পাতা:শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত - উত্তরাংশ.pdf/৩৪১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩২১ পঞ্চম অধ্যায় ; বিবিধ বংশ বিববণ 0 শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত মধ্যস্থলে এক “জলটঙ্গী” (গৃহ) প্রস্তুত ক্রমে তথায় অবস্থানপূৰ্ব্বক অচিরেই প্রাণ পরিত্যাগ করিলেন। রতিবামের শুভারাম ও নন্দরাম নামে দুই পুত্র পিতার মৃত্যুর পর এ দুর্ঘটনার স্থান পরিত্যাগপূৰ্ব্বক পং বেজোড়ার বরগ গ্রামে বাসস্থান নিৰ্ম্মাণ করিয়া বাস করেন। শুভারামের রাধারাম ও কালারাম নামে দুই পুত্র হয়, তন্মধ্যে জ্যেষ্ঠ পুত্র রাজচন্দ্র রায় ব্রহ্মদেশে একটি কৰ্ম্মোপলক্ষে গমনকালে সমুদ্রে জাহাজ ডুবিয়া মারা যান। রাধারাম জ্যোতিষ সাহায্যে একথা বাড়ীতে থাকিয়াই অবগত হইয়াছিলেন। তাহার মধ্যম পুত্র জয়চন্দ্রও ব্রহ্মদেশে খাজাঞ্চির কৰ্ম্ম করিতেন। তিনি অতি অতিথিসেবাপরায়ণ ছিলেন। বাড়ীতে একটা ঘণ্টা বাজিতে এবং নিরূপিত সময়ে যে আসিত, উদর পুবিয়া খাইত। গণনাদ্বারা রাধারাম বলিয়াছিলেন যে র্তাহার কনিষ্ঠ পুত্র ব্রজমোহনের স্ত্রী গর্ভবতী হইলেই পতিহীনা হইবেন; ফলেতাহাই ঘটিয়াছিল। তাহার ঐ পুত্রবধূও পুণ্যবতী রমণী ছিলেন; নিজ মৃত্যুব কথা তিনি পূবেৰ্বই অবগত হন ও সকলের কাছে প্রকাশপূবর্বক “বৈতরণী’ করিয়া, রামনাম উচ্চারণ করিতে করিতে মৃত্যুমুখে পতিত হন। মৃত্যুর কিছু পূবেৰ্ব তিনি বাড়ীতে বিম্ববৃক্ষমূলে কিছু স্থান পরিষ্কার করিয়া তদুত্তরে একটি তুলসী বৃক্ষ রোপণ করিয়া রাখেন। তাহার মৃত্যুর পর এই স্থানেই শব নীত হইয়াছিল। ইহাব পুত্র শ্রীযুক্ত মথুরানাথ রায় এ বিবরণ প্রেরণ করিয়াছেন। পরগণা-বাণিয়াচঙ্গণ সোম ও দত্ত বংশ কথা বাণিয়াচঙ্গ পরগণার সাঙ্গর গ্রাম নিতান্ত অপ্রসিদ্ধ নহে, ইহা নিজ বাণিযাচঙ্গ হইতে প্রায় দশ মাইল দক্ষিণে; এই স্থানে বহুতর দীঘী দৃষ্ট হয়। কথিত আছে, রাঢ়দেশ হইতে সোমবংশীয় একব্যক্তি এই স্থানে আসিয়া বাটিকা নিৰ্ম্মাণ করেন, তিনি “বুড়া অধিকারী” নামে খ্যাত ছিলেন। এ সমস্ত দীঘী তাহার কৃত বলিয়া কথিত আছে এই সকল দীঘীর মধ্যে “মালের দীঘী” বৃহত্তব; ইহার দক্ষিণ তীরে দুইটি শিলা লক্ষিত হয়। সোমবংশীয় জনৈক মাল (বলশালী ব্যক্তি) উক্ত শিলাদ্বারা কন্দুক ক্রীড়া করিতেন বলিয়া প্রবাদ। যাহা হউক, বুড়া অধিকারী নিজ বাটিকা গড়বেষ্টিত করিয়াছিলেন; উহা সোমদেব গড় এই শব্দদ্বয়ের যোগে সোমগড়=সাঙ্গর গ্রামের নামোৎপত্তি। কিন্তু বৰ্তমানে এই স্থানে সোমবংশীয় কেহ নাই; কর, ধর ও সেন প্রভৃতি কয়েক বংশীয়েব বাস আছে। কিন্তু সোমদের ন্যায় ইহাদেরও কোন বৃত্তান্ত জ্ঞাত হওয়া যায় নাই। বিবরণী প্রদাতা শ্রীযুক্ত দ্বারকানাথ দত্ত মহাশয় লিখিয়াছেন, দত্ত বংশে ইদানীং শিবপ্রসাদ দত্ত ও তদীয় ভ্রাতা স্বয়মুথিত ব্যক্তি ছিলেন। শিবপ্রসাদ ও তদীয় ভ্রাতৃত্ৰয়ের মধ্যে তিনিই জ্যেষ্ঠ এবং জানকীনাথ কনিষ্ঠ ছিলেন। শিবপ্রসাদ পদব্রজে কলিকাতায় গমন করিয়া বড়বাজার এক মহাজনের দোকানে অতি সামান্য বেতনে কৰ্ম্মগ্রহণ করেন। শিবপ্রসাদের কার্য্যে মহাজন এত তুষ্ট হইয়াছিলেন যে, তাহাকে দুই বৎসরের বেতন অগ্রিম দিয়া বিবাহ করিতে দেশে পাঠাইয়া দেন। শিবপ্রসাদ বাড়ী আসিয়া বিবাহ করেন এবং কলিকাতায় সৰ্ব্ব বাণিয়াচঙ্গ নগবে নাগ নদী-দত্ত-সেন এই মৌলিক বংশ এবং অভ্যাগত সেন-দত্ত-মজুমদাব বংশ কার্যস্থ-বৈদ্য মধ্যে প্রধান স্থানীয। মৌলিক বংশ চতুষ্টযের নামে পল্লীব নাম আছে যথা নাগ-জাতুকণ পাডা, সেন পাডা ইত্যাদি। দুঃখেব বিযয যে, ইহাদেব বংশবিবৰণ আমবা পাইলাম না।