঠিল বেদন ॥ সবাই অস্থির চিত্ত দিব। অবশেল । রাত্রী কালে কহে মোর বেদন বিশেষ ॥ এ দিকে পড়িল ডাক কবির খোলায়। পাগল বলেন গান কর’গে ত্বরায় ॥ গান গায় সবে মিলে মেলার বাজারে । এক এক জন থাকে পাগল গোচরে ॥ গান ভঙ্গ পরে সবে যাইয়। বাসায় । অবস্থা দেখিয়া সবে কঁদিয়া বাসায় ৷ পাগল মাজিরে ধরি বলে মিত মিত।