পাতা:শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত - উত্তরাংশ.pdf/১৬৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

তৃতীয় ভাগ-দ্বিতীয় খণ্ড 0 শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত ১৪৪ পাল, দত্ত ও দাস বংশ পাল বংশের কথা পঞ্চখণ্ডের পাল ও দত্ত বংশ এ সবডিভিশনে অতি প্রাচীন। “পঞ্চখণ্ডে সতত বুধসভা পালদত্তৌ ক্ষিতীশে” ইতিবাক্যে দেশ প্রদীপের প্রসিদ্ধ গ্রন্থকার এই বিখ্যাত বংশদ্বয়ের অবস্থিতি হেতু পঞ্চখণ্ডের গৌরব ঘোষণা করিয়াছেন। এই পাল বংশের প্রবৰ্ত্তকের নাম রাজা মহীপাল বলিয়া কথিত হয়। পাল রাজগণের নামের তালিকায় বহুসংখ্যক মহীপালের নাম পাওয়া যায়। ভিন্ন ভিন্ন স্থানে তাহাদের কীৰ্ত্তির নিদর্শনও পরিলক্ষিত হয়। পঞ্চখণ্ডের পাল বংশের প্রবৰ্ত্তক র্তাহাদের কেহ কিনা বলা যায় না। হইলেও কোন সময়ে কি কারণে তিনি এদেশে আসিয়া স্বীয প্রভাব বিস্তার করেন, তাহা জানিবার উপায় নাই। পঞ্চখণ্ডের ভূস্বামী বলিয়াই হউক, কি অন্যকোন কারণেই হউক, তিনি “রাজা” বলিয়া খ্যাত ছিলেন। ' প্রায় পঞ্চবিংশতি পুরুষ পূৰ্ব্বে এই বংশে কালিদাস পাল নামে এক ক্ষমতাবান ব্যক্তি ছিলেন, এ দেশে তিনি যে সম্পূর্ণ স্বাধীন ভাবে অবস্থিতি করিতেন, তাহা জ্ঞাত হওয়া যায়। তৎকালে এ অঞ্চল অনেকাংশে অনাবাদ ছিল, কালিদাস স্বীয় লোকজন দ্বারা তাহা বহুলাংশে বাসোপযোগী করেন; এই আবাদকারিগণ মাহিমাল জাতীয় ছিল; ইহাদের সদার দ্বয়ের নাম রাঘাই ও বসাই, ইহাদের বংশধরবর্গ অদ্যাপি আছেন। ফলতঃ কালিদাস পাল হইতেই এ বংশের প্রতিপত্তি বৃদ্ধি প্রাপ্ত হয়, এবং এ বংশতালিকাও কালিদাস পাল হইতে আরম্ভ করা হইয়াছে।’ কালিদাসের পৌত্রের নাম হরপ্রসাদ, ইহার তিন পুত্র, তন্মধ্যে বাবাণসী পাল জ্যেষ্ঠ;ইনি একটি সুবৃহৎ দীর্ঘিকা খনন করাইযা ছিলেন, উহা “বাবপালের দীর্ঘী" নামে খ্যাত হইয়াছে। এই দীর্ঘকা তীরবর্তী পালবংশীয়গণের বসতি গ্রাম “দীঘর পার” নামে আখ্যাত হয। বারাণসীর ভ্রাতুষ্পপুত্র গৌরীচবণ জনৈক বৈষ্ণবকে ২২/০ হাল ভূমি দান করিয়াছিলেন, উহা “বৈরাগীর চক’ বলিয়া খ্যাত হয। গৌরীচবণের ভ্রাতা গৌরকিশোব, র্তাহার পৌত্র ছিলেন চারিজন; তন্মধ্যে জ্যেষ্ঠ রামজীবন পূৰ্ব্ব গৌরব স্মরণে “রাজা রামজীবন পাল” এইবাপ নাম স্বাক্ষর করিতেন। এই সময় পর্যন্ত র্তাহারা একরূপ স্বাধীনই ছিলেন, কাহাকেও বাজস্ব দি দিতেন না। ইহার পর হইতেই তাহারা নবাবের অধীনতা স্বীকার করেন। ছিলেন। এই ভ্রাতৃবর্গের মধ্যে জ্যেষ্ঠ গদা পাল বা গদাধর পাল ঘুঙঘাদিয়া গ্রামে একটি প্রকাণ্ড দীর্ঘিকা খনন দ্বারা কীত্তিমান হইয়াছেন; উক্ত দীর্ঘিকা আজ পর্যন্ত র্তাহার নামানুসারে “গদাপালের দীঘী” নামে খ্যাত আছে, ঘুঙঘাদিয়ার পালবংশীয়গণ র্তাহারই অধস্তন বংশ। গদাপালের কনিষ্ঠভ্রাতা শম্ভু পালও একটি দীর্ঘিকা খনন করাইয়া যশস্বী হন, ঐ দীঘী তাহার নামেই খ্যাত হইয়াছে। ইহাদেরই সবর্বকনিষ্ঠ ভ্রাতা প্রতাপচন্দ্র মোসলমান ধৰ্ম্ম অবলম্বনে প্রচণ্ড খা ১. পালবংশ তালিকা এ গ্রন্থ সংলগ্ন এণ্ড পরিশিষ্টে প্রদত্ত হইবে। ২. পরবর্তী ৫ অধ্যায় দ্রষ্টবা।