পাতা:শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত - উত্তরাংশ.pdf/২৯৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

২৭৩ প্রথম অধ্যায় : তরফের ব্রাহ্মণ বিবরণ 0 শ্ৰীহট্টের ইতিবৃত্ত ভ্রাতৃদ্বয়ের গৌরবে রামকান্ত ও রমাকান্ত বিশেষ প্রীত হইলেন, ও তাহাদিগকে গৃহে আনিতে সচেষ্ট হইলেন; কিন্তু তথাকার কর্তৃপক্ষ তাহাদিগকে তথায় এক টোল সংস্থাপনের জন্য অনুরোধ করিলেন। র্তাহারা সে অনুরোধ উপেক্ষা করিতে পারিলেন না; তখন তথায় এক চতুষ্পাঠীস্থাপিত হয় এবং দুইভ্রাতা পৰ্য্যায়ক্রমে তথায় থাকিয়া অধ্যাপনার সহিত স্থানীয় ব্যবস্থাদি প্রদান করিতে লাগিলেন। রেঙ্গানিবাসী প্রসিদ্ধ রামরাম পণ্ডিতের কথা ৩য় ভাগ প্রথম খণ্ডে বলিয়াছি, কথিত আছে একদা কোন এক মোকদ্দমার বিচার কাৰ্য্যে, তাহার ব্যবস্থা বা অভিমতের অবৈধতা লক্ষিত হইয়াছিল, তখন গোপীনাথ তর্কসিদ্ধান্ত গবৰ্ণমেন্টের নিকট উপস্থিত হইয়া, রামরাম পণ্ডিতের পক্ষে তদীয় সিদ্ধান্তের বৈধতা প্রদর্শন করিয়াছিলেন। তুঙ্গেশ্বরের হরিশরণ মজুমদারের নাম ও গুণ বিদেশেও অনেকে জ্ঞাত ছিল, ইহার কথা পরবত্তী ৪র্থ অধ্যায়ে উল্লেখ করা যাইবে। রাজা রাজবল্লভের জনৈক সভাপণ্ডিত এক কুটার্থ কবিতার ব্যাখ্যা করিয়া দিতে র্তাহার কাছে কবিতা প্রেরণ করেন। মজুমদার পণ্ডিতবর্গকে আহান করিয়া সেই কবিতার অর্থ লিখিয়া দিতে অনুরোধ করেন। সেই সভায় তর্কসিদ্ধান্ত ব্যতীত অপর ভ্রাতৃত্ৰয়ও উপস্থিত ছিলেন। প্রেরিত কবিতার অনেকরুপ অর্থই হইয়াছিল, কিন্তু কোনটি সদর্থ, তাহা অবধারিত না হওযায় কেহই তাহা প্রেরণ করিতে সাহস করেন নাই। তর্কসিদ্ধান্ত হরিশরণ মজুমদাবের কাছে নিজবাড়ীর সম্মুখবত্তী একখণ্ড ভূমি প্রার্থনা করিয়াছিলেন, ঐ ভূমিখণ্ড আরও দুইজন ব্রাহ্মণ প্রাপ্ত হইতে ইচ্ছা করায়, মজুমদার কাহাকেই উহা দেন নাই; এজন্য তর্কসিদ্ধান্ত তাহাব আহানে উপস্থিত হন নাই। ভাতকাটিয়া নিবাসী খ্যাতনামা নৈয়ায়িক মৃত্যুঞ্জয় তর্কালঙ্কাব সেই পণ্ডিত মণ্ডলীতে প্রকাশ করিলেন যে, তর্কসিদ্ধান্ত ব্যতীত এ বিষয়ের মীমাংসা হইবে না। তখন সকলের অনুরোধে তাহাকে উপস্থিত হইতে হইল, তিনি কবিতার সপ্তপ্রকার অর্থ নির্দেশ কবিয়া, তাহাই প্রেরণ করিলেন। কবিতা পৌছিলে সেই কবিতা-প্রেরক পণ্ডিত কবিতার যথার্থ অর্থ প্রাপ্ত হইয়া প্রশংসাসূচক এক পত্র প্রেরণ করিয়াছিলেন। হরিশরণ মজুমদারও তৎপ্রতি বিশেষ তুষ্ট হইয়া, তখন সেই ভূমিখণ্ডে একটি পুষ্করিণী খনন করাইয়া, তাহাকে দান করিলেন; সে পুষ্করিণী এখনও বিদ্যমান আছে। তর্কসিদ্ধান্তকৃত “বর্ষভাস্কর” নামক বর্ষকৃত্য বিষয়ক এক গ্রন্থ ও অনেক গ্রন্থের দুরধিগম্য স্থান সমূহের সরলার্থ আছে। তর্কসিদ্ধান্তের পুত্রের নাম রাজচন্দ্র ভট্টাচাৰ্য্য। গৌরীকান্ত ন্যায়ালঙ্কার কৃত জ্যোতিষশস্ত্র সম্পর্কিত “জাতকপ্রকাশ” নামক বৃহৎ গ্রন্থ এবং “জ্ঞানদীপ” নামক এক বেদান্তিক গ্রন্থ আছে। বিশ্বনাথের পুত্র হরিনাথ তর্কলঙ্কার একজন উৎকৃষ্ট নির্ণায়ক এক গ্রন্থ লিখিয়া গিয়াছেন বলিয়া তত্ৰত্য শ্রীযুক্ত রমেশচন্দ্র ভট্টাচাৰ্য্য জানাইয়াছেন। কচুয়াদির ব্রাহ্মণগণ কৃষ্ণাত্রেয় গোত্রীয় ব্রাহ্মণ বিবরণ জয়পুরে কৃষ্ণাত্রেয় গোত্রীয় ব্রাহ্মণগণেরও বাস আছে। তথা হইতে এক শাখা কচুয়াদিবাসী হন।