পাতা:শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত - উত্তরাংশ.pdf/৩১১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

২৯১ তৃতীয় অধ্যায় ; বিবিধ বংশীয় ব্রাহ্মণ বিবরণ ✉ শ্ৰীহট্টের ইতিবৃত্ত সিদ্ধপুরুষ ছিলেন, তাহার একটি গানের এক ছত্রে লিখিত আছেঃ—“হরিনামে আকুল হইয়া কান্দে পরশ ব্রাহ্মণ”। পরশের পত্নীর নাম জয়ন্তী দেবী, জয়ন্তীও পরম সাধিকা ছিলেন, অধিকন্তু তিনি শাকুনিক বিদ্যা জানিতেন। সময় বিশেষে কাকের বিশিষ্ট শব্দে বিশেষ ভাব ব্যঞ্জিত হয় বলিয়া কথিত। এই সঙ্কেত “কাক চরিত্র” নামে খ্যাত। জয়ন্তী একদা কাকধ্বনি বিশ্লেষণে তাঁহার স্বামীর সন্নিকট-মৃত্যু সমাচার অবগত হইতে পারিয়া অতি বিচলিতা ও চিন্তাকুলিত হইয়া পড়েন। তবে কি স্বামীর অগ্রে সতীর দেহত্যাগ ঘটিবে না? যাহাতে স্বামীর অগ্রে স্বয়ং মৃত্যুমুখে পতিত হইতে পারেন, তজ্জন্য স্বামীর নিকটে তিনি কাতরভাবে “বর” প্রার্থনা করিলে, সিদ্ধপুরুষ পরশ পত্নীর অভিপ্রায় মত তাহাকে মৃত্যুবর প্রদান করিলেন। তাহার পর জয়ন্তী সংসারের সমস্ত বন্ধন ত্যাগ করিয়া, স্বামীর পদমূলে উপবেশনপূৰ্ব্বক তাহার অগ্রে মৃত্যু কামনাপূৰ্ব্বক তীব্রভাবে মৃত্যুচিন্তা করিতে করিতে ধ্যানযোগে দেহত্যাগ করিলেন। এই কলিযুগে সতীর স্বেচ্ছায় শরীর ত্যাগের ঈদৃশ উদাহরণ দৃষ্টে লোক স্তম্ভিত হইয়া তদীয় মহিমা কীৰ্ত্তন করিতে লাগিল। আজ পর্যন্ত সতীর অপূৰ্ব্ব কীৰ্ত্তিকথা বিলুপ্ত হয় নাই, আজ পর্যন্ত বিস্মিত হইয়া লোকে এই কথা পরিকীৰ্ত্তনপূৰ্ব্বক তাহার জয়ধ্বনি করিয়া থাকে। যথাপ্রাপ্ত এ অদ্ভুত বৃত্তান্তটি এস্থলে সন্নিবেশিত করিলাম। ঠাকুর পরশের খুল্লতাত সঙ্গতরায় বানপ্রস্থ আশ্রমালম্বনে “সঙ্গতরায় ব্রহ্মচারী” নামে অভিহিত হইতেন। গোপীনাথের ৬ষ্ঠ পুরুষে শ্ৰীবল্লভ শাখায় রামশঙ্কর রায় নিজ পিতার শ্মশান ভূমিতে পঞ্চাশ হস্ত উচ্চ এক ইষ্টক মন্দির প্রস্তুত করিয়া তাহাতে শিবপ্রতিষ্ঠা করেন। ইনি একজন জ্যোতিষজ্ঞ পণ্ডিত ছিলেন; গণনা দ্বারা নিজ মৃত্যুকাল অবধারণে, যথাকলে কলিকাতায় গিয়া কালীগঙ্গা লাভ করেন । এ বংশীয় কাশীনাথ চৌধুরী কাশীতে কাশীনাথ শিব স্থাপন করিয়া কাশী প্রাপ্ত হন বলিয়া আমাদের প্রাপ্ত বিবরণীতে লিখিত হইয়াছে, কিন্তু (উক্ত বংশীয় জনৈক ব্যক্তি প্রেরিত) আগনার মুদ্রিত চৌধুরী বংশের তালিকাতে ইহার নাম দৃষ্ট হইল না। পরবর্তী কালে এ বংশে যাহারা আর্থিক উন্নতি করিয়া গিয়াছেন, তন্মধ্যে স্বপ্রতিষ্ঠ শ্যামানন্দ চৌধুরীর নাম উল্লেখযোগ্য; ইনি প্রায় ২৫ বৎসর কাল মোক্তারী ব্যবসায় করেন; ইহার মাসিক আয় সহস্র মুদ্রার নূ্যন ছিল না; নিজ চেষ্টাতেই ইনি প্রায় পঞ্চসহস্র মুদ্রা আয়ের ভূসম্পত্তি অৰ্জ্জন করিয়া গিয়াছেন। 辭 পুরকায়স্থ বংশ কথা এই বংশের আদিপুরুষ সুবিদরায়, রাঢ়দেশ হইতে আসিয়া প্রথমে দুলালীতে কিছুকাল বাস করেন বলিয়া আমাদের বিবরণ প্রদাতা লিখিয়াছেন। পরে তিনি সেই স্থান পরিত্যাগ করিয়া আগনা পরগণার মধ্যসমত মৌজায় গিয়া বাড়ী প্রস্তুত করেন। পরে ইহার বংশধরগণ রাজকীয় পাটওয়ারি পদে নিযুক্ত হইয়া পুরকায়স্থ পদবি প্রাপ্ত হন। এই বংশের হরেকৃষ্ণ পুরকায়স্থ ত্রিপুরার মহারাজের দেওয়ান নিযুক্ত হইয়া মহারাজের অনুগ্রহে অনেক সম্পত্তি অৰ্জ্জন করেন। ইহার পরে রাধাকৃষ্ণও স্বীয় চেষ্টায় অনেক ধন অৰ্জ্জন করেন; ইনি