তান্ত খণ্ড । ওঢ়ার্কাদি যাইবারে, অন্তরেতে কাঙ্গালের ভাব । বাহিরে দেখায় বেশ, নাহি যেন ভক্তি লেশ, r রাজসিক বীরত্ব স্বভগব ॥ মহিষ চৰ্ম্ম পাদুকা, মোজা তোলা পদ চাকা, - পরিধান রেশমের ধুতি। গরদ চাদর গায়, নামাবলীটে মাথায়, হাতে ধরা কাপড়ের ছাতি ॥ বড় এক যঠি হাতে, চৌগোপ আছে মুখেতে, মুখে হরি বোল বলি ধায় । কতক পথ আসিয়ে, ক্ষণেক কাল বসিয়ে, নয়নের জলে ভেষে যায় ॥ রাম ভরত যাত্রাপথে, ওঢ়ার্কাদি শ্ৰীধামেতে, সব ভক্তে কহে হরিচাদ । তৈারা সব থাকৃ হুষ, আসিছে এক মাকুৰ, পূর্ণ হবে তার মনোসাধ । বলিতে বলিতে এসে রামভরত প্রবেশে, ওঢ়ার্কাদি প্রভুর বাটতে । উপস্থিত হ’য়ে এক, পাইয়া প্রভুর দেখা, করযোড়ে দাড়া’ল সাক্ষাতে ॥ অনিমিষ বারী চক্ষে, ' প্রভুর শ্রীঅঙ্গ দেখে, ছাতি লাঠি ছাড়িয়া দিলেন। ঠাকুর বলেন বাচি, তোম। আমি চিনিয়াছি, ভূমে লোটাইয়া পড়িলেন ॥ ঠাকুর বলেন তায়, তোমার ঘর কোথায়, কোথা হ’তে এলে মহাশয় । কহিছে রামভরত, জন প্রভু ত্রিজগৎ, দুঃখী দেখে চেননা আমায় ॥ প্রভু হরিচাদ কয়, থাক থাক মহাশয়, যত দিন লয় তব মন । যাহা ইচ্ছ। তাই খাও, যাহাঁইচ্ছ। তাই লও, কর সদা শ্রীহরি সাধন ॥ থেকে ওঢ়ার্কাদি ধাম, দুই তিন দিন পরে যায়। কতু যায় রোজে রোজে, ময়দ চাপড় ভাজে, ভোগ দিয়া সন্ধ্যারতি গায় ॥ ঠাকুরের আজ্ঞাধিন, রহিলেন কিছুদিন, একদিন ঠাকুরকে কয়। এবে আমি আসি গিয়া, কিছুদিন বেড়াইয়া, আসিয়া মিলিব তব পায়। সদা করে হরিনাম, ইনি হন হরিভক্ত, রামভরত যাত্র করে, { গিয়া তারাইল গ্রামে, থাকি কাছারী মোকামে, পেয়াদ হইব বলি রয় । করেন পেয়াদী গিরি, দিবানিশী বলে হরি, গোমস্ত ভাবেন একি দায় ॥ না করেন রাজ কাজ, থাকিয়া কাছারী মাঝ, দিবানিশী-হরিগুণ গায় । - ইহাকে করিতে ত্যক্ত, আমার যে উচিত নহয় ৷ আমরা করিলে ত্যক্ত, রাজজী হ’বে বিরক্ত, আমাদের মহাপাপ তায় । নায়েব কহে তখন, তুমি প্রেম মহা গন, কাছারীতে থাকা যোগ্য নয় ॥ তব কাৰ্য্য সুমাধুর্য্য, মোরা করি রাজকাৰ্য্য, কি জন্য বিষয় মধ্যে রও । জেনে যে মানু্যতত্ত্ব, হইয়াছ উনমত্ত, -- নয় সে মাত্য ঠাই যাও ॥ আমরা বড় পাযণ্ড, কন্তু কারু করি দণ্ড, তাহ দেখি তুমি দুঃখী হও । কর গিয়া সাধু সঙ্গ, প্রেম কথা রসরঙ্গ, যেখানে যাইয়৷ তুমি পাও ॥ শুনিয়া এতেক বাণী, সাধু উঠিল অমনি, ধীরে ধীরে করিল গমন । যাত্রা করে হরি বলে, এমন সময় কালে, আসিতেছে একটী ব্রাহ্মণ ॥ পদেতে নাহি পাদুকা, তাহার পাইয়। দেখা, পাদুকা ধরিয়া দিল তায় । করে প্রেম কোলাকুলী, মস্তকের নামাবলী’ বেঁধে দিল তাহার মাথায় ॥ গায় গরদ চাদর, বলে কাৰ্য্য নাহি মোর, এত বলি দিল তার গায় । ... • ফেলিয়া হাতের লাঠি, বাম হাতে এক ঘটী, । তাই লয়ে পূর্বদিকে ধায় ॥ রূপদাস বৈরাগীরে, দেখা পাইয় তাহীরে, হাতে হাতে ধরিয়া চলিল । আসিতার আখড়ায়, ঘট ধরি দিল তীয়, হাতের ছতিটা তাকে দিল ॥ বলে তার পায় পড়ি, আমার মস্তক মুড়ি। দেও ভেক হইব বৈরাগী । ষষ্ঠ রৌপ্য মুদ্ৰাছিল, তাহারে ধরিয়া দিল, বলে মোরে কর অর্থত্যাগী ॥
পাতা:শ্রীশ্রীহরি লীলামৃত.djvu/২১৬
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।