পাতা:শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত - উত্তরাংশ.pdf/৩১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

এগার ব্রহ্মখণ্ডে পুনঃ ব্রাহ্মণের বিবাহিত বৈশ্য স্ত্রীতে জাত পুত্রই অম্বষ্ঠ নামে কথিত হইয়াছে। পণ্ডিতবর্গ কল্পান্তর কল্পনায় এই সকল বিভিন্ন মতের সামঞ্জস্য বিধান করেন। বৈদ্যের শ্রেণী ও পদ্ধতি বঙ্গীয় বৈদ্য জাতি (১) রাঢ়ী, (২) পঞ্চকোটী, (৩) বঙ্গজ, এই তিন সাধারণ শ্রেণীতে বিভক্ত। কৌলিন্য অনুসারে সিদ্ধ, সাধ্য ও কষ্ট এই তিন শ্রেণী ইহাদের মধ্যে আছে। সদবৈদ্যকুল পঞ্জিকায় বৈদ্যগণের ত্রয়োদশ পদ্ধতি ও আদি বাসস্থান নিরূপিত হইয়াছে, যথা ঃ– “সেনো দাসশ্চ গুপ্তশ্চ দত্তো দেবঃ করোধরঃ । রাজসোমশ্চ নন্দী কুণ্ডশ্চন্দ্রশ্চ রক্ষিতঃ। রাঢ়ে বঙ্গে বরেন্দ্ৰচ বৈদ্যা এতে ত্রয়োদশ ।” মৰ্যাদানুসারে ইহাদের শ্রেণী বিভাগ। যথা – (১) “উত্তমেী সেন দাসোচ গুপ্তদত্তৌ তথৈবচ। (২) দেবঃ করশ্চ মধেীশচ । (৩) রাজসোম কুলামেী। নন্দী প্রভূতয়ো নিন্দ্যা লুপ্তপদ্ধতয়োপিচ। কেচিজ্জাতাঃ পরিখ্যাতা স্তথা বৃত্তানুসারতঃ ।” শ্রীহট্টের বৈদ্য ও বৈদ্য কায়স্থ শ্রীহট্ট দেশে, বলাবাহুল্য এ সকল শ্রেণীবিভাগ ও সিদ্ধ সাধ্যাদি ভেদ লক্ষিত হয় না। দক্ষিণ শ্রীহট্টের আলওয়া প্রভৃতি স্থানের বৈদ্য হইতে র্তাহারা বিশেষ ভিন্ন নহেন। জনৈক সমাজ তত্ত্বজ্ঞ কায়স্থ সন্তান আমাদিগকে লিখিয়াছেন ঃ-“শ্রীহট্ট জেলায় অধুনা বৈদ্য কায়স্থে মিশামিশি হইয়া গিয়াছে, কেবল গোত্র ও পদ্ধতিতে বৈদ্য ও কায়স্থ বনিয়াদ চিনা যায়;তাহা ছাড়া আর বিশেষত্ব নাই। শ্রীহট্টের বৈদ্যদের অধিকতর কৌলিন্য বাস্তবতঃ না থাকিলেও নামে একরূপ বদ্ধমূল হইয়া গিয়াছে। লোকে কথায় বলে যে, ইটা, চেয়ালিশ, দুলালী, তরফ ভদ্রলোকের স্থান।”ইত্যাদি। “জীবন বৃত্তান্ত” নামক পুস্তিকায় শ্ৰীযুক্ত রামচন্দ্র দত্ত মহাশয়ও লিখিয়াছেন, “শ্রীহট্টে বৈদ্য কায়স্থ বলিয়া কোন পার্থক্য নাই; পরস্পর বৈবাহিক সম্বন্ধ প্রচলিত আছে। বঙ্গের অন্যান্য স্থানে কায়স্থ বৈদ্যে যেরূপ বিরোধ বিসম্বাদ, বিবাহ দূরে থাকুক, এক শ্রেণীর সহিত অন্যে পংক্তি ভোজন পর্যন্ত করেন না, সুখের বিষয় শ্রীহট্টে সেইরূপ অসদ্ভাব নাই, তবে কেহ কেহ বঙ্গের অন্যান্য স্থানের অনুকরণে কখন কখন কায়স্থ বৈদ্য বলিয়া পার্থক্য প্রদর্শন করিতে চেষ্টা করিয়া থাকেন, কিন্তু কাৰ্য্যক্ষেত্রে সে পার্থক্য দাড়ায় না।” এই জাতি কাহারা ব্রাহ্মণ ও ক্ষত্রিয়ের পরেই শাস্ত্রে বৈশ্যজাতির নাম পাওয়া যায়। অতঃপর তৃতীয় বর্ণের