পাতা:শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত - উত্তরাংশ.pdf/৫০০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

চতুর্থ ভাগ 0 শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত ৭২ বটে। কবি চতুর্দশ বর্ষে দেবাদিষ্ট হইয়া এ গ্রন্থ রচনায় প্রবৃত্ত হন।" কোন প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তি সহায় সম্বল হীন অবস্থায় বেহার হইতে আগমন করা অসম্ভব না হইতে পারে, কিন্তু তাহা হইলেও দূরবর্তী একটা নুতন দেশে আসিয়া একজন ভিন্ন ভাষা-ভাষী ব্যক্তি, নুতন দেশের ভাষা—প্রাদেশিক শব্দাদি পৰ্য্যন্ত, অত্যন্ত্রকাল মধ্যে আয়ত্ত করিয়া গ্রন্থ রচনা করাটা অবিশ্বাসযোগ্য মনে হওয়াই স্বাভাবিক কি না বিবেচ্য। "বেহারীর রাজকন্যার কথা" গ্রন্থকারের বেহারে থাকাকালে লিখাই স্বাভাবিক হয় আর সেই রাজকন্যার কথা তদঞ্চলের কেহ জানে না,—শ্ৰীহট্ট অঞ্চলেই ইহার এত প্রচার কেন? বস্তুতঃ অনবগত বলিয়া দীনেশবাবু এই মগধকে বেহার বলিয়া অনুমান করিয়াছেন। নারায়ণের জন্মভূমি এই মগধ শ্রীহট্টীয় মগধ হইতে অভিন্ন বোধ করিলেই সকল প্রশ্নের মীমাংসা হয় শ্রীহট্টের বিলুপ্তি মগধ রাজ্যের কথা" শ্রীহট্টের ইতিবৃত্তের পূৰ্ব্বাংশে বলা গিয়াছে। নারায়ণ দেবের জন্মস্থান এই মগধেরই অন্তর্গত নগর গ্রাম। শ্রীহট্ট জিলার সৰ্ব্বত্র বিশেষতঃ পশ্চিমাদ্ধে নারায়ণ দেবের পদ্মাপুরাণ পাওয়া যায়। এই পদ্মাপুরাণের ভনিতায় কবিবল্লভের ও দ্বজ বংশীদাসের নামও পাওয়া যায়। কবিবল্লভ যে শ্রীহট্টবাসী ছিলেন তাহা জানা গিয়াছে, আমাদেব বোধ হয় দ্বিজ বংশীও শ্রীহট্টবাসী ছিলেন, তাদৃশ অনুমান কবিবার কাবণও আছে। নারায়ণ দেবের লিখার মধ্যে পাকে প্রকারে যেমন “শ্রীহট্ট নামের উল্লেখ স্থানে স্থানে আছে ইহাদের লিখিত অংশেও তদ্রুপ পাকে প্রকারে শ্রীহট্টের (গৌড় জয়ন্তীয়া) জয় কৈলাস (জয়কলঙ্ক প্রভৃতি স্থানের এবং রত্না প্রভৃতি নদীর নামের উল্লেখ দৃষ্ট হয় ।" শ্রীযুক্ত দীনেশবাবু কেতকা দাস ৭৫ “চৌদ্দ বৎসবের কালে দেখিল স্বপন । মহাজন সহিত পতেথে দরশন। শিশু রুগত গোসাই হাতেত করি বাশী। আলিঙ্গন দিয়া বলে যায় মুখে হাসি গোবিন্দেব আশা মোর সেই সে কাবণ। প্রণাম কবিনু মুঞি ভজিব চবণ। —নাবাযণী পদ্মাপুবাণ। ৭৬. “ত্রিপুরা কৌকিকাচৈল জয়ন্তী মণি চন্দ্রিকা। কাছাড়ামাগধী দেবী অস্যামী সপ্তপবর্বত।” কামাক্তা তন্মোক্ত এই শ্লোকের উল্লেখিত সপ্তপবর্বতের মধ্যে একটি পবর্বতের নাম মাগধী। শ্রীহট্টের জনৈক প্রাচী কলি-বিরচিত “বাবম্বর” নামক একখানা পাঁচালী গ্রন্থে— “শ্রীহট্ট—নগরে বাস মগধ নৃপতি। চিরকাল করি তার বাজ্যেতে বসতি।” ইত্যাদি বিলবণ পাঠ্যে উক্ত মগধ শ্রীহট্ট বলিয়া স্পষ্ট নিৰ্দ্দেশিত হইয়াছে ইহার রাজধানীর নাম নগর ছিল, ইহাও বুঝা যায়। “নগব” জলসুখা প্রভূতি অঞ্চল লইয়াই ছিল, সন্দেহ নাই। স্টয়ার্ড সাহেবে বাঙ্গালাব ইতিহাসেও লিখিত আছে যে জলসুখাল সন্নিকটবৰ্ত্তি আজমীবগঞ্জ এক সময় এক ক্ষুদ্র রাজ্যেব বাজধানী ছিল। শ্রীহট্টের এই মগধের উল্লেখ পুথিবীর ইতিহাস ৪র্থ ভাগ ১০৩ পৃষ্ঠায দ্রষ্টব্য। ৭৭. শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত পুৰ্ব্বাংশ ২য় ভাঃ ৩য় খঃ ৩য় অধ্যায়, দ্রষ্টব্য। “উবানালে কাপড পিন্ধে কেশ মুক্ত করি।