পাতা:শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত - উত্তরাংশ.pdf/১৯২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পঞ্চম অধ্যায় মোসলমান বংশ বর্ণন মাহরডিহি, চাপঘাট ও ডেীয়াদি প্রতাপগড় ও জাফরগড়ের মোসলমান চৌধুরী বংশের প্রাচীনত্ব ও র্তাহাদের বংশকথা পূৰ্ব্বাংশে কথিত হইয়াছে। কুশিয়ার কুল পরগণাস্থ মাইরডিহি এবং বটরশীর চৌধুরী বংশীয়গণও অপ্রাচীন নহেন এবং প্রসিদ্ধ মাইরডিহির মোহাম্মদ বাসির চৌধুরী অতি প্রতাপশালী লোক ছিলেন, তাহার জমিদারীর আয় অল্প ছিল না, পরে করিমগঞ্জের বাজারের স্বত্ব লইয়া বটরশীর চৌধুরীদের সহিত তাহার বিবাদ আরম্ভ হয় বেং তাহাতে হাঙ্গামা ও মোকদ্দমাদিতে উভয় পক্ষেরই শক্তি ক্ষয় হইয়া যায় এবং সম্পত্তি হ্রাস প্রাপ্ত হয়। করিমগঞ্জের মধ্যে বৰ্ত্তমানে চাপঘাটের মোসলমান ভূম্যধিকারী জমিদারীই বৃহত্তম, ইদানীং তত্ৰত্য গোলাম রব্বানী চৌধুরী বংশের উল্লেখ করা যাইতে পারে। ডেওয়াদির চৌধুরী বংশ মজঃরদ শাহজলালের কিঞ্চিৎ পববৰ্ত্তীকালে ডেওয়াদিতে মোসলমানগণের আগমন ঘটে। একজন ভ্রমণকারীই প্রথমতঃ এস্থানে বাড়ী প্রস্তুত করেন; তখন ইহা জঙ্গলময় ও পঙ্কিলস্থান ছিল এবং লোকের বসতি অতি বিরল ছিল। এই ভ্রমণকাৰী (মুলুক সুয়াই) দরগা দর্শনে শ্রীহট্টে শহরে গমন করিলে, দরগার কেহ তাহাব বাসস্থান কোথায় জিজ্ঞাসা করেন; তিনি উত্তর দেন, “যে স্থানে গাছে পিষ্টক ফলে এবং গোবাটে দল মিলে, সেই আমার বাসস্থান দেখিতে কেহ যাইবেন কি” ? একথা শুনিয়া শমিরউদ্দীন নামক দরগার এক পীব “গাছে পিঠা” দেখিতে তৎসহ ডেওয়াদি আসিলেন। মুলুক সুয়াইব স্ত্রী এই পবিত্ৰচেতা অতিথিকে পবিত্র ভাবে খাদ্য দিতেন না বলিয়া তিনি তাহা খাইতেন না, গোচরণ ক্ষেত্রে গিয়া রাখালদের দ্বারা আস্রাদি ফল সংগ্ৰহ করিয়া খাইতেন। মুলক সুয়াই তাহাকে পীরজ্ঞানে মান্য করিতে লাগিলেন। ও মৃত্যুর পর তদীয় কবর পার্শ্বে, র্তাহার শব যেন সমাহিত হয়, এই আশীৰ্ব্বাদ চাহিলেন। সেইদিন শমিরউদ্দীন মাঠে গিয়া খেলাছলে রাখালদিগকে তাহার উপর বালুকা দিতে বলিলেন, সেই বালুকা আচ্ছাদনেই তাহার মৃত্যু ঘটিল! মুলুক সুয়াইর মৃত্যুর পরে সেই স্থানে তাহারও কবর দেওয়া হয়। এই মুলুক সুয়াইর বংশ আছে কি না জানা যায় না; পরে চৌধুরী বংশের পরিচয় পাওয়া যায়। ት ১. “গাছে পিঠা গোবাটে দই মোর সঙ্গে নি যাইবায় কই ?” পিঠা=পিঠাকরা নামক ফল। গোবাট=গরু ঘাইবার পথ, দই=কাদা, কই কেহ ।