পাতা:শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত - উত্তরাংশ.pdf/৩১২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

তৃতীয় ভাগ-চতুর্থ খণ্ড 0 শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত ২৯২ রসুলগঞ্জের মুন্সেফীর উকীল নিযুক্ত হইয়াছিলেন। এ বংশে সুবিদরায় হইতে বৰ্ত্তমানে ৯/১০ পুরুষ চলিতেছে।" তালুকদার বংশ এই বংশের আদিপুরুষের নাম যাদব। এই বংশের বিশেষ বিবরণ প্রাপ্ত হওয়া যায় নাই। এই ংশীয় গৌরচরণ কৃত একটি অত্যুচ্চ মন্দির আছে, উহার উচ্চতা ১০০ হস্ত এবং পরিধি প্রায় ৪০ হস্ত। এই মন্দিরটি তিনি তাহার পিতার শ্মশান ক্ষেত্রে নিৰ্ম্মাণ করিয়া ছিলেন। গৌরীচরণ কাশীযাত্রা করিয়া সুদীর্ঘকাল কাশীবাসপূবর্বক কাশীপ্রাপ্ত হন। বড়াল বংশ বড়াল বংশের আদিপুরুষের নাম বিজয় কেশব। হৃদয়ানন্দ ও হৃষীকেশ নামে ইহার দুই পুত্র ছিলেন। এই বংশেরও বিশেষ কোন কথা জ্ঞাত হইতে পারি নাই। আমাদের বিবরণ প্রদাতা এ ংশীয় জগৎবল্লভের সম্বন্ধে একটি অলৌকিক কাহিনী প্রেরণ করিয়াছিলেন। জগৎবল্লভ দশসনা বন্দোবস্তের সময় জীবিত ছিলেন, তাহার নামে একটি তালুক আছে। কথিত আছে যে, একদা জগৎবল্লভ জনৈক চৌধুরীর গৃহে কালীপূজা সমাধা করিয়া, নিশীথ রাত্রে বাড়ী আগমন করিতেছিলেন, পথিমধ্যে এক বিকট ও বিরাট মূৰ্ত্তি র্তাহার পথ-রোধ করিয়া দাড়াইল। জগৎবল্লভের দক্ষিণ হস্তে পূজার তৈজসপত্র ছিল। তদবস্থায় সাধক ভীত না হইয়া বামহস্তে ঐ বিকট মূৰ্ত্তির কেশাকর্ষণ করিলেন ও মন্ত্র উচ্চারণ করিয়া তাহাকে মুগ্ধ ও বশীভূত করিলেন। তিনি ইহার রামদাস নাম রাখিলেন। রামদাস ভূতাবৎ তাহার মুগ্ধ ও বশীভূত করিলেন। তিনি ইহার রামদাস নাম রাখিলেন। রামদাস ভৃত্যুবৎ তাহার সঙ্গেচলিল। রামদাস বার বৎসর কাল তাহার গৃহে চাকর স্বরূপ অবস্থিতি করিয়াছিল বলিয়া কথিত আছে। এই রামদাসকে কোন অপরিচিত পথিক মনুষ্য মাত্র বলাও যাইতে পারিত কিন্তু ইহার সম্বন্ধে যে গল্প চলিত আছে, তাহাতে মনুষ্য বলা যাইতে পারে না, তাহা শুনিলে ভয় বিস্ময়েরই উদ্রেক হইয়া থাকে। কথিত আছে যে, জগৎবল্লভের স্ত্রী এক মেঘাচ্ছন্ন রজনীতে রামদাসকে কদলী-পত্ৰ দিতে বলিলে, সে একস্থানে থাকিয়াই হস্ত প্রসারণ ক্রমে প্রায় ত্রিশত হস্ত দূরবত্তী স্থান হইতে পত্র আনয়ন করে। এই ব্যাপারে বিলোকনে বল্লভবনিতা ভীতা হইয়া স্বামী সদনে রামদাসের কাণ্ড বর্ণন করেন ও ইহাকে তাড়াইয়া দিতে অনুরোধ করেন, তিনিও তাঁহাতে স্বীকৃত হন। সেই স্বীকৃতি অনুসারে আজ পর্যন্ত তদ্বংশীয়গণ যজ্ঞশেষে “রামদাস ভূতায় স্বাহা” ইতিমন্ত্রে ইহার উদ্দেশ্যে আহুতি দান করিয়া থাকেন বলিয়া শুনা যায়।* ৫ পুরকাযস্থ বংশের একটী বংশধাবা এস্থলে প্রদত্ত হইল যথা –সুবিদবায়, ইহার তিন পুত্রের একজনের নাম জগৎবল্লভ, ইহার ২য় পুত্র ভবানন্দ, তৎপুত্র কাশীনাথ, তৎপুত্র রামগোপাল, তৎপুত্র পঞ্চানন, ইহাব নন্দকিশোর ও রঘুনাথ নামে দুই পুত্র হয়, তন্মধ্যে রঘুনাথের পুত্রই দেওয়ান হরেকৃষ্ণ, ইহার পুত্রের নাম প্রাণকৃষ্ণ নন্দরামের পুত্রের নাম কেবলরাম, তৎপুত্র কীৰ্ত্তিরায়, তৎপুত্র রামনাবায়ণ। পূৰ্ব্বোক্ত জগৎবল্লভের অন্যপুত্র শিবানন্দের বংশে রাধাকৃষ্ণের উদ্ভব হইযাছিল। ৬ আহুতিদানের শেষে এ বংশীযগণেল রামদাসের নামেও একটি আহুতি দেওয়ার কথা সত্য হইলে এই বৃত্তান্তটি ভিত্তি বিহীন গল্প মাত্র বলা চলে না। "অলৌকিক রহসা” নামক পত্রিকায় এইরূপ অনেক ঘটনাই বিবৃত আছে, সেসব বৃত্তান্তেব সত্যতার প্রমাণও প্রদত্ত হইয়াছে। শ্রীযুক্ত গোবিন্দচরণ দে মহাশয় হইতে ইহা প্রাপ্ত হওয়া গিয়াছে।