পাতা:শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত - উত্তরাংশ.pdf/৩৬৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

তৃতীয় ভাগ-চতুর্থ খণ্ড L শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত ৩৪৪ নামে উহাকে কাশিম নগর নামে খ্যাত করেন। পরগণা কাশিম নগর শ্রীহট্টের দক্ষিণ প্রান্তবত্তী ও ত্রিপুরার সীমাসংলগ্ন। কাশিম নগর পরগণা পাঁচ মাইল মাত্র দীর্ঘ। কাশিম নগরের চৌধুরীবর্গ একসময় প্রবল পরাক্রান্ত ছিলেন, সেই বংশে মোহাম্মদ নাজির চৌধুরী ও মোহাম্মদ হামজা চৌধুরীর এরূপ ক্ষমতা ছিল যে, ইহারা স্বীয় অধিকারে জনৈক অপরাধীকে প্রাণদণ্ডে দণ্ডিত করিয়া একটি তেঁতুল বৃক্ষের শাখায় ফাসী দিয়াছিলেন। তরফ-লস্করপুরের অধিকারী সৈয়দ হাসনের ভ্রাতা ফরিদ হাসনেব নাম ফরিদপুরের বংশ প্রসঙ্গে বলা গিয়াছে। উক্ত ফরিদ হাসনের তৃতীয় পুত্র সৈয়দ শাহ মনুওর হইতে একশাখা বাহির হইয়া কাশিম নগর পরগণার কাশিমপুর বাস করিতেছেন। ঐ বংশে কিছুকাল পূবেৰ্ব সৈয়দ আমীর আলী নামে এক প্রসিদ্ধ হেকিম (ইউনানী চিকিৎসক) ছিলেন; তাহার এক মাত্র পুত্রও ঐ চিকিৎসায় অভিজ্ঞ ব্যক্তি । সমাপ্তি শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত ৩য ভাগের ৪র্থ খণ্ড এই স্থলেই সমাপ্ত হইল। এই খণ্ডে প্রথমেই মহকুমা, তত্ৰত্য বাজার ও প্রাচীন নগর জয়পুরের প্রাধান্য; এবং বাৎস্য, কৃষ্ণাত্রেয়, ভরদ্বাজ ও গৌতম গোত্রীয় ব্রাহ্মণগণের বিবরণ বর্ণনা করা গিয়াছে। দ্বিতীয় অধ্যায়ে বাণিয়াচঙ্গের প্রতিষ্ঠিাতা কাত্যায়ন গোত্রায় ব্রাহ্মণ-বংশের বিষয় উল্লেখ করিয়া, তত্ৰত কাশ্যপ ও গৌতম গোত্রীয়গণের কাহিনী বিস্তৃতভাবে কথিত হইয়াছে, তৃতীয় অধ্যায়ে জলসুখা, আগনা, রঘুনন্দন, বেজোড়া, জনতরি, দিনারপুর প্রভৃতি স্থানের বিবিধ ব্রাহ্মণবংশের কথা বর্ণনা করিতে চেষ্টা করিয়াছি; তাহাতেই ব্রাহ্মণবিভাগ পরিসমাপ্ত হইয়াছে। সাধারণ বিভাগে ৪র্থ অধ্যায় আরম্ভ; এ অধ্যায়ে তরফের তুঙ্গেশ্বর, জয়পুর ও সুঘর প্রভৃতি স্থানের মজুমদার প্রভৃতিও সাতকাপনের করদের কথা বলা হইয়াছে। পঞ্চম অধ্যায়ে লাখাই, রিচি, ও মুকাড়কড়ির দত্ত বংশ, বেজোড়ার নন্দী ও চন্দ বংশ, দেব বংশ এবং বাণিয়াচঙ্গের সোম ও দত্ত বংশের কথা এবং বামৈর বৰ্ম্মণ বিবরণাদি প্রাপ্ত হওয়া যাইবে। যষ্ঠ অধ্যায়ে জলসুখার বসুবংশের উল্লেখ মাত্র করা গিয়াছে, তাহার পর দাস বংশের এবং তত্রত রায়দের কীৰ্ত্তিকথা উল্লেখিত হইয়াছে। ইহার পর মাছুলিয়ার চৌধুরী বংশের উল্লেখপূবর্বক গোপায়ার পাল বংশের কথা ও জগন্মোহিনী সম্প্রদায়ের পরিচয় প্রসঙ্গ কীৰ্ত্তিত হইয়াছে। তৎপর সপ্তম অধ্যায়ে মোসলমান বংশ বিবরণ বর্ণিত হইয়াছে। তরফের নরপতি, রামশ্রী প্রভৃতি স্থানের জমিদারবর্গের বিবরণ কথিত হইয়াছে। ঐ অধ্যায়েই তাহার পর জলসুখা, দিনারপুর, কাশিম নগর প্রভৃতি স্থানের বংশ বিবরণ উল্লেখ করা হইয়াছে। সপ্তম অধ্যায়েই এই খণ্ড সমাপ্ত। বলা বাহুল্য যে আমরা যে যে বংশের বিবরণ প্রাপ্ত হইয়াছি এবং এ খণ্ডে প্রদত্ত হইয়াছে, তদ্ব্যতীত আরও বহু সংখ্যক সুখ্যাত বংশ এই সবডিভিশনে রহিয়াছে ঐবং আমরা এই খণ্ডে এই সকল বংশ কথা সন্নিবেশিত করিতে পারি নাই; সেই অপ্রাপ্ত বংশকাহিনী সমূহের তুলনায় যাহা প্রদত্ত হইয়াছে, তাহা যে অল্প সংখ্যক, ইহা অস্বীকার করা যাইতে পারে না |