পাতা:শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত ( পূর্বাংশ) - অচ্যুতচরণ চৌধুরী তত্ত্বনিধি.pdf/৭০৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৫ম অধ্যায় । ] ইংরেজ আমলের প্রথম শতাব্দী। .ףש চিহ্ন বিবেচিত হইত না । চন্দন চর্চিত দেহে মধ্যবিত্ত গৃহস্থ ছাতা-বেহার। সহ গৃহের বাহির হইতেন। বেহারাগণ শ্রীহটের পত্র নিৰ্ম্মিত বৃহৎ ছাতি দীর্ঘ বংশদণ্ডে উচু করিয়া মাথার উপর ধরিয়া চলিত। ছাত বেছারার ব্যবহার আমরাও কিছু কিছু দেখিয়াছি। সম্রাস্ত ধনিগণ পালকীতে বাহির হইতেন। তামাক পাণ মজলিশি ভদ্রত ছিল, ( এখনও আছে । ) সঙ্গীত চর্চা বেশী রকমই ছিল, * জুয়াখেলাও খুব চলিত। ঘাটু গানে + সকলেই আমোদ উপভোগ করিত, ঘাটুর গানও পরবর্তী কালের ন্যায় ইতর-জন-সেবিত ছিল না,—কৃষ্ণলীলা গীত হইত। ধনী গৃহস্থের বাড়িতে ঘাটু ছোকর রাজভোগে ললিত হইত। দাস দাসীর সংখ্যা বাহুল্য সন্ত্রমাধিক্যের কারণ হইত। ভদ্রলোক মাত্রেই দুই এক জন নফর সঙ্গে না থাকিলে ঘরের বাতির হইতেন না। খালি মাথায় দাস দাসী । বাহির হওয়া অনেক স্থলেই অরীতি গণ্য হইত। মাথায় পাগড়ী, হাতে লাঠি ও সাথে নফর থাকাই ভদ্রত্বের পরিচায়ক ছিল । দাস দাসীদের প্রতি অনেক সময় নির্দয় ব্যবহার করা হইত । “দারে বালি কুড়ালরে শিল, বাদিরে লাথি গোলামরে কিল ।” aদাস দাসীকে ‘কুরুস্ত রাখিবার এই মন্ত্র বা শ্লোক হইতেই ইহার প্রমাণ পাওয়ট যায়। এই সময়ে ও দাস দাসী বিক্রয়ের প্রথা দূর হয় নাই, তবে দাস দাসীর মূল্য নবাবি আমলাপেক্ষ কিঞ্চিং বৰ্দ্ধিত হইয়াছিল এবং বিক্রেতাগণ বিক্রয়

  • সঙ্গীত চর্চার ফল স্বরূপ শ্রীহট্টে অনেক বিখ্যাত সঙ্গীতজ্ঞের ও সঙ্গীত রচয়িওr কবির উদ্ভব হইয়াছিল ; শ্রীহট্টের ইতিবৃত্তের বংশ-বৃত্তাস্ত ও জীবন-বৃত্তান্ত ভাগে ইহাদের কথা লিখিত হইবে।

+ শ্ৰীহট্টের ইতিবৃত্ত—ভৌগোলিক বৃত্তান্ত ভাগে ৯৩ পৃষ্ঠায় ইহার উল্লেখ করা গিয়াছে ; মান, মাথুর ইত্যাদি ভেদে ঘাটুগান রচিত হইত। ঐযুক্ত দীনেশ চন্দ্র সেন কুত “বঙ্গভাষা ও সাহিত্য” গ্রন্থের ৭ম অধ্যায়ে ঐহট্টের কবি সত্যরাম কৃত একটি ঘাটু সঙ্গীত প্রকাশিত হইয়াছে।