পাতা:শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত - উত্তরাংশ.pdf/১৯৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১৭৩ পঞ্চম অধ্যায় : মোসলমান বংশ বর্ণন 0 শ্ৰীহট্টের ইতিবৃত্ত মজলিস আলমের সময় হইতেই এ বংশের প্রসিদ্ধি। বৰ্ত্তমান বংশধর হইতে আলম অষ্টম পুরুষ উদ্ধবৰ্ত্তী ছিলেন। আলমের ভগিণী রূপবতী ছিলেন, তিনি শ্রীহট্টের নবাব কর্তৃক দিল্লীর বাদশাহের অন্দরের জন্য প্রেরিত হইয়াছিলেন। তাহার চেষ্টায় আলম ডেওয়াদি (ডেীয়াদি) পরগণায় জায়গীর প্রাপ্ত হন। এই জায়গীর ভূমে একটি মসজিদ প্রস্তুতের জন্য দিল্লী হইতে তৎকর্তৃক কয়েকটি রাজমিস্ত্রি প্রেরিত হয়, তাহারা এই স্থানে আসিয়া আলমের বৈভবের অল্পতা দৃষ্টে অবজ্ঞার ভাবে বলিয়া উঠে যে, “মজলিস মসজিদের মাল মসল্লাই মিলাইয়া উঠিতে পরিবেন না।” সামান্য লোকের মুখে এই অবজ্ঞাবাণী মজলিস আলম সহিতে পারিলেন না, তৎক্ষণাৎ তাহাদিগকে বধ করিলেন। এ সংবাদ দিল্লীতে পৌছিলে অপরাধীকে ধৃত করিতে আদেশ হয় এবং তজ্জন্য “আসোয়ার” প্রেরিত হয়। মজলিস ভয়ে আত্মহত্যা করেন। তাহার পুত্রই ফারম পাশার চৌধুরীদের আদি পুরুষ। ফরমপাশাতে এখনও কয়েকটি সুবৃহৎ দীঘিকা মজলিসের কীৰ্ত্তি প্রচার করিতেছে, ঐ স্থানটী “দীঘিরপার” নামে খ্যাত হইয়াছে। এই দীঘীগুলির মধ্যে “ধলিদীঘী” বৃহত্তম, ইহার পশ্চিমতীরে আলমের আবাস বাটী ছিল; দীঘীর সুবৃহৎ বাঁধাঘাটেব চিহ্ন এখনও লক্ষিত হয়। আর একটি বৃহৎ দীঘীর নাম “বালিদীঘী"। ইহার উত্তর পারে হিন্দুপল্লী ছিল, ১৫/২০ বৎসর যাবৎ তাহা উঠিয়া গিয়াছে। আলমের দৌহিত্রের নাম শাহ মসউদ, তৎপুত্র মুজাফল খাঁ, ইনি ডেীয়াদির চৌধুরাই সনন্দ প্রাপ্ত হন। ইহার পুত্রের নাম মহবৎ খা। তৎপুত্র কর মোহাম্মদ ও দিনমোহাম্মদ। ১১২৬ সালের লিখিত বাটওযারা পত্রে দৃষ্ট হয যে, এই দুই ভ্রাতাব মধ্যে সম্পত্তি বিভাগিত হয। কর মোহাম্মদের পুত্র মোহাম্মদ ফৈজ প্রভৃতি, ফৈজ-তনয় মোহম্মদ হাদি, ইহার পুত্র গোলাম নজব, ইহাব পৌত্ৰাদি জীবিত আছেন। এই বংশীযগণ বহুকাল পূৰ্ব্ব হইতেই ফরমপাশা পবিত্যাগ পূৰ্ব্বক ভগীবখলা নামক স্থান বাসী। পঞ্চখণ্ড কালার চৌধুরী বংশ শ্রীহট্টেৰ ইতিবৃত্ত পূৰ্ব্বাংশ ২য় ভাগে “নবাবি আমলে দেশের অবস্থা” প্রকরণে পঞ্চখণ্ডে সম্পাদিত সংস্কৃত ভাষায় লিখিত একখানা দলিল মুদ্রিত হইযাছে। উহাতে লিখিত আছে যে ১০৯২ সালে সম্রাট আরঙ্গজেবেব রাজত্বকালে, যখন শ্রীহট্টে নবাব আব্দুর হেম খা বাহাদুরেব শাসন ছিল, পঞ্চখণ্ড ৩খন শাহবাজ খা নামে এক ব্যক্তি জমিদার ছিলেন। ইহাব জমিদারী পঞ্চখণ্ড হইতে খাবিজ হইয়া শাহবাজপুর নামে ভিন্ন পরগণায় পবিণত হয়; তৎপূবেৰ্ব সে স্থান কাউযাকোণা নামে খ্যাত (ও পঞ্চখণ্ডের এলাকাধীনে) ছিল। এই শাহবাজ খাঁ “জাংদার” বংশীয় ছিলেন। একটি প্রবাদ বাক্য আছে ঃ– “পাল, প্রচণ্ড, জাংদার। এই তিন মিরাশদার।” অর্থাৎ পঞ্চখণ্ডে পালবংশীয়গণ, প্রচণ্ড খাঁর সন্তানবগ এবং জাংদার বংশের পববর্তী পুরুষ বৰ্গই প্রধান মিরাশদার, অনা কেহ নহে।