পাতা:শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত - উত্তরাংশ.pdf/১৭৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১৫৯ চতুর্থ অধ্যায় . বড়লিখার পুরকায়স্থ কথা এবং প্রতাপগড়ের বিবরণ 0 শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত শাসনাদিতে পুত্রের আশক্তি দর্শনে পুত্র ধন সংরক্ষণে সক্ষম কি না, তদ্বিষয়ে সংশয়ান্বিত হইয়া, প্রকারান্তরে তদ্বিষয়ে উৎসাহিত করিবার ইচ্চায়, তাহার “কত অর্থ আছে” তাহা দেখিতে চাহেন। হুকমত রায় তখন ভিন্ন স্থানের কাছারীর কৰ্ম্মচারিদিগকে এবং বিভিন্ন গদীর তত্ত্বাবধায়ককে এক নির্দিষ্ট দিনে অর্থরাশি গৃহে আনিতে আদেশ দিলেন। তদনুসারে এক ত্রয়োদশী তিথিতে সমস্ত অর্থ আনীত হয়। সন্ধ্যার পর অঙ্গনে এক বিস্তুত চন্দ্ৰাতপ তলে লণ্ঠনাদির আলোতে অর্থ প্রদর্শিত হইল। তদীয় রায় সেই রাশীকৃত স্বর্ণ ও রৌপ্য মুদ্রার অপর পাশ্বে দণ্ডায়মান হইয়া, তাহাকে দেখিতে পাইতেছেন কিনা, জননীকে জিজ্ঞাসিলে। মা বলিলেন, “বাপ, আমার সাধ মিটিয়াছে, টাকা আর দেখিতে চাহি না, এদিকে আস, তোমার চাদমুখ দেখিব।” হুকমত রায়ের জমিদারী বহু বিস্তৃত ছিল, অপর মহাল ব্যতীতই, (উত্তর শ্রীহট্ট, করিমগঞ্জ ও দক্ষিম শ্রীহট্টের) ষোলটি পরগণায় নিজ নামীয় ১৩টি, পিতৃ নামীয় ৯টি এবং জ্যেষ্ঠতাত নামীয় ২টি, এই ২৪টি তালুক তাহাদের প্রভুত্বের নিদর্শন স্বরূপ অদ্যাপি র্তাহাদের নামে আখ্যাত হইতেছে।” দশসনা বন্দোবস্তের বহুপূৰ্ব্বে যাহারা জীবিত ছিলেন, বন্দোবস্তের সময় পববৰ্ত্তী দ্বারা সেই স্বনামধন্য ব্যক্তিদের নামেও তালুকের নামকরণ হইয়াছিল, ইহার বহু উদাহরণ পাওয়া যায়। পরবর্তী কথা হুকমত রাযের একমাত্র পুত্রেব নাম লবকৃষ্ণ রায়। সাহেব রায়ের পুত্র দুইজন ছিলেন, তাহাদের নাম শরৎচন্দ্র ও গৌরচন্দ্র। এ সংসারে কিছুই স্থায়ী নহে, প্রাণপাত পূৰ্ব্বক লোকে যে ধন অৰ্জ্জন করে, তাহারও ঐ অবস্থা। কিন্তু এই অস্থায়ী ধনের সদ্ব্যবহারে সৎকাৰ্য সম্পাদিত হইলে, তাহাতে যে কেবল পবোপকারও দাতার কীৰ্ত্তিমাত্র ঘোষিত হয় তাহা নহে, ঐ কাৰ্য্যটি সুদূবকাল ব্যবধানে উদাহরণকাপে দণ্ডায়মান হইয়া পরবর্তীকে প্রোৎসাহিত ও জনহিতে নিয়োজিত করিযা থাকে। ঐশ্বর্যের ক্ষণস্থায়িত্বের দৃষ্টান্ত হুকমত রায়ের মৃত্যুর পরেই তদ্বংশীয়গণ বিলক্ষণরূপ হৃদযঙ্গম করিতে সমর্থ হন। লবকৃষ্ণের কোন পুত্র সন্তান ছিল না, সম্পত্তি সংরক্ষণের বুদ্ধিও ছিল না, এরূপাবস্থায় যাহা ১০ এই তালুকগুলিব নাম, নম্বব এবং যে যে পরগণায় উহা অবস্থিত, তাহাব কথা নিম্নে লিখিত হইল ৪— ১. জোড়াবায় নামীয় তালুক-পং ইটা, নং ৪২৯, পং ঢাকাউত্তব, নং ১৫৭। ২ দুৰ্ল্লভদাস নামীয তালুক-পং ছেটলিখা, নং ১১৮, পং বড়লিখা, নং ৪৫, পং ফুরকাবাদ, নং ২৪২, পং ঢাকাদক্ষিণ, নং ৪২৭ এবং ৪৮৯, পং মোহাম্মদপুব, নং ২২, পং চাপঘাট, নং ১৮২, পং পঞ্চ খণ্ড, নং ৫২৫, পং পলডব নং ১ । ৩ হুকমতরায় নামীয তালুক-পং বডলিখা, নং ৩৩, পং ইযাকুব নগব, নং ২১; পং দুবাগ, নং ১, পং চাপঘাট, নং ১৫৯১, ১৫৫৫, ১৫৫৯, পং-কুশিয়ার কুব, নং ৩০৯. পং এগারশতী, নং ২১১ এবং ২৩৫, পং ডেওয়ানি, নং ২০৯, পং ঢাকাদক্ষিণ, নং ৩৯৫ এবং ৪৭১. পং নারাপিং, নং ১০৯, মোট ২৪ টি। এতন্মধ্যে পং ফুবকাবাদেব “তাং দুৰ্ল্লভদাস” নিষ্কব তালুক।