পাতা:শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত - উত্তরাংশ.pdf/২৪৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

২২৭ ষষ্ঠ অধ্যায় : প্রাচীন দত্ত-বংশ বিবরণ 0 শ্ৰীহট্টের ইতিবৃত্ত নায়ক দত্ত যাদব দেশত্যাগী হইলে তাহার অপর ভ্রাতা নায়ককে লইয়া তদীয় জননী বাণিয়াচুঙ্গের জমিদারের শরণাপন্ন হন। বৃদ্ধ হরিদাস দেখিলেন ইহা তাহার পক্ষে যশস্কর নহে, সেই জন্য বিশেষ আড়ম্বর সহকারে বাণিয়াচঙ্গ হইতে ভ্রাতৃবধূ সহ ভ্রাতুষ্পপুত্রকে আনাইয়া তিনি “ঠাকুর” পদবি গ্রহণ জন্য র্তাহাকে বলিলেন। কিন্তু নায়ক দুই খুল্লতাত বিদ্যমানে “ঠাকুর” পদবি গ্রহণে সম্মত হইলেন না। হরিদাস নিজ জামাতাকে শাসনে স্থাপন করিয়াছিলেন। ইহারই হস্তে নায়কের শিক্ষাভার প্রদত্ত হয়। এই জামাতা পরে শ্রীহট্টের উজিরের অপবাদ করিয়া গৌড়াধিপতির কাছে এক পত্র লিখেন। তখন নায়কের সাক্ষ্যে উজির অপবাদ মুক্ত হন। বলা বাহুল্য যে, তখন জামাতা দাস মহাশয়ের শাস্তির আদেশ হয়, পাইক গণ র্তাহাকে— “অশেষ বীভৎস করি মারয়ে অনেক।” গ্রন্থকৰ্ত্তা গোপীনাথ কাজেই তখন নায়ক সহস্র মুদ্রা প্রদানে ইহাকে শাস্তি হইতে মুক্ত করেন। নায়কের পুত্রের নাম শুভরত্ন খাঁ, তৎপুত্র হৃদয়ানন্দ, ইনি পুরন্দর খাঁ পদবিতে প্রসিদ্ধ ছিলেন। নায়কের দ্বিতীয় পুত্রের নাম রামানন্দ, ইহার মধ্যম পুত্রের নাম রামনাথ, রামনাথের পুত্র ধনরাম, তাহার তৃতীয় পুত্রের নাম গোপীনাথ । এই গোপীনাথ দত্তই “দত্ত বংশাবলী” রচয়িতা। কেবল তাহাই নহে, গোপীনাথ মহাভারতের “দ্রোণপবর্ব” “নারীপবর্ব” প্রভৃতি পয়ারে রচনা করেন। এতদ্দেশীয় মণিপুরীগণ উত্থান একাদশী মাসে, গোপীনাথের নারীপৰ্ব্ব পাঠ করিয়া থাকে। গোপীনাথ দত্তের চারিপুত্র, তন্মধ্যে সৰ্ব্ব কনিষ্টের নাম সোণারাম দত্ত, ইহার স্বহস্ত লিখিত প্রায় দেড়শত বৎসরের প্রাচীন পুথির অনুসরণে এই বিবরণ লিপিবদ্ধ হইয়াছে। সোণারামের অগ্রজ রামজীবন বৈষ্ণব হন। তাহার অগ্রজ রামনারায়ণ, তদগ্ৰজ (অর্থাৎ তাহাদের সবর্ব জ্যেষ্ঠ ভ্রাতাই) রাধাবল্লভ দত্ত। হরিদাসের কথা বলা হয়েছে, হরিদাসই ভূনবীর দত্ত বংশের আদি। হরিদাসের কনিষ্ট পৌত্র বসন্ত দত্তের পুত্র সন্তান ছিল না, তাহার একমাত্র কন্যাকে শ্রীনাথ তলাপাত্র সহ বিবাহ দেন। বসন্ত দত্তের জ্যেষ্ঠ পুত্ৰ বুদ্ধিমন্তের প্রথম পুত্রের নাম মহেশ দত্ত। ইহার এক পৌত্র “স্ত্রী হেতু” লংলায় গমন করেন। বুদ্ধিমত্তের ২য় পুত্রের নাম শ্রীরাম; রতনরাম নামে ইহার এক পৌত্র দৌলতপুর গমন করেন। এবং অপর পৌত্র দয়রাম আগনাতে চলিয়া যান। বুদ্ধিমত্তের অপর পুত্রের নাম শ্রীনাথ। ইহার দুই পৌত্র রতন ও রঘুদত্তের শাখা (পরিশিষ্টে) বংশ-তালিকায় উদ্ধৃত হইয়াছে ইহার অপর পৌত্র ধনরাম “চৌধুরাই লাগি উজড়িল দেশ” বলিয়া বর্ণিত আছে। ভীমশীর দত্ত ভীমশীর দত্ত পরিবারের আদি শ্ৰীমন্ত রায়ের প্রপৌত্র তিলকরাম যে এক প্রসিদ্ধ ব্যক্তি ছিলেন তাহা গোপীনাথ দত্তের লিখিত— ১১ পৈলে বৰ্ত্তমানে তলাপাত্র-বংশ বলিয়া কোন বংশ নাই।ঢ পবিশিষ্টের লিখিত বংশ তালিকায়নামাবলীও একে অন্যের সম্বন্ধ দ্রষ্টব্য।