পাতা:শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত - উত্তরাংশ.pdf/৪১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ব্রাহ্মণ-বিভাগ প্রথম অধ্যায় মধুকর বংশ বর্ণন উত্তর শ্রীহট্টের নামতত্ত্ব শ্রীহট্ট জিলা পাঁচটি সবডিভিশনে বিভক্ত। তন্মধ্যে উত্তর শ্রীহট্ট উপবিভাগে জিলার রাজধানী শ্রীহট্ট সহর অবস্থিত। এই সহর অতি প্রাচীন। পূৰ্ব্বে (১ম ও ২য় ভাগে) বলা হইয়াছে যে, তন্ত্রোক্ত শিবের শত নামে “শ্রীহট্টে হাটকেশ্বরঃ” ইতি নাম পাওয়া যায়। হাটকেশ্বর শ্রীহট্টের রাজা গৌড় গোবিন্দ কর্তৃক পূজিত হইতেন। দেবীপুরাণোক্ত পীঠপূজা প্রকরণে “শ্রীহট্টে হট্টবাসিন্যৈ নমঃ” ইতি মন্ত্র দৃষ্ট হয়। এই হট্ট বা হাটক শব্দসহ শ্ৰীহট্ট নামের সম্পর্ক থাকা অসম্ভাবনীয় নহে। ভাটেরার তাম্রফলকে শ্রীহট্টনাথের উল্লেখ আছে, শ্রীহট্টের নামতত্ত্বে তাহাও বিবেচ্য। যে স্থান-সংলগ্নে পুণ্যক্ষেত্র গ্রীবাপীঠ ও অদূরে বামজঙঘাপীঠ অবস্থিত, যে স্থানের অনতিদূরেই পুণ্যপ্রদ বরবক্র নদ ও পূত সলিলা মনু ও ক্ষমা প্রভৃতি নদী প্রবাহিত যে প্রদেশের স্থানে স্থানে দেব কীৰ্ত্তি ও দেব মাহাত্ম্যের ভূরি নিদর্শন রহিয়াছে, সে দেশের প্রধান নগরী দেব দেবীর নামেই পরিচিত হওয়া সম্ভব। নগরীর নামে সমগ্র জিলাই শেষে শ্রীহট্ট নামে খ্যাত হইয়া থাকিবে। অধ্যাপক শ্রীযুক্ত পদ্মনাথ ভট্টাচার্য বিদ্যাবিনোদ বিজয়া পত্রিকার একটি প্রবন্ধে লিখিয়াছেন “শ্রীহট্টের নাম একখানি প্রাচীন লিপিতে বড়ই কৌতুহলবহ ভাবে উল্লেখিত আছে। সিংহপুর রাজকন্যা জালন্ধর বাজবধু ঈশ্বরা দেবী শিব মন্দির প্রতিষ্ঠা করেন, তাহার অবদান—প্রশস্তির শীর্ষ ভাগে “শ্রীহট্টাধিশ্বরেভ্যঃ” এইরূপ একটি শব্দ উৎকীর্ণ রহিয়াছে। +++ডাক্তার বুহলার ঐ প্রশস্তির লিপি অনুমানিক ৬০০ খৃষ্টাব্দের বলিয়া মনে করেন। +++ইহাতে দেখা যাইতেছে যে ভাস্করবম্মার শাসনের পূৰ্ব্বেই “শ্রীহট্ট” নামক একটি দেশ ছিল।” খৃষ্টীয় সপ্তম শতাব্দীতে পরিব্রাজক হিউয়েঙ্গ সাঙ্গ ভাস্করবম্মার রাজধানীতে গমন কালে এই নগরীকে “শিলিচটল” নামে আখ্যাত করিয়াছিলেন। বস্তুতঃ স্বগীয় মহালক্ষ্মীর পদাঙ্কিত এই পুণ্যভূমির শ্ৰীক্ষেত্র আখ্যা অসঙ্গত হয় নাই। নগরের নামে পরে কথাবাৰ্ত্তায়, বিশেষতঃ মোসলমানদের কর্তৃক “শিলহাট বলিয়া উল্লেখিত হওয়া অসম্ভব নহে। দুই তিন শত বৎসর পূৰ্ব্বকার বাঙ্গালা বৈষ্ণব গ্রন্থেও “শিলহট বলিয়া এই নগরীব উল্লেখ আছে। ইংরেজগণ সাধারণের কথিত এই “শিলহট” শব্দ হইতে নগর ও জিলার “সিলেট” নাম দিয়াছেন। শ্রীহট্ট জিলা পাঁচ ভাগে বিভক্ত করা হইয়াছে, তন্মধ্যে উত্তর শ্রীহট্টই প্রধানতম বিভাগ। উত্তর শ্রীহট্ট সবডিভিশনে (জয়ন্তীয়ার অষ্টাদশ পরগণা ব্যতীত) চল্লিশটি পরগণা আছে। সবডিভিশনেব জনসংখ্যাদি এবং পরগণা সমূহের নামাদি প্রথমভাগে বিবৃত হইয়াছে। অধিবাসি বর্গ মধ্যে যাহাদের কীৰ্ত্তিকথা প্রসঙ্গতঃ শ্রীহট্টের ইতিবৃত্তের দ্বিতীয় ভাগে বর্ণিত হয় নাই, এ স্থলে