পাতা:শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত - উত্তরাংশ.pdf/২৮৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ব্রাহ্মণ বিভাগ প্রথম অধ্যায় নামতত্ত্ব হবিগঞ্জ শ্রীহট্ট জেলার জনবহুল উন্নত সবডিভিশন। ইহা দক্ষিণ শ্রীহট্ট সবডিভিশনের ঠিক পশ্চিমে অবস্থিত। ইহার উত্তরে সুনামগঞ্জ, পূৰ্ব্বে দক্ষিণ শ্রীহট্ট, দক্ষিণে পাৰ্ব্বত্য ত্রিপুরা, এবং পশ্চিমে ত্রিপুরা ও মৈয়মনসিংহ জেলা। ১৮৭৮ খৃষ্টাব্দে হবিগঞ্জ সবডিভিশন স্থাপিত হয়। শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত পূবর্বাংশে (২য় ভাঃ ২য় খণ্ড ৫ অঃ) তরফের জমিদার-বংশ-শাখায় তরফদারের আদিপুরুষ হেদায়েত উল্লার বিবরণ কথিত হইয়াছে, ইহার হবিবউল্লা ও আতাউল্লা নামে দুই পুত্র ছিলেন,তন্মধ্যে হবিবউল্লা নিজ নামে এক বাজার বসাইয়া ছিলেন, উহার নাম হবিগঞ্জ। এই হবিগঞ্জে সবডিভিশনেল শহর স্থাপিত হওয়ায় মহকুমাটি উক্ত নামেই খ্যাত হয়। শহরটি উত্তর দক্ষিণে লম্বা; বরাক উত্তর সীমায় থাকিয়া পূৰ্ব্ব হইতে পশ্চিম মুখে ক্ষীণ স্রোতে বহিয়া যাইতেছে পূৰ্ব্বে খোয়াই নদী প্রবাহিত হইয়া বরবক্রে আত্মসমপণ করিয়াছে, সংযোগস্থলেই চিড়কান্দি নামক স্থান। এখানকার অধিবাসী শৌণ্ডিক জাতীয় ব্যক্তিবর্গ অতি উৎকৃষ্ট চিপিটক (চিড়া) প্রস্তুত করিয়া বিক্রয় করিত; উৎকৃষ্ট চিড়ার জন্য এস্থান চিড়াকন্দি নামে খ্যাত হয়। চিড়াকান্দির অধিবাসিগণ অবস্থাপন্ন। চিড়াকন্দি ব্যতীত সুলতান মাহমুদপুর, বাজনগর কীৰ্ত্তনপুব প্রভৃতি পল্লীও শহরভুক্ত হইয়াছে। হবিগঞ্জ শহরে কয়েকটি দেবালয় আছে-নরসিংহের আখড়া, মহাপ্রভুর আখড়া, মদনমোহনের আখড়া, বগলারবাড়ী ও কালীবাড়ী। শহরের আখড়া আদি কথা মোসলমান আমলে মুর্শিদাবাদের অন্তর্গত বালুচরের মদনমোহনের আখড়া হইতে জয়রাম দাস নামে এক ব্যক্তি আসিয়া এই আখড়া স্থাপন করেন। সুলতানশীর জমিদার ইহার গুণে বিমুগ্ধ হইয়া সোণারচর নামক স্থান দেবত্র দান করিয়াছিলেন, ঐ চর তখন “বাবাজির চর’ বলিয়া খ্যাত হয়। তখন আখড়াটি বৰ্ত্তমান “পুরাণবাজার” নামক স্থানে ছিল, পরে স্থানান্তরিত হইয়া বৰ্ত্তমান স্থানে আসে। পূৰ্ব্বোক্ত জয়রামের শিষ্য সারঙ্গদাস, তাহার শিষ্য নরসিংহ দাস, তৎশিষ্য গোপাল দাস ১. পরবর্তী ৭ম অধ্যায়ে তরফদাব বংশ-বিবরণে ইহার কথা দ্রষ্টব্য। ২ লস্করপুরের প্রসিদ্ধ হামিদরজার পুত্র শায়েস্তামিয়া নিজনামেশায়েস্তাগঞ্জ বাজার বসাইয়া ছিলেন; শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত পূবর্বাংশ ২য় ভাগ ২য় খণ্ড ৬ষ্ঠ অধ্যায়ে তাহা উল্লেখিত হইয়াছে। এই বাজারটি আসাম বেঙ্গল রেলওয়ের সন্নিকটে অবস্থিত। সম্প্রতি (১৯১২ইং) গুজব উঠেযে, মহকুমার শহর স্থানান্তরিত হইবে না।