পাতা:শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত - উত্তরাংশ.pdf/২১৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১৯৫ দ্বিতীয় অধ্যায় : ইটা,বানচাল প্রভৃতি স্থানের কাশ্যপ গোত্রীয় ব্রাহ্মণ 0 শ্ৰীহট্টের ইতিবৃত্ত উক্ত তিন বংশীয়গণ বরমচালের আদিবসতকার ও প্রধান ছিলেন। বৰ্ত্তমানে এই তিন বংশীয়গণের কেহ বরমচালে নাই; এক রমণীর অভিশাপই বংশ বিনাশের হেতু। বরমচাল পরগণার আলীনগর’গ্রামে কাশ্যপ গোত্রীয় রতিরাম তর্কালঙ্কার স্বীয় শিষ্য সেন বংশীয়ের আগ্রহে বাস-বাটী নিৰ্ম্মাণ করিয়াছিলেন। র্তাহার পুত্রের নাম জয়রাম, তৎপর রাম দেব এবং তাঁহার পুত্রের নাম জগন্নাথ ভট্টাচাৰ্য্য।” নারী বজ্জন জগন্নাথ ভট্টাচাৰ্য জীবিত থাকা কালে তদীয় শিষ্য কত্ত্বক একটা অতি নিষ্ঠুর ঘটনা ঘটিয়াছিল। তাহার শিষ্য তত্ৰত জমিদার “সেন” বাডুয়া পাহাড়ে শিকারে গমন করিয়াছিলেন। দুর্ভেদ্য বনে প্রবিষ্ট হইয়া ইতস্ততঃ পরিভ্রমণ কালে তিনি অপূৰ্ব্ব রূপবতী এক বনদেবীর দর্শন পাইয়া বিমোহিত হন। বনদেবী রূপিনী সেই কানন বাসিনী রমণীকে তিনি সাদরে গৃহে আনিলেন। কিন্তু কিছুদিনের মধ্যেই এই কামিনীর প্রতি র্তাহার আশক্তি কমিয়া গেল। তিনি ভাবিলেন, এই কামিনী মানবী নহেন—মায়াবিনী; নতুবা দর্শন মাত্রেই তৎপ্রতি র্তাহার এত আশক্তি জন্মিবে কেন ? তিনি এই কথা নিজ গ্রামস্থ কৃষ্ণাত্ৰেয গোত্রীয় জনৈক চক্রবর্তীকে ও ধর বংশীয় এক ব্যক্তিকে জানাইলেন এবং তাহাদের পরামর্শে তিনজনে একত্রে উক্ত রমণীকে হাকালুকির মধ্যস্থ কাচলিয়া টলায় লইয়া গেলেন ও সেই স্থানে রাখিয়া চলিয়া আসিলেন। সেই কামিনী জলবেষ্টিত নিৰ্জ্জন স্থানে পবিবজ্জিতা হইয়া কি করিয়াছিলেন, জানা যায় না। কিন্তু কিছুকাল মধ্যে সেন ও চক্ৰবৰ্ত্তীর বংশ বিলুপ্তি ঘটিল। ব্যাপাব দেখিয়া “ধর” ভয়ে দেশত্যাগী হইলেন। ইহা যে আশ্রযবিহীনা অবলার উপর অন্যায অত্যাচারের ফল নহে—ইহা যে বিনাদোষে পরিবজ্জিতা সেই কামিনীর আইভশাপের পরিণাম নহে, তাহা কে বলিবে ? অভিশাপের ভযে ধব দেশত্যাগী হইতে তত্রত ভট্টাচাৰ্য বংশীয় জগন্নাথ একাই সেই স্থানে বহিলেন। কিন্তু তাহার অবস্থা অনেকটা হীন হইয়া পড়ি, তাহার পুত্র গঙ্গারামও তদবস্থায় সেই স্থান বাসী ছিলেন। তৎপুত্র নন্দরামেরও সেই দশা। সতী রুক্সিনী নন্দরামের এক কন্যা সন্তান ও এক পুত্র হয়, ইহাদের নাম রুক্সিনী ও ভবানন্দ। রুক্সিনীকে তত্ৰত্য রাউৎ গ্রামবাসী বাৎস্যগোত্রীয দুর্গাচরণ চক্ৰবৰ্ত্তী বিবাহ করিয়া সেই স্থানে আগমন করেন। স্বামীর মৃত্যুব পর রুক্মিনী স্বামীর সহিত “সহমরণ” গমন করিয়া ছিলেন। ভবানন্দের শিবানন্দাদি চারি পুত্র হয়, কনিষ্ঠ দুর্গাসদয় খ্যাতনামা লোক ছিলেন। ১৮৫০ খৃষ্টাব্দে দুর্গাসদয়ের জন্ম হয়, আট বৎসর বয়সে তিনি পিতৃহীন হন ও ভাটেরা স্কুলে অধ্যায়ন করিয়া ছাত্রবৃত্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। আর্থিক অবস্থা অতি শোচনীয় ছিল বলিয়া সেই সমযেই তাহাকে শিক্ষায় বিরত হইয়া অর্থ চিন্তায় ১০ শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত উত্তবংশ ১ম খণ্ড ৪র্থ অধ্যাযে “সনন্দ প্রাপক জযবাম” কথা দ্রষ্টব, উভয বংশে তিন পুরুষে নামেব আশ্চর্য ঐক্য, উভয বংশই ববমচাল বাসী। ১১ তত্রত। “সেনেব বাউী”বাজবাডীর ন্যায প্রকাণ্ড,তদ্ব্যতীত “সেনেব গোঘাট” প্রভূতি সেন বংশের স্মৃতি জাগাইযা দেয।