পাতা:শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত - উত্তরাংশ.pdf/২০৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১৮৩ প্রথম অধ্যায় : ছয়চিরি ও বরমচালের বাৎস্য 0 শ্ৰীহট্টের ইতিবৃত্ত প্রসাদ চৌধুরী বাঙ্গালা পয়ারাদি ছন্দে “শনির পাঁচালী, সত্যনারায়ণের পাঁচালি ও ঘোর চণ্ডীর পাঁচালী নামে তিনখানা পাঁচালী রচনা করিয়া গিয়াছেন।” ইহারই জ্ঞাতি ভ্রাতা কমলনারায়ণ রায়চৌধুরী একজন সুশিক্ষিত ব্যক্তি ছিলেন, তিনি ওকালতী ব্যবসায় করিতেন। পূৰ্ব্বোক্ত সাগরদীবীর পারে তিনি চৌধুরী বাজার নামে এক বাজার স্থাপন করিয়াছিলেন। আজ কাল ঐ বাজারের অবস্থা হীন হইয়া পড়িয়াছে। তিনি “একখানা পদ্মা পুরাণ রচনা করিয়া গিয়াছেন।” ইহার পুত্র শ্রীযুক্ত সতীশচন্দ্র রায়চৌধুরী হইতে আমরা এই বিবরণ এবং তদনুষঙ্গে অন্যান্য অনেক বিবরণ প্রাপ্ত হইয়াছি। পরগণা-বরমচাল গং রামনারায়ণ সংবাদ ভানুনারায়ণের দ্বিতীয় পুত্রের নাম রামনারায়ণ। বিষ্ণুপুর গ্রামের স্থাপয়িতা ধৰ্ম্মনারায়ণ র্তাহার তৃতীয় পুত্র ছিলেন। রামনারায়ণের নামান্তর ব্রহ্মনারায়ণ। রাজনগরের রাজ বিপ্লব কালে ইনি পাগড়িয়া নামক পাৰ্ব্বত্য দুর্গ আশ্রয় করিয়াছিলেন। খোয়াজ ওসমানের বাশির খা নামক সেনা নায়ক” কয়েকটি সৈন্য সহ তাহার অনুসরণ করিলে, তিনি পাগড়িয়া নামক পথ দিয়া তথা হইতে বরমচাল চলিয়া যান। তথায় কিছু দিন অবস্থিতির পর, তাহার পুত্রদ্বয়ের উদ্যোগে সেইস্থানে এক প্রকাণ্ড বাটীকা হয়। রাজভ্রাতাকে জনসাধারণ “রাজা” বলিয়াই সম্বোধন করিত, তাহার এই নবনিৰ্ম্মিত বাটিকা কাজেই “রাজবাড়ী” বলিয়া আখ্যাত হয়। ভাটেরার তাম্রশাসনে “নবপঞ্চাল” সংজ্ঞক স্থানটি বরমচাল বলিয়া অনুমতি হয়, এইস্থানে ব্ৰহ্মনারায়ণ বাটিকা প্রস্তুত করায় তাহার নামে ইহা “ব্রহ্মচাল” বলিয়াও কথিত হইয়া থাকে। বরমচালের রাজবাটী বৰ্ত্তমানে ভগ্নাবশেষে পরিণত হইয়াছে। বাড়ীর চারিদিকে প্রায় ২৫টি পুষ্করিণী আছে। ঐ বাড়ীর কিয়দংশ বরমচাল চা বাগানের ভুক্ত হইয়া গিয়াছে। আসাম বেঙ্গল রেলওয়ের ৮ এসব গ্রন্থ প্রকাশিত হয নাই। যে যে বংশে গ্রন্থকারগণের উদ্ভব, সমর্থ হইলে সেই বংশীয় ব্যক্তিবর্গেরই কৰ্ত্তব্য যে তাহা মুদ্রিত করিয়া বিলুপ্তির হস্ত হইতে রক্ষা কবা। কমল নাবায়ণেব মৃত্যুর পব শ্ৰীযুত গিরীশচন্দ্র বায চৌধুরী “বিলাপলহরী” প্রকাশ করিয়াছেন। কিন্তু তাহার পবিবৰ্ত্তে যদি তদীয় গ্রন্থ খানা প্রকাশিত হইত, তাহাতে সাহিত্যের সেবা, তথা মৃতের নাম রক্ষা হইত না কি ? ৯, “১২৩৪ বাংলা নহে ১৩ বৈশাখ” তারিখের লিখিত বংশ তালিকায এইরূপই লিখিত আছে। শ্ৰীযুত সতীশচন্দ্র রায়চৌধুরী আমাদিগকে যে বংশ তালিকা দিয়াছেন, তৎসহ ইহাব ঐক্য নাই ও তদনুসাবে ধৰ্ম্মনারাযণ দ্বিতীয় এবং রামনারায়ণ তৃতীয়। পবস্তু তিনি রামনারায়ণের নামান্তব (ব্রহ্ম নারায়ণ) থাকা একবাবে অস্বীকার করেন এবং ব্রহ্মচাল নামের সহিত ব্ৰহ্মনারায়ণ নামের সম্বন্ধ প্রসঙ্গেব প্রতিবাদ কবিয়াছেন। ১০ বাশির খা সৈন। সহ যে স্থানে অবস্থিতি করিয়াছিলেন. তাহা একটি টীলা, ঐ টীলাটি “বাশির খাঁর টীলা” নামে খ্যাত হইয়াছে। বরমচালেব শ্রীপুর মৌজায় দিগাইছড়া চা-বাগানেব নিকট একটা স্থান “খোযাজ ওসমানের গড়" নামে কথিত হয়। এই স্থানে তাহাব কোন সৈনিক বা স্বযং তিনি সৈন্য সমাবেশ ও গড় প্রস্তুত কবিয়াছিলেন, সন্দেহ নাই ।