পাতা:শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত - উত্তরাংশ.pdf/৩৭০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

তৃতীয় ভাগ- পঞ্চম খণ্ড 0 শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত ৩৫০ এই সময়ে রতিনাথ, শিউড়ী উপাধিবিশিষ্ট কোন ব্রাহ্মণকে নিজ কৰ্ম্মচারী নিযুক্তি করেন; এবং রাজপুরোহিত নারায়ণ পণ্ডিতের বংশধর যাদব চক্ৰবৰ্ত্তীকে স্বীয় পৌরহিত্যে বরণ করিয়া, তাহাদের পূৰ্ব্ববাস রতিয়ার পাড়া হইতে সাচায়ানিতে স্থাপন করেন। কেবল তাহাই নহে, তিনি আরও কয়েক বংশীয় ব্রাহ্মণকে ভূদানাদি করিয়াছিলেন বলিয়া জানা যায়। একদা রতিনাথ শ্রীহট্ট শহর হইতে বাড়ীতে আসিতে পথে রৌদ্র পীড়িত হইয়া পড়িয়াছিলেন, তদৃষ্টে জনৈক ঘোষ তাহাকে একভাণ্ড উত্তম দধি প্রদান করে, তিনি সেই দধি ভক্ষণে এত তুষ্টিলাভ করেন যে ঘোষকে সেই ক্ষেত্রটি তৎক্ষণাৎ দান করেন। ঘোষ চমকিতে হইয়া রহিল। দধির “টুপী” বা পাত্রই তাহার সৌভাগ্য সূচক হইল, এই জন্য সে সেই স্থানটি “দধিটুপী” নামে আখ্যাত করে। পরবর্তী কথা রতিনাথের পুত্রের নাম শ্রীরাম। একদা এক মোসলমান রাজকৰ্ম্মচারী গ্রামে আসিয়া নানা উৎপাত উপস্থিত করেন। শ্রীরাম ইহা সহ্য করিতে না পারিয়া সেই কৰ্ম্মচারীর নৌকা টানিয়া ডাঙ্গায় উঠাইয়া ফেলেন। কৰ্ম্মচারীটি শ্রীরামের এই দুঃসাহস ও বীরত্বে অতিশয় সস্তুষ্ট হন, ঔদ্ধত্য প্রকাশ করার জন্য তৎপ্রতি তিনি কিছুমাত্র বিরক্ত হন নাই। শ্রীরামের তিন পুত্র, ইহারা দশসনা বন্দেবস্তের সময় বৰ্ত্তমান ছিলেন, তন্মধ্যে জ্যেষ্ঠ বিনোদরায় অতি বিচক্ষণ ব্যক্তি ছিলেন, তিনি বিষয়ের তত্ত্বাবধান করিতেন, তিনি পিতামহ ও পিতার নামে ১নং ও ২নং তালুকের বন্দোবস্ত গ্রহণ করিয়া, ৩নং তালুকটি নিজের নামে বন্দোবস্ত লন। তাহার ভ্রাতুষ্পপুত্র রামগোপাল তখন অতি শিশু ছিলেন; এই শিশুর অদ্ভূত স্মৃতিশক্তির পরিচয় পাইয়া সকলেই বিস্মিত হইত, বিনোদ এই শিশুকে প্রাণের সহিত ভালবাসিতেন, ৪নং তালুকটি ইহারই নামে তিনি বন্দোবস্ত করাইয়াছিলেন; কিন্তু শিশুটি পিতা, জ্যেষ্ঠতাত ও খুল্লতাত প্রভৃতিকে শোকসাগরে ভাসাইয়া অচিরেই চিরতরে চলিয়া যায়। ৪নং তালুকটি সেই শিশুর নাম চিরস্থায়ী করিয়া রাখিয়াছে। হালাবাদি বন্দোবস্তের সময়েও এ বংশীয় অনেক ব্যক্তি নিজ নামে তালুক বন্দোবস্ত করিয়াছিলেন। রতিবল্লভের পুত্র রামকৃষ্ণ কৃষ্ণভক্তি পরায়ণ ও দৈবশক্তি সম্পন্ন ব্যক্তি ছিলেন, তাহার গুণে বহুলোক আকৃষ্ট হয় ও তদীয় শিষ্যত্ব স্বীকার করে। র্তাহার পুত্ৰগণ “গোস্বামী” খ্যাতি ধারণ করিয়াছিলেন। রাঘবানন্দের বংশে তারানাথ, সবর্বানন্দ, বিশ্বম্ভর প্রভৃতি আধুনিক অনেক ব্যক্তিই সঙ্গীতজ্ঞ ছিলেন; “গোবিন্দ কীৰ্ত্তন”, “সংকীৰ্ত্তন”, “শিবের আরতি” ও “মালসী গীত” প্রভৃতি তাহাদের রচিত অনেক সঙ্গীত আছে। পূৰ্ব্বে যে সচরামের উল্লেখ করা হইয়াছে দাস জাতীয় সেই সচরামের বংশধরবর্গও অদ্যপি উক্ত গ্রামবাসী। আচাৰ্য্য বংশ শিক সোণাইতাবাসী ভরদ্বাজ গোত্রীয় আচাৰ্য্য বংশের কথা এস্থলে আলোচ্য। এ বংশেরও আদিস্থান রাঢ় দেশ। আচার্য বংশীয় শ্ৰীযুত রামদুলাল আচার্যের উদ্যোগে আমরা যে বংশ তালিকা ও বিবরণ