পাতা:শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত - উত্তরাংশ.pdf/২২৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

তৃতীয ভাগ-তৃতীয় খণ্ড 0 শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত ২০৬ পুত্রই উপাধি ভূষিত ছিলেন, তাহাদের নাম হরিশ্চন্দ্র বিদ্যারত্ব, রামশরণ তর্কালঙ্কার, গিরিধর বাচস্পতি এবং কৃষ্ণচরণ শিরোমণি। ইহার পুত্র শ্ৰীযুত কমলাকান্ত ন্যায়ভূষণ জীবিত আছেন। লংলার গৌতম গোত্রীয়গণ কৃষ্ণপুর ও দেওগাঁর নামোৎপত্তি মহারাজ আদি ধৰ্ম্মপার সময়ে সমাগত গৌতম গোত্রীয় কোন কোন ব্রাহ্মণ পরবর্তী কালে জিলার বিভিন্ন স্থানে বিস্তৃত হইয়া পড়েন। লংলায় সববপ্রথমে গৌতম গোত্রীয় যিনি আগমন করেন, তাহার নাম কৃষ্ণপ্রসাদ, তাহার নামানুসারে তদীয় বসতি স্থান কৃষ্ণপুর বলিয়া খ্যাত হয়। কৃষ্ণপ্রসাদের প্রপৌত্র হরিপ্রসাদ এক প্রসিদ্ধ ব্যক্তি ছিলেন; তিনি অনেক ভূসম্পত্তি অজ্জন করেন। ইহার প্রপৌত্রের নাম বিষ্ণু বল্লভ ও দেববল্লভ। দেববল্লভ শিকদারি প্রাপ্ত হইয়াছিলেন ও কৃষ্ণপুরের দক্ষিণ পাশ্বে একগ্রাম বসাইয়া তথায় দীঘিকা সমন্বিত একবাড়ী প্রস্তুত করেন, তাহার নামে ঐ দীঘী “দেওদীঘী” এবং গ্রামটি “দেওগাও” নামে আখ্যাত হয়। মোসলমানকে কন্যাদান দেববল্লভ একদা তীর্থ পৰ্যটনে গিয়াছিলেন, ঐ সময় সকি সালামত নামে এক ধনবান মোসলমান শ্রীহট্টে আসিতেছিলেন। অর্থাভাব হওয়ায় ইহার নিকট হইতে তিনি পঞ্চদশটি স্বর্ণমুদ্রা ধার করিয়া ব্যয় নিববাহ করেন। পূৰ্ব্বে (পূৰ্ব্বাংশ) বলা গিয়াছে যে উক্ত সকি সালামত রাজভ্ৰাতা বীরচন্দ্র নারায়ণের কন্যা বিবাহ করিয়াছিলেন। সকি সালামত এদেশে কিছুদিন অবস্থিতির পর একদা দেববল্লভের গৃহে আগমন করেন। কথিত আছে যে তখন তাহার কন্যা কৌতুহল বশে বেনায় অন্তরাল হইতে এই সন্ত্রান্ত মোসলমানকে দেখিতেছিলেন। হঠাৎ সকি সালামত যদৃচ্ছ ক্রমে সেদিকে নিষ্টীবন ত্যাগ করিলে, ছিদ্র পথে র্তাহার এক কণিকা উক্ত ব্রাহ্মণ তনয়ার অঙ্গে পতিত হয়। ইহাতে উহার জাতি গিয়াছে মনে করিয়া শিকদার সকি সালামতের করেই কন্যা সমর্পণ পূৰ্ব্বক কাশীধামে চিরতরে চলিয়া যান। শিকদার তনয়া সকি সালামতের দ্বিতীয়া পত্নী হন।* ৬. সকি সালামতের বংশ কথা ৯ম অধ্যায়ে উক্ত হইবে। ইনি লোদী বংশীয় সম্রাটগণের সময়ে ভ্রমণে বহির্গত হইযা পরে এদেশে আগমন করেন। রাজবংশ, বাজভ্ৰাতৃবংশ এবং তাহার বংশে ঐক্য থাকা বিধেয়। প্রথম ও দ্বিতীয় বংশে বৰ্ত্তমানে ১২/১৩ পুরুষ চলিতেছে। রাজকৰ্ম্মচারী ইন্দানগবস্থ মণ্ডল বংশেও পুরুষ সংখ্যা তদ্রুপই। শিকদার বংশ ও সন্ধি সালামত বংশের পুরুষ সংখ্যার সহিত তাহা সবর্বাংশে ঐক্য হয় না; ইহাব করাণ কি? হয় এই বংশের পুরুষগণ দীর্ঘজীবী, নয় মধ্যে ২/১ পুরুষের নাম বাদ পডিয়া থাকিবে। আর একটি কথা বিবেচ্য, রাজভ্ৰাতৃবংশ ও শ্রীচৈতন্য পার্ষদ বংশে ক্রমানুযায়ী পুরুষ সংখ্যার সমতা থাকা আবশ্যক। এই খণ্ডেই শিবানন্দ ও বাসুঘোষ বংশের যে বিবরণ পাওয়া যাইবে, এই গৌতম গোত্রের বংশাবলীর সহিত তাহাব বিশেষ অনৈক্য হয় নাই। ফলতঃ সমসাময়িক বংশ সমূহের পুরুষ সংখ্যার যে ইতর বিশেষ দৃষ্ট হয়,তাহাকে কোন বংশে স্বল্পজীবী, কোন বংশে বা দীর্ঘজীবী জনবহুলাই এই বৈষম্যের কারণ বলিয়া অনুমতি হয়।