পাতা:শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত - উত্তরাংশ.pdf/২৪৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

তৃতীয় ভাগ-তৃতীয় খণ্ড 0 শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত ২২৮ “তা সবের তিলকরাম হইলা সবর্ব জৈষ্ঠ । বাঙ্গলার মধ্যে যার নাম হইল শ্রেষ্ঠ ।” শ্ৰীমন্ত রায়ের পুত্র চন্দ্র রায়ের বংশে বৈষ্ণব ধৰ্ম্মের বিশেষ প্রভাব লক্ষিত হয়; এই বংশে প্রায় ছয়জন গৃহত্যাগী বৈষ্ণব হন, তন্মধ্যে বড় মোহন্ত পৰ্ব্বত প্রধান ব্যক্তি। এই বংশে হরিশ্চন্দ্র রায়ের পুত্র রমনাথ “দীঘল ঠাকুর” বলিয়া আখ্যাত হইতেন। চন্দ্র রায়ের অপর পুত্র কালী দত্ত বালিহীর খারিজ হওয়ার কালে বিজয়পুরের শিকদার নিযুক্ত হন। বিজয়পুরের উল্লেখ পূৰ্ব্বে একবার করা গিয়াছে।’কালী দত্তের শেষ বংশধর গোবিন্দ গৃহত্যাগী হওয়ায় পাহাড় সন্নিকটবৰ্ত্তী বিজয়পুর উজাড় হইয়া যায়। পরগণাইটা কানুনগো বংশ-কথা শ্রীহট্টের ইতিবৃত্তের পূৰ্ব্বাংশে একটি কানুনগো বংশের কীৰ্ত্তিকথা বর্ণিত হইয়াছে।’ সেই কানুনগো বংশ হইতে ইহা ভিন্ন। এই বংশীয় দত্তগণ রাঢ়দেশের পশ্চিম-বট গ্রাম হইতে ইটায় আগমন করেন বলিয়া কথিত আছে। যখন বল্লাল সেনের কৌলীন্যপ্রথা প্রচারিত হয়, তখন যাহারা তদীয় প্রতিবাদী হইয়াছিলেন, এই বংশের আদিপুরুষ তাহার একতম; ইহারা শাণ্ডিল্য গোত্রীয় মৌলিক কুলীন সন্তান। মেদিনীধর নামে এক ব্যক্তি সেই বংশে জন্ম গ্রহণ করেন। মেদিনীধর হইতে এ বংশের কথা জ্ঞাত হওয়া যায়, তিনি বিশেষ দক্ষ ব্যক্তি ছিলেন; ইটাভূমিপতি নিধিপতির জনৈক সন্ততি হইতে তিনি গয়ঘড় মৌজায় কতকভূমি প্রাপ্ত হন ও তথায় গিয়া বাস করেন। ইহারা পূৰ্ব্বে উপবীত-ধাবী ছিলেন, পরে কায়স্থ সমাজের সহিত বিবাহদি সম্বন্ধে সম্মিলিত ও উপবীত ত্যাগী হন বলিয়া কথিত হয়। মেদিনী ধরের পুত্রের নাম পদ্মনাথ, ইহার পুত্র বংশীদাস, তৎপুত্র বিজয়রাম, বিজয়রামের পুত্র শ্রীনাথদত্ত, শ্রীনাথের পুত্র পুরুষোত্তম। ইহার তিন পুত্র, তন্মধ্যে জ্যেষ্ঠ দুর্গাভর হংসখলা গ্রামে এক দীঘী খনন করেন, উহা দুর্গাভরের দীঘী বলিয়া খ্যাত আছে। মধ্যম পুত্রের নাম হরিনাথ দত্ত, হরিনাথের পুত্র ভুবনানন্দ, ইহার পুত্র প্রসিদ্ধ হৃদয়ানন্দ ১২. “দত্ত বংশাবলীতে ইহার সীমা এইরূপ লিখিত আছে, যথা— উত্তরে লালপুর, পূৰ্ব্বে উদয়পুরের পাহাড, দক্ষিণে ডালাউড়া ও শঙ্কর সেনা। পশ্চিম সীমা লিখিত হয় নাই।” ১৩. বিভিন্ন কানুনগো বংশ। শ্রীহট্টের ইতিবৃত্তে পূৰ্ব্বাংশ ২য ভাগ ২য় খণ্ড ৯ম অধ্যায় ইটার নন্দী উগ্ৰস্থ অৰ্জ্জুন বংশেব বিবরণ বর্ণিত হইয়াছে। নদীবাম অৰ্জ্জুন সেই বংশের আদিপুরুষ, ইহাব নামেই নদীউঢ়া গ্রামের নাম হয়।সেই বংশ হইতে এই বংশ ভিন্ন। উক্ত অৰ্জ্জুন বংশের কথা এই অধ্যায়ে কথিত হইতেছে। उद्धि, হরবল্লভ দত্ত কানুনগোইর বংশ বিবরণও পুৰ্ব্বাক্ত ৯ম অধ্যায়ে কথিত হইয়াছে। হরবল্লভের পুত্রই সুপ্রসিদ্ধ শ্যামরায় দেওয়ান ইহার বংশ কাহিনী পাঠক পূৰ্ব্বেই জ্ঞাত হইয়াছেন। হরবল্লভ দত্ত কানুনগো ও মেদিনীধরের বংশ সম্ভূত, সুতরাং আমরা যে বংশ সম্বন্ধে এস্থলে ২ ৪টি কথা বলিতে উদ্যত হইতেছি, সে বংশ ও হরবল্লভের বংশ একই মূলোৎপন্ন বলিয়া বোধ হইতেছে। এস্থলে হরবল্লভের বংশের একটি ধারা উদ্ধত কবিতেছি, যথা—হরবল্লভ, তৎপুত্র শ্যামরায় দেওয়ান (ইহার কথা ২য় ভাগ ২য় খণ্ড ৯ম অধ্যায়ে দেখ), তৎপুত্র রামকান্ত, তৎপুত্র দেবীপ্রসাদ, তৎপুত্র গুরুপ্রসাদ, তৎপুত্র গোলকচন্দ্র, তৎপুত্র শীয়ুক্ত অশ্বিনীকুমার দত্ত জীবিত আছেন।