পাতা:শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত - উত্তরাংশ.pdf/৩১৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

২৯৭ তৃতীয় অধ্যায় : বিবিধ বংশীয় ব্রাহ্মণ বিবরণ 0 শ্ৰীহট্টের ইতিবৃত্ত একখানা মৌলিক গ্রন্থ প্রণয়ন করিয়া গিয়াছেন, এই গ্রন্থ এখনও অমুদ্রিত অবস্থায় রহিয়াছে। শিরোমণির জ্ঞাতি ভ্রাতুষ্পপুত্র কালীচরণ-তর্কবাগীশ ময়মনসিংহের গৌরীপুরের জমিদারের দ্বারপণ্ডিত ছিলেন। ইহার ভ্রাতুষ্পপুত্র রাজকৃষ্ণ বিদ্যারত্ব “স্বচিন্তান্তঃ” নামক ভারতীর স্তোত্র-গ্রন্থ লিখিয়া গিয়াছেন, এই গ্রন্থের একটি টীকাও তিনি স্বয়ং প্রণয়ন করিয়াছেন। শিরোমণির পৌত্র শ্রীযুক্ত বিরজনাথ তর্কপঞ্চানন মহাশয় জলসুখার বহুবিধ বৃত্তান্ত সহ স্বংশের বিবরণ প্রদানে আমাদিগকে সাহায্য করিয়াছেন। পরগণা-দিনারপুর বাণী বংশাখ্যান ইতিপূৰ্ব্বে আমরা ভুজবলের গোস্বামী বংশের উল্লেখ করিয়াছি, ভুজবলের গোস্বামী বংশ দিনারপুরের বাণী বংশের একটি শাখা। রাঢ়দেশবাসী কাশ্যপগোত্রীয় শুভঙ্কর সিদ্ধান্তরত্ন কোন কারণে স্বদেশ ত্যাগ করিয়া শ্রীহট্টের অন্তর্গত দিনারপুরের শতকগ্রামে আগমন করতঃ বাস করেন, তথায় তাহার হরিশ্চন্দ্র নামে এক পুত্রের জন্ম হয়, ইহার পুত্রই সুপ্রসিদ্ধ সিদ্ধ মহাত্মা ঠাকুরবাণী। ঠাকুরবাণীর অলৌকিক গুণগ্রামে বিমোহিত হইযা শ্রীহট্ট জেলার বহুব্যক্তি তৎপ্রতি আকৃষ্ট হইয়া তদয শিয্যত্ব স্বীকার করেন। শ্রীহট্টে যে সকল সিদ্ধ গুরুকুলের বাস, বাণীবংশ তন্মধ্যে সৰ্ব্বপ্রধান বলিলেও অতু্যক্তি হয় না। সিদ্ধমাহাত্মা ঠাকুরবাণীব প্রভাবই ইহার একমাত্র কারণ: ৪র্থ ভাগে আমরা উক্ত মহাপুরুষের চরিতকথা বর্ণন করিব। অনন্ত বংশ ঠাকুববাণীর দুইটি বিবাহ ছিল, প্রথম পত্নীর গর্ভে প্রথমে যে পুত্র জাত হয়, একটি সর্গ তাহার দেহ বেষ্টন করিয়া জাত হইয়াছিল, এই জন্য অনন্তনাগের নামে উক্ত সন্তানের নাম অনন্ত রাখা হয। মাতা সপটির প্রতিও স্নেহশীলা ছিলেন, দুগ্ধদানে তাহাকে পালন করিতেন। একদা নিদ্রিতাবস্থায় অনন্ত-জননী স্বপ্নে দেখিতে পাইলেন যে, তাহাব গর্ভজ-সপ যেন মনুষ্য ভাষায় তাহাকে বলিতেছে যে, এবংশে কদাপি সপ ভয় থাকিবে না। ইহা বলিয়া সপটি মাতা হইতে বিদায় লইয়া চলিয়া গেল। রাত্রি প্রভাত হইলে জননী সপকে পূববৎ দুগ্ধাহার দান করিলে, সৰ্প দুগ্ধ পান করিল, কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় যে, সপটি তৎপর চলিয়া গেল, আর ফিরিয়া আসিল না। যে কাষ্ঠাসনে বসিয়া জননী সপকে দুগ্ধ খাওয়াইতেন, তাহা এখনও দিনারপুরের জনৈক গোস্বামী গৃন্দহ আছে। অনন্তের পুত্র হরিবল্লভ তৎপুত্র জগৎবল্লভ নবাব মোহাম্মদ আলী খাঁ হইতে ৮ জলুস তাবিখযুক্ত সনন্দে (নং ১৭) দিনারপুর ও আথানগিরি হইতে ১১/১২ ভূমি প্রাপ্ত হন। ১১৮৫ সনে তাহার মৃত্যু ঘটিলে তৎপুত্র রামচন্দ্র উহা “তছরূপ" করেন। সনন্দে পিতাপুত্র উভয়েরই “ব্রহ্মচারী” উপাধি থাকা দৃষ্ট হয়। ৯ শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত (উত্তবাংশ) ৩য ভাগ ৩য খণ্ড ৫ম অধ্যায দ্রষ্টব্য। ১০. আথানগিরীবাসী জনৈক গোস্বামীগৃহে উহা আছে বলিয়া শুনা যায়।