পাতা:শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত - উত্তরাংশ.pdf/৩২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বার বিষয় আলোচ্য হইতেছে; এই বৈশ্যজাতি কাহারা? ব্রহ্মার উরুদেশ হইতে বৈশ্যের উৎপত্তি ॥১৮ বৃহদ্ধৰ্ম্মপুরাণে তাহাদের উৎপত্তি ও বৃত্তি সম্বন্ধে লিখিত আছে যে, ব্রাহ্মণের বেদপাঠ, ক্ষত্রিয়ের প্রজাপালন, বণিকজাতির ধনরক্ষা এবং শূদ্রের জন্য ত্রিবর্ণের সেবা নিরূপিত হইয়াছে’- বণিক শব্দে বৈদ্য জাতিই বুঝাইতেছে।” কিন্তু কাল সহকারে বঙ্গীয় বৈশ্যজাতির, বঙ্গীয় ক্ষত্রিয়ের (কায়স্থের) ন্যায় ব্রাত্যত্ব প্রাপ্ত হন। তজ্জন্য এই উভয় জাতিই শূদ্রবৎ বলিয়া পরিকীৰ্ত্তিত হইয়াছেন।” এবং তাহাতেই স্মাৰ্ত্ত ভট্টাচাৰ্য্য ঘোষণা করিয়াছেন যে, বঙ্গের ব্রাহ্মণ ও শূদ্র এই দুইটি জাতিই মাত্র দৃষ্ট হয়। বস্তুতঃ ক্ষত্রিয় ও বৈশ্য এই দুইটি জাতি যে লোপ পাইয়াছিল, তাহা নহে। ক্ষত্রিয়ের কথা ইতিপূৰ্ব্বে বলিয়াছি। বঙ্গীয় সাহুবণিক প্রভৃতি জাতিই বৈশ্য বা তৃতীয় বর্ণ।” “সম্বন্ধ নির্ণয়” গ্রন্থে গ্রন্থকার লিখিয়াছেন “বৈশ্যদিগের জাতীয় ব্যবসায় বাণিজ্য, কৃষি ও কুসীদব্যবহার। ইহাদের সাধারণ নাম বণিক। বঙ্গদেশীয় বৈশ্যগণ শূদ্র মধ্যে পতিত হইয়াছেন।” বিশ্বকোষ মহাভিধানে লিখিত হইয়াছে “ভারতের সৰ্ব্বত্রই এখনও বৈশ্যজাতির বাস রহিয়াছে। অথচ যে বঙ্গীয় বণিকগণের খ্যাতি পূৰ্ব্বে দেশ বিদেশে বিশ্রত হইয়াছিল, বাঙ্গালায় সেই বৈশ্যজাতি এক কালে লোপ পাইল, কে বিশ্বাস করিবে ? বাস্তবিক বাঙ্গালায় এখনও বৈশ্যজাতির অভাব নাই, বণিক বা ব্যবসায়জীবী লক্ষ লক্ষ বৈশ্য এখনও গৌড়বঙ্গে বিদ্যমান। এদেশে গন্ধ বণিক, সুবর্ণ বণিক, তাম্বুল বণিক, সাহা বণিক (পূৰ্ব্ববঙ্গেব সাহা মহাজন) প্রভৃতি জাতি যে বৈশ্য বংশধর, তাহাতে সন্দেহ নাই।” সাহু শব্দের অর্থ কি ? শেষোক্ত সাহা বণিক জাতিব কথাই এস্থলে আলোচ্য।" তাহাদের বৃত্তি, জাতীয় নাম এবং বংশ পদ্ধতি হইতে তাহদের বৈশ্যত্ত্ব প্রতিপাদিত হয়; ইহা সুধী সমাজের সিদ্ধান্ত। সাহুবণিক জাতির নামতত্ত্ব সম্বন্ধে “সৌলুক কুল কারিকায়” লিখিত আছে যে, “দনুজ গুরুব অভিশাপে সুলুকোস্তব সেলুক্য বা শুল্কজাতি সাহা নামে খ্যাত হয়। শুদ্ধাচারিতা ও ধৰ্ম্ম নয়া ১৮ “মুখোতো ব্রাহ্মণোজাতো বাহুতাং ক্ষত্রিযস্তথা। উরুভ্যাঞ্চ তথাবৈশ্যঃ পদভ্যাং শূদ্র সমুম্ভবঃ । ” বিষ্ণুপুবাণ ১ম অংশ ৭ম অধ্যায়। ১৯. “অস্যাভরণ মুখাদ্বিপ্রাঃ সৰ্ব্বদের সমাশ্রয়া। বাহোশ্চ ক্ষত্রিয়া জাতাঃ ধনবক্ষণ হেতবে। উরুতো বাণিজ্যে জাতাঃ ধনবক্ষণ হেতবে। ত্রয়ানাং সেকনার্থবি শূদ্র জাতুস্তু পাদতঃ।”— বৃহদ্ধৰ্ম্মপুরাণ যথা- “বৈশ্যস্ত ব্যবহতা বিটবাৰ্ত্তিকঃ পণিতে বণিক।”-- ইতি রাজনির্ঘণ্ট। ১১ “কলেী শূদ্ৰসম জ্ঞেয়া তথা ক্ষত্রা যথা বিশঃ।” ইতি বিষ্ণু। ২২ “যুগে জঘন্যে দ্বেজাতী ব্রাহ্মণঃ শূদ্র এবচ।”-- ইতি শুদ্ধিতত্ত্বে স্মাৰ্ত্ত ভট্টাচাৰ্যাণাপু্যক্তং। ২৩. প্রাচ্যবিদ্যামহার্ণব শ্ৰীযুক্ত নগেন্দ্রনাথ বসু কৃত “বঙ্গের জাতীয ইতিহাস”— বৈশ্যকাণ্ড। ২৪ বণিক পঞ্চবিধ। শ্রীহট্রেব ইতিবৃত্ত পূৰ্ব্বাংশ ১ম ভাগ ৭ম অধ্যায়ে অন্যান বণিক্‌ জাতির কথা উল্লেখিত হইযাছে।