পাতা:শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত - উত্তরাংশ.pdf/৫০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

তৃতীয় ভাগ-প্রথম খণ্ড 0 শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত ৩০ বিনিৰ্ম্মিত হয়। চৈত্র মাসে প্রতি রবিবারে তথায় একটি মেলা হইয়া থাকে এবং সে স্থান “শ্রীচৈতন্যের বাড়ী” নামে খ্যাত ও কথিত হয়। লোকে এই স্থান মাহাত্ম্যযুক্ত ও পবিত্র জ্ঞান করে এবং আজিও তথায় শ্ৰীমহাপ্রভুর আবির্ভাব ঘটে বলিয়া বিশ্বাস করে। শ্রীচৈতন্যদেবের চণ্ডীদান বুরুঙ্গায় কুটুম্ববর্গের প্রীতি বিধান পূৰ্ব্বক যখন শ্ৰীমহাপ্ৰভু তথা হইতে প্রভাতে পিতামহের গৃহে যাইতে ইচ্ছা করিলেন, তৎকালে এক বিধবা ব্রহ্মণী তাহার সম্মুখবৰ্ত্তিনী হইলেন। বিধবা যুক্ত করে বলিতে লাগিলেন—“হে মিশ্রকুল প্রদীপ আশ্ৰমত্যাগী হইলেও দীন কুটুম্বকে আপনি ত্যাগ করেন না; অবগত হইয়াছি যে আপনি অনাথ শরণ, তাই আপনার কাছে আসিয়াছি। আপনার অন্যতম পিতামহ কীৰ্ত্তিদ মিশ্রের পত্নী, দেবর ফণিবরের প্রতি অযথা অত্যাচার করায় দৈবদোষে ফণিশাপে তদ্বংশ অভাগিনীর সেই বংশের বধূ, অভাগিনীর একটি পুত্ৰ—সে মূখ। আমার মূখ পুত্রের জীবনোপায় নিৰ্দ্ধারণ করুন, এই প্রার্থনা। আমার এ প্রার্থনা পূর্ণ করিতে হইবে।” বিধবার এই অকপট ব্যবহারে শ্ৰীমহাপ্ৰভু বিগলিত হইলেন এবং তাঁহাকে তৎক্ষণাৎ একখানা "চণ্ডী” দিয়া বলিলেন—“এই লও একখানা চণ্ডী। ইহার প্রসাদাৎ তোমার পুত্র ধন ও যশোলাভে খ্যাতিমান হইবে, চণ্ডী যশোদাত্রী।” ইহার পরই শ্ৰীমহাপ্রভু ঢাকা দক্ষিণ গমন করেন। শ্রীগর্ভ শ্ৰীমহাপ্রভুর করুণালাভে পরমভাগবত রূপে গণ্য ও ভক্তির অধিকাৰী হন, বলা বাহুল্য। জ্ঞান ও ভক্তিচিন্তামণির অধিকারী শ্ৰীগর্ভ অচিরেই “চিন্তামণি” উপাধিতে ভূষিত হন। রাঘব বিদ্যানিধির বিবরণ শ্ৰীগৰ্ভ চিন্তামণির পুত্রের নাম রাঘব। অধ্যয়নের পর বাঘব, অধ্যাপক হইতে বিদ্যানিধি উপাধি প্রাপ্ত হইয়া দেশে আসিলে সকলে তাহাব সুখ্যাতি করিতে লাগিল। শ্রীহট্ট ইহার পূৰ্ব্বাবধিই মোসলমানাধীন হইয়াছিল, শ্রীহট্রের শাসনকর্তৃগণ তখন আমিল নামে খ্যাত ছিলেন। আমিলদের প্রসঙ্গে শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত ২য় ভাগের ৩য় ও ৪র্থ অধ্যায়ে লিখিত হইয়াছে। আমিলগণ সচরাচর নবাব নামে কথিত হইতেন। রাঘব দেশের সেই নবাব সহ পরিচিত হইতে ইচ্ছা করিয়া শ্রীহট্টে গমন করিলেন । তৎকালে নবাব দরবারে হিন্দু ও মোসলমান মৌলবী প্রভৃতি বিদ্বান লোক প্রায়শঃ উপস্থিত থাকিতেন, নবাব সভায় উপস্থিত বিদ্যানিধির বিদ্যাবত্তা ও বুদ্ধি প্রাখয্যে স্বয়ং নবাব ও সভাসদ্বর্গ তুষ্ঠ হইলেন। নবাব তাহাকে বহু পরিমাণ ভূমি ব্ৰহ্মত্র স্বরূপ দিতে চাহিলেন; কিন্তু সম্পত্তি শাসনে জ্ঞানানুশীলনের বাধা জন্মে বলিয়া রাঘব তৎসমস্ত অঙ্গীকার না কবিয়া বুরুঙ্গা ও তৎপার্শ্ববৰ্ত্তী এই চণ্ডী শ্ৰীমহাপ্ৰভু কোথায় পাইলেন । চণ্ডী কি সঙ্গে ছিল ? “যিনি মুকুদেব" প্রেমে গুহেব বাহির হন, যিনি সন্ন্যাসী হইয়াও বৈষ্ণব ধৰ্ম্মের সংস্থাপক, যিনি সৰ্ব্বদা ভালোম্মত্ত থাকিতেন, তিনি যে একখানা চণ্ডী গ্রন্থ সঙ্গে সঙ্গে রাখিতেন বা সঙ্গে আনিয়াছিলেন, এমন নহে, কথিত আছে যে, এই চণ্ডী তিনি তৎক্ষণাৎ লিখিয়া দিয়াছিলেন। তিনি অলৌকিক ক্ষমতাবলে তৎক্ষণাৎ ইহা লিখিয়াছিলেন, বলা মাষ্টতে পালে পটে, কিন্তু শ্রীচৈতন্যেণ চণ্ডাদান কতদূর বিশ্বাসা ললা যায় না, আবার গ্রন্থান্তরে শ্রীনহাপ্রভুর প্রথনাগমনকালে বুরুঙ্গায় শ্রীমদ্ভগবত দানের কথা পাওয়া যায়, সে কথার প্রতিধ্বনি উহা কি বা বলা যায় না। と、