পাতা:শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত - উত্তরাংশ.pdf/১২৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১০৭ সপ্তম অধ্যায় ; মোসলমান বংশ বর্ণন ✉ শ্ৰীহট্টের ইতিবৃত্ত মৌলবী পরিবার শহরের আর একটি বংশের উল্লেখ করিব, কাজির বাজারস্থিত মৌলবী পরিবারের কথাই এস্থলে নিৰ্দ্দেশই করিতেছি। ইহাদের পূবর্ব পুরুষ ত্রিপুরাবাসী ছিলেন। মৌলবী মোহাম্মদ ইদ্রিশ খা শ্রীহট্টের সবজজ পদে নিযুক্ত হইয়া আগমন করেন ও বহুবৎসর এই পদে নিযুক্ত থাকিয়া নীলামে প্রভূত ভূসম্পত্তি ক্রয় করতঃ শ্রীহট্টের অন্যতম জমিদাররূপে পরিণত হন এবং এই স্থানেই বাড়ী নিৰ্ম্মাণ ক্রমে এখানকার অধিবাসী হইয়া পড়েন। তাহার দুই পুত্র, মৌলবী আব্দুল কাদির ও মৌলবী আব্দুর রহমান। আব্দুর রহমান বিলাস-সাগরে মগ্ন হইয়া বহু সম্পত্তি নষ্ট করেন। আব্দুল কাদির সাহেব কাজি আদালতে কিছুকাল বিচারক ছিলেন। আব্দুল কাদের সাহেবের মৃত্যুর পর সম্পত্তি কোর্ট অব ওয়ার্ডের অধীন হয়। আব্দুল কাদির সাহেবের একমাত্র পুত্র মৌলবী মোহাম্মদ এহিয়া খান বাহাদুর এক্ষণে ঐ পরিবারে শ্রেষ্ঠ ব্যক্তি। গবর্ণমেণ্ট এ পরিবারে বিনাপাশে বন্দুক রাখিবার ক্ষমতা দিয়া সম্মানিত করিয়াছিলেন। পরগণা-জলালপুর মকদুম রহিম উদ্দীন হজরত শাহজলালের অন্যতম অনুষঙ্গী ছিলেন। তিনি শহর হইতে জলালপুর ধৰ্ম্ম প্রচারার্থ গমন করিয়া হস্তের “আসা” (লাঠি বিং) স্থাপন করিয়াছিলেন। কথিত আছে যে তাহাতে তথায় একটি বটবৃক্ষের উদ্ভব হয় এবং তাহা অদ্যাপি আছে। জলালপুরের দরগার ফকিরগণ এই গাছের পাতা সংগ্রহ পূবর্বক স্থানে স্থানে গমন করিয়া মোসলমানগণ মধ্যে তাহা বিতরণ করে। সাধুর হস্ত রোপিত বৃক্ষ-পত্ৰ সাদরে গৃহীত হয়। রহিম উদ্দীনের পুত্র, সিরাজ উদ্দীন ও আব্দুল মনাফ, ইহার প্রপৌত্রের নাম মকলিস খা, ইহার প্রপৌত্র জুনিন খা, ইহাব প্রপৌত্র লাল মোহাম্মদ, ইহার প্রপৌত্র মোহাম্মদ জসির, ইহার পুত্ৰগণ জীবিত আছেন । ভাদেশ্বরের শেখ বংশ শেখ করম মোহাম্মদ বিবাহ করিয়াছিলেন, শ্রীহট্ট শহরেই তাহার বংশীয়গণ ছিলেন। যখন শ্রীহট্টে নবাব এক্রামউল্লা খাঁ বাহাদুর নবাব হইয়া আগমন করেন, শেষ বংশে তখন ফয়জুল্লা নামে এক ব্যক্তি বৰ্ত্তমান ছিলেন। এক্রামউল্লা খাঁ “ওস্তাদ” বা গুরু জ্ঞানে ভক্তি করিতেন এবং “বখশী” উপাধি দান করেন। বখশীকে প্রত্যহ নবাব দরবারে উপস্থিত হইতে হইত। একদা রাজস্ব বাকির দায়ে ঢাকাদক্ষিণ ও ঢাকাউত্তরের জমিদার বর্গ ধৃত ও শ্রীহট্টে নীত হইয়া অশেষ অত্যাচার ভোগ করিতে ছিলেন। ইহা দর্শন করিতে না পারিয়া বখশী ফয়জুয়া পরদিবস দরবারে অনুপস্থিত হন। জিজ্ঞাসায় নবাব অবগত হন যে পরদুঃখ কাতর ফয়জুল্লা জমিদারদের তাড়না দর্শন করিতে অসমর্থ বলিয়া দরবারে অনুপস্থিত রহিয়াছেন। ইহাতে নবাব লজ্জিত হন ও জমিদারদিগকে অব্যাহতি দেন। জমিদারেরা এই উপকারী সাধুকে নিমন্ত্রণ করিয়া দেশে লইয়া গিয়াছিলেন। ফয়জুল্লা প্রথমে ঢাকাউত্তরে ও পরে ভাদেশ্বরে উপস্থিত হইয়া সেই স্থানের সৌন্দর্যে মোহিত হন এবং তথায় প্রায় একহাল পরিমিত ভূমি নিষ্কর দান করেন, সেই দান প্রাপ্ত ভূমে ফয়জুল্লা পুত্রদ্বয়ের সহিত বাস করেন, সেই স্থানই অধুনা “শেখপাড়া” নামে খ্যাত হইয়াছে। ফয়জুল্লার পুত্র শেখ গোলাম নবি ও শেখ গোলাম মোহাম্মদ। শেখ নবির