পাতা:শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত - উত্তরাংশ.pdf/১৭৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

তৃতীয় ভাগ-দ্বিতীয় খণ্ড 0 শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত ১৫৮ পূজায় তিনি সুবর্ণ নিৰ্ম্মিত দশ সহস্র বিল্বপত্র দ্বারা দেবীর অর্চনা করিয়াছিলেন। এই স্বর্ণ বি-দল ব্যতীত উপস্থিত বহু সংখ্যক ব্রাহ্মণের প্রত্যেককেই স্বর্ণ উপবীত প্রদান করা হয়। ঢাকাদক্ষিণের শ্ৰীমহাপ্রভু বিগ্রহকে তিনি প্রভূত উপহারের সহিত প্রতিবৎসর স্বর্ণ উপবীত ও স্বর্ণ নিৰ্ম্মিত মোহন মালা নিয়মিত রূপে প্রদান করিতেন।” দুৰ্ল্লভদাসের আর একটি কাৰ্য ভূত্য বা ভাণ্ডারী সংগ্রহ। নৌকা পূজার প্রাক্কালে তিনি অনেক ভৃত্য একত্রিত করেন, এক রাত্র মধ্যে এই সংগৃহীত ভৃত্যদের মধ্যে ১০৮টি বিবাহ সম্পাদন করিয়াছিলেন। এই ভাণ্ডারীগণ “দুৰ্ল্লভ দাসী ভাণ্ডারী” নামে খ্যাত আছে। শ্রীহট্ট জিলার মধ্যে র্তাহার লবণের “একচেটিয়া” ব্যবসায় ছিল, তাহার কৰ্ম্মচারী ব্যতীত অন্য কেহ লবণের কারবার করিতে পারিত না। এই ব্যবসায়ে তিনি প্রভূত দন উপাৰ্জ্জন করেন, অদ্যাপি “দুলভদাসী ধন” বলিয়া সেই ধনের প্রবাদ আছে। তাহার দাতৃত্বাদি গুণে মোহিত হইয়া মুর্শিদাবাদের নবাব তাহাকে “মোনশফদার” উপাধি প্রদান করেন। তাহার দুই পুত্র, ইহাদের নাম হুকমত রায় ও সাহেব রায়। হুকমত রায় ও সাহেব রায় হুকমত রায়ের নামোল্লখ পূৰ্ব্বে করা গিয়াছে। হুকমত রায় অশেষ গুণসম্পন্ন ও প্রসিদ্ধ ব্যক্তি ছিলেন। তিনিও জ্যেষ্ঠতাত এবং পিতার মত দাতা ও জনহিতকারী ছিলেন। র্তাহার সময়ে বঙ্গদেশে অকাল উপস্থিত হইয়াছিল, সহস্ৰ সহস্র ব্যক্তি তখন র্তাহার দাতৃত্বে প্রাণ রক্ষা করিতে সমর্থ হয়। তাহার ভ্রাতা সাহেব রায়ের তত্ত্বাবধানে সেই বিতরণ কাৰ্য্য সম্পাদিত হয়। হুকমত রায়ের এই এই দেশ হিতকর পবিত্র কার্যের পুরস্কার স্বরূপ রাজানুগ্রহে নিজ অধিকার মধ্যে তিনি একরূপ স্বাধীনতা লাভ করেন, তিনি নিজ প্রজাপুঞ্জের সবর্বপ্রকার বিচার ক্ষমতা প্রাপ্ত হন; বিচির প্রাপ্তির জন্য এবং অপরাধের দণ্ডভোগ জন্য তাহাদিগকে কাজি প্রভৃতি অপর বিচারকের আদেশের মুখাপেক্ষী হইতে হইত না। তাহার ভ্রাতা সাহেব রায়কে নবাব “রাজাজী” উপাধি দ্বারা সম্মানিত করিয়াছিলেন। হুকমত রায় এইরূপে এক অদ্বিতীয় ক্ষমতাশালী শক্তিরূপে গণ্য হইলেও পৈতৃক ব্যবসায়ে র্তাহার অনুৎসাহ ছিল না; তবে মুর্শিদাবাদের নবাবের অনুগ্রহে এইরূপ “নববি” পাইলে, বাণিজ্যপেক্ষা দেশে সুশাসন বিস্তারেই তাহার মনোযোগ আকৃষ্ট হয়। হুকমত রায়ের অর্থ সম্বন্ধে নানাবিধ আখ্যায়িকা প্রচলিত আছে। তাহার মাতা, বাণিজ্যপেক্ষা দেশ ৬ দুৰ্ল্লভদাসের এ সমস্ত পুণ্যজনক কাৰ্য্যমূলে “কুলের প্রদীপদুলভদাস” ইতি বাক্যের উৎপত্তি হয়। এ অঞ্চ লে কোন বংশের মদ্যে কেহ বিখ্যাত হইলে সে “কুলের প্রদীপ দুলভদাস"হইয়া বলিয়া এখনও গ্রাম্য লোকে বলিয়া থাকে। স্থল বিশেষে অন্য ভাবার্থেও ইহার ব্যবহার হইয়া থাকে, কোন দোষীর দোযের প্রতিবাদ বা প্রতীকার না হইলেও বলা হয় যে, তিনি “কুলের প্রদীপ দুলভদস”না কি ? ৭. ঢাকাদক্ষিণের মিশ্রবংশীয়গণ কর্তৃক ১১৬৬ বাং ১১ই আষাঢ় তারিখের সম্পাদিত “সময় কবার পত্র" নামক দলিলে ইহার উল্লেখ আছে। পূৰ্ব্ববৰ্ত্ত ১ম খণ্ডের ৩য় অধ্যায়ে টীকায় এই দলিল উদ্ধত হইয়াছে। ৮. ধনের আধিক্য জ্ঞাপনার্থ যেমন “কুবেরের ধন”, “যক্ষের ধন” ইত্যাদি কথা আছে। তদ্রুপ এ অঞ্চলে “দুলভদাসী ধন” কথাটিও কোন কোন স্থলে বলা হইয়া থাকে। δυ. “He rendered to Government granted him a Sanad vesting him with the powers of sole Governor of the people in his Jurisdiction “ শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত পূৰ্ব্বাংশ ২য় ভাগ ২য় খণ্ড ৪র্থ অধ্যায় এবং এই অধ্যায়েব ১ম পাদটীকায় ইহার নবাবি প্রাপ্তির প্রসঙ্গ আলোচ্য।