পাতা:শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত - উত্তরাংশ.pdf/২৯৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

তৃতীয় ভাগ-চতুর্থ খণ্ড 0 শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত ২৭৪ কৃষ্ণাত্রেয় গোত্রীয় ব্রাহ্মণগণের আদি পুরুষ কোন স্থান হইতে জয়পুরে আগমন করেন, এতদনুসন্ধানে জানা যায় যে, পঞ্চখণ্ডের কৃষ্ণাত্রেয় গোত্রীয় ব্রাহ্মণ বংশের কেহ তরফের মুড়াগ্রামে প্রথমতঃ আগমন করেন এবং তৎপর জয়পুর যান ও তথা হইতেই একজন কচুয়াদিবাসী হন।” এই বংশে শ্যামানন্দ ভট্টাচাৰ্য্য নামে একব্যক্তি অতি প্রসিদ্ধ হইয়াছিলেন, ইনি সুখরের বড়বাড়ীর অৰ্দ্ধ অংশের পৌরোহিত্য গ্রহণ করেন। ইহার পুত্র কৃষ্ণানন্দ শিরোমণিও পিতার ন্যায় যোগ্যব্যক্তি ছিলেন, ইহার পত্নী মহামায়া দেবীর কীৰ্ত্তি আজও লোকে শতমুখে বর্ণনা করিয়া থাকে। সতী মহামায়া ১৮২৯ খৃষ্টাব্দের পরে শিরোমণির মৃত্যু হয়, তখন আইন প্রচারিত হইয়া সতীদাহ প্রথা বারিত হইয়াছে। দেবী মহামায়া পতির মৃত্যুর পর যখন তদনুগামিনী হইতে ব্যগ্র হইলেন, কাজেই তখন উপস্থিত ব্যক্তিবর্গ আইনের ভয়ে বিরোধী হইয়া দাড়াইলেন। কিন্তু তখন সেই বিরুদ্ধবাদী ব্যক্তিবর্গের এককালে হঠাৎ এক বিষম বেদনা উপস্থিত হইল। র্তাহারা ভাবিলেন যে উৎকণ্ঠিতা সতীর মানসিক ভাব-বিক্ষেপের প্রতিক্রিয়াই এক ব্যাধির কারণ; এইরূপ চিন্তা করিয়া তাহারা বিরোধভাব পরিত্যাগ করিলেও, তৎক্ষণাৎ নিকটবৰ্ত্তী থানায় এই সংবাদ জানাইলেন। সংবাদপ্রাপ্তে থানার প্রধান কৰ্ম্মচারী তথায় উপস্থিত হইয়া সতীকে এ উদ্যম ত্যাগ করিতে অনুরোধ করিলেন। তখন মহামায়া একটা কাচা কদলী হাতে লইলেন, কদলী তদীয় দেহের তাপে তপ্ত হইয়া পরিপক্কবৎ প্রতীয়মান হইল, সতী বলিলেন “আমাকে নিষেধ করিও না, আমার অন্তরে আগুণ জুলিতেছে, এই দৃশ্যমান অগ্নি তদপেক্ষা অধিক নহে, এই কদলী তাহার প্রমাণ; আমি সেই অগ্নিতেই ভষ্মীভূত হইয়া যাইব,-তোমরা আমার ধৰ্ম্মে বাদ সাধিও না।” রহিলেন, ইত্যবসরে সতী ত্রস্তভাবে চিতারোহণ করিয়া অৰ্দ্ধদগ্ধ হইয়া গেলেন। দর্শকগণ হায় হায় চলিয়া গেলেন! জয়পুরবাসী তদীয় পুরোহিত লব্ধ প্রতিষ্ঠা রাধাচরণ ভট্টাচাৰ্য্যকে সতী নাসিকা হইতে নিজ নাসাভরণ নথ উন্মোচন করিয়া দিয়াছিলেন। কথিত আছে, এই নথ প্রাপ্তির পর হইতে ভট্টাচাৰ্য্য ঐশ্বৰ্য্যাম্বিত হইয়া উঠেন এবং “মহাজন ঠাকুর” নামে খ্যাত হন। ২০/২২ বৎসর অতীত হইল, সতী-দত্ত এই নথ অপহৃত হইয়াছে; ইহাদের অবস্থাও অনেকটা হীন হইয়া পড়িয়াছে। শিরোমণির পুত্র রামগতি তর্কালঙ্কার এক বিখ্যাত ব্যক্তি ছিলেন; ইহার পৌত্র তত্ৰত্য টোলের অধ্যাপক শ্রীযুক্ত কৃষ্ণজয় স্মৃতিভূষণ হইতে আমরা এই বংশ বিবরণ সংগ্রহে সহায়তা প্রাপ্ত হইয়াছি। স্বর্ণরেখা ভরদ্বাজ ও গৌতম গোত্রীয় ব্রাহ্মণ কথা স্বর্ণরেখার ভরদ্বাজ গোত্রীয় ব্রাহ্মণগণ জয়পুর হইতে সমাগত। জয়পুর হইতে রামজীবন ৮ কেহ কেহ বলেন,—কৃষ্ণাত্রেয় গোত্রীয় ব্রাহ্মণগণেব পূৰ্ব্বপুরুষ, মজুমদাব বংশের সহিত এদেশে সমাগত ব্রাহ্মণ হইতে অভিন্ন ছিলেন, কিন্তু অধিকাংশের মতেই তাহা ঠিক নহে।