পাতা:শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত - উত্তরাংশ.pdf/২২২

তৃতীয় ভাগ-তৃতীয় খণ্ড 0 শ্ৰীহট্টের ইতিবৃত্ত ২০২ টেংরার ভরদ্বাজ গোত্রীয় ব্রাহ্মণগণ আদি কথা মহারাজ আদি ধৰ্ম্মপার যজ্ঞে ভরদ্বাজা গোত্রীয় গোবিন্দচাৰ্য্য মিথিলা হইতে আগমন করেন বলিয়া কথিত আছে। গোবিন্দচাৰ্য্য বংশের আদি কথা অতি অল্পই জ্ঞাত হওয়া যায়। কোনও মতে গোবিন্দ বংশীয় চন্দ্রকান্ত শিরোমণির তিন ভ্রাতার মধ্যে সৰ্ব্ব জ্যেষ্ঠ সাধুহাটীবাসী হন; মধ্যম জয়ানন্দ শিকদারের বংশধর বর্গ বালিশিরার রাজপুর গ্রামের অধিবাসী বলিয়া গণ্য হন; বলভদ্র সবর্ব কনিষ্ঠ ছিলেন, বলভদ্র বিশারদের বংশীয়গণ লংলার বিশারদবংশ বলিয়া খ্যাত। এই বংশীয় জগন্নাথ শিরোমণি নামক অপর একব্যক্তি লংলার ভটেরপাড়া গ্রামবাসী হন বলিয়া কথিত আছে। ইটার টেংরা গ্রামে যাহারা বাস করিতেছেন, তাহারা লংলার ভরদ্বাজ বংশেরই একটি শাখা বলিয়া কথিত; এই শাখার আদি পুরুষের নাম রমাপতি। রমাপতির পরবর্তীগণ রমাপতি তপোনিষ্ঠ পুরুষ ছিলেন, জেলা শহরের সন্নিকটে মনুনদীর তীরে তিনি বাস করতঃ নিত্য নৈমিত্তিক ক্রিয়ানুষ্ঠানে রত ছিলেন। বৰ্ত্তমান পৰ্ব্বতপুর চা-বাগানের নিকট নিধিপতি বংশজ বামনাবায়ণ ও লক্ষ্মীনারায়ণ নামে দুই ভ্রাতা বাস করিতেন, ঐ স্থানে ইহাদের নামীয় “বামলক্ষ্মণের দীঘী” তদাপি দৃষ্ট হয়; ইহাবাই রমাপতিকে টেংরাতে আনিয়া স্থাপন করেন। এই বংশের ব্যবসায় মিরাসদারি। যাদবচন্দ্র ও মহেশ্বর নামে রমাপতির দুই পুত্র হয়, তন্মধ্যে মহেশ্বরের পুত্রের নাম রামচন্দ্র, তাহার পুত্র রামভদ্র। রামভদ্র তান্ত্রিক পণ্ডিত ছিলেন এবং মুর্শিদাবাদের নবাব-সভায় ব্যবস্থাপক পণ্ডিতের পদে বরিত হইয়াছিলেন। কথিত আছে যে রামভদ্র এক দ্বিগ্বিজয়ী পণ্ডিতকে কূট কৌশলে পরাস্ত করিলে, উক্ত দিগ্বিজয়ী অভিশাপ দেন যে র্তাহার সপ্তম পুরুষ পর্যন্ত যেন তদ্বংশে সভাপণ্ডিতের গৌরব কেহ ভোগ করিতে না পারে। সতী—রামভদ্রের পত্নী স্বামীর মৃত্যুর পর সহমৃতা হইযাছিলেন। রামভদ্রেব কনিষ্ঠ পুত্র জগন্নাথ ন্যায়বাগীশ জয়ন্তীয়াপতির সভাপণ্ডিত নিযুক্ত হইয়াছিলেন, কিন্তু অচিবেই মৃত্যুমুখে পতিত হন, ইহা সেই দিগ্বিজয়ী বিপ্রের অভিশাপের ফল কি না কে জানে ? রামভদ্রের জ্যেষ্ঠ পুত্র কাশীধর, তৎপুত্র বিষ্ণুপ্ৰসাদ একবার বিশেষ আড়ম্বর সহকারে এক নৌকাপূজা করেন। ইহার পুত্র জীবিত আছেন। রামভদ্রের কনিষ্ঠ সহোদরের নাম রঘুনন্দন। ইহার অনুরোধে পঞ্চখণ্ড (নোয়াগ্রাম) হইতে কৃষ্ণাত্রেয় গোত্ৰীয় রত্নেশ্বর ন্যায়বাগীশ টেংরায় আসিয়া বাস করেন। রঘুনন্দনের পুত্রের নাম রামনাথ, ইহার পুত্র বিজয়কৃষ্ণ। বিজয়কৃষ্ণ একবার মহা আড়ম্বরে মহাভারত পাঠ ককাইয়া ছিলেন, ৪. শ্ৰীযুত সতীশচন্দ্র রায়চৌধুরী(বিষ্ণুপুর)ইহারবংশতালিকাদি আমাদের নিকট প্রেরণ করিয়াছিলেন।তদ্ব্যতীত টেংরা হইতে শ্ৰীযুত রাধানাথ ভট্টাচাৰ্য ঐ বংশ এবং তত্ৰত কৃষ্ণাত্রেয় গোত্র সম্বন্ধে অনেক কথা আমাদিগকে জ্ঞাপন করিয়াছেন।