পাতা:শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত - উত্তরাংশ.pdf/২৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

গোত্রাদি হিন্দুর সামাজিকতার প্রধান লক্ষ্য, তাহাদের ব্যষ্টি ও সমষ্টিগত পবিত্রত রক্ষা। ইহা হইতেই কালক্রমে পরস্পরের মধ্যে পার্থক্য সংঘটিত হয়। এই পার্থক্যের বিভিন্নতায় এক এক জাতির মধ্যে বিভিন্ন ভাব এবং তাহাতে বিভিন্ন সম্প্রদায়ের উৎপত্তি হইয়াছে। গোত্রাদির উৎপত্তি এইরূপ কোন কারণসস্তুত কি না কে বলিবে ? “গোত্ৰং চাভিজনঃ কুলমিত্যমরঃ ” “গোত্ৰং বংশপরম্পরা প্রসিদ্ধ মাদিপুরুষং ব্রাহ্মণরূপম।” ইতি শব্দকল্পদ্রুমঃ । দেখাও যায় যে, বিশ্বামিত্র জমদগ্নি প্রভৃতি কুলপ্ৰবৰ্ত্তক ঋষিগণ হইতেই গোত্রোৎপত্তি। কথিত আছে যে, গোত্র-যাগ সম্পাদনকারী ঋষিগণের নামেই গোত্র প্রতিষ্ঠা হইয়াছে। এবং এরূপযজ্ঞে যাহারা ঋত্বিক থাকিতেন, তাহদের নামে প্রবরের উৎপত্তি হইয়াছে। গোত্রের সংখ্যা অনেক, প্রত্যেক গোত্রে একাধিক প্রবর আছে। ক্ষত্ৰিয় বৈশ্যাদি, তাহদের পুরোহিতের গোত্রের নামে পরিচয় প্রদান করেন। এবং শূদ্রেরও গোত্রপ্রাপ্তি তদ্রুপেই হইয়াছে।” বঙ্গীয় ব্রাহ্মণ মধ্যে সপ্তশতী ব্রাহ্মণগণই আদি বলিয়া অনুমিত। ইহাদের মধ্যে সাধারণতঃ শুনকাদি আটটি গোত্র প্রচলিত। ইহার পরেই আদিশূরের আনীত পঞ্চ ব্রাহ্মণের প্রভাব। তাহাদের আগমনকাল নির্ণয়ে বহু ভিন্ন মত আছে বারেন্দ্রকুলপঞ্জী মতে ৭৩২ খৃষ্টাব্দে তাহাদের আগমন ঘটে। তাহাদের নাম ঃ ১। শাণ্ডিল্য গোত্রীয় ভট্টনারায়ণ ২। কাশ্যপ ” দক্ষ ৩ । বাৎস্য ” ছান্দড় ৪। ভরদ্বাজ ” শ্রীহর্ষ ৫ । সাবর্ণ ” বেদগৰ্ভ এই পঞ্চ বিপ্র পূৰ্ব্বোক্ত সপ্তশতীর কন্যা বিবাহ করিয়া এদেশে বাস করেন। কালক্রমে র্তাহাদের ৫৬টি পুত্র জাত হয়, এই ৫৬ জনের বাসের জন্য যে ৫৬টি গ্রাম নির্দিষ্ট হয়, তাহাতে “গ্রামীণ” শব্দ হইতে, পরিচয় জ্ঞাপক এক এক “গাঞ্চি” নির্দিষ্ট হইয়াছে।" 血 এই সকল ব্রাহ্মণগণ মধ্যে যাহারা রাঢ়দেশে বাস করেন, তাহারা রাঢ়ী এবং যাহারা বরেন্দ্ৰ-ভূমে বাস করেন, তাহারা বারেন্দ্র ব্রাহ্মণ নামে পরিচিত হন। আদিশূরের আনীত এই বিপ্রবর্গ পঞ্চগোত্রীয় বলিয়া প্রখ্যাত। তারপর ১৬৬০ খৃষ্টাব্দে গৌড়াধিপ শ্যামলবৰ্ম্ম আরও ৩ “ক্ষত্রিযবৈশ্যায়ারুপাদিষ্টগোত্ৰং শুদ্ৰস্যাতিদিষ্ট গোত্ৰং।” ইতি উদ্ধাহতত্তম। ৪. ভট্টনারায়ণের ১৬ পুত্রের উপাধি অনুসারে শাণ্ডিলাগোত্রে ১৬ গাঞি;এইরূপ কাশ্যপগোত্রে ১৪ গাঞিবাৎস্যের গাঞি সংখ্যা ১১,ভবদ্বাজের ১৪, এবং সাবর্ণের ১১,মোট ৫৬টি। আবার কোন কোন কুলাচার্যের মতে গাঞি সংখ্যা ৫৯টি ।