পাতা:শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত - উত্তরাংশ.pdf/৫১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩১ দ্বিতীয় অধ্যায় : রঙ্গদ বংশ বর্ণন 0 শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত কয়েকটি গ্রাম মাত্র গ্রহণে তৎকালের ব্রাহ্মণবর্গ যে কীদৃশ নিলোভ ছিলেন, তাহার উদাহরণ প্রদর্শন করিলেন।" রাঘবের মৃত্যুর পর তাহার তনয়দ্বয়” মধ্যে মনোমালিন্য ঘটিয়াছিল; তাহাতে কনিষ্ঠ মহেশ্বর বিশারদ রেঙ্গায় গমন করেন, তদ্বংশীয়গণ তথায় আছেন। রাঘবের জ্যেষ্ঠপুত্র দুর্গাদাস চূড়ামণি। চূড়ামণির একমাত্র পুত্র হরিহর তর্কপঞ্চানন একজন সিদ্ধ পুরুষ ছিলেন। একদা তাহাকে বিষধর সপ দংশন করে, মরণ আসন্ন মনে করিয়া তিনি ইষ্টনাম জপ করিতে থাকেন ও চিত্তের একাগ্রতায়—নামগ্রহণবেশে তিনি অপূৰ্ব্ব দশা লাভ করেন। কথিত আছে যে সপ-বিষ তাহার শোণিতে বিষক্রিয়া সম্পাদন করিতে না পারাতে তিনি মৃত্যুমুখে পতিত হন নাই । শ্রীচৈতন্যচরিতামৃত গ্রন্থেও এরূপ এক দৃষ্টান্ত আছে। শ্ৰীগৌরানুচর গরুড় পণ্ডিত এইরূপ হরিনাম করিয়াই আসন্ন মৃত্যুর হাত হইতে রক্ষা পাইয়াছিলেন।” ৭ অমাবস্যায চন্দ্রোদয;বাঘবের এই ব্ৰহ্মত্র প্রাপ্তির কারণ স্বরূপ এক অলৌকিক ঘটনা শ্রীচৈতন্যবত্বাবলী গ্রন্থে লিখিত আছে কথিত আছে যে নবাব সভায় কথা প্রসঙ্গে সেদিন কোন তিথি, কেহ জিজ্ঞাসা করিলে “অদ্য পৌর্ণমাসী” বলিয়া হঠাৎ রাঘব উত্তর দেন। প্রকৃত প্রস্তাবে সেদিন অমাবস্যা তিথি ছিল এবং রাঘব ভ্রমতঃ পূর্ণিমা বলিয়া ফেলেন। নবাগত পণ্ডিতের এতাদৃশ উত্তবে সভায় হাস্য তরঙ্গ উখিত হয়, কিন্তু বিদ্যানিধি ইহাতে উত্তেজিত হইয়া উঠেন এবং সগৰ্ব্বে বলেন—“অদ্য নিশ্চয়ই চন্দ্রোদয হইবে।” ব্রাহ্মণেব এই অসম্ভব দাম্ভিকতায নবাব বিবত্ত হইলেন এবং চন্দ্রোদয় না হওয়া পর্যন্ত তাহাকে আবদ্ধ রাখিলেন। ব্রাহ্মণ ভক্তিযোগে সিদ্ধ ছিলেন। অতর্কিত ভাবে এইবাপে বিপদে পড়িয়া তিনি ভাবিত হইলেন। ইহার শেষফল কি ? হত্যা অথবা জাতি পাত! ব্রাহ্মণ ইহা বুঝিলেন, বুঝিয়া চিন্তান্ধিত চিত্তে চিন্তামণির শরণ হইলেন ৪— “মেীনী হইয়া মানসে স্বরযে ভগবান, কলঙ্ক সমুদ্র হৈতে কব পবিত্ৰাণ।”— শ্রীচৈতন্যরত্নাবলী। দিলা অবসান হইল, সেই সিদ্ধ মহাপুরুষেব কাতর ক্রদনে “কলঙ্কভঞ্জন” কর্ণপাত কবিলেন, অঘটন-ঘটন পটীয়সী শক্তিব আবির্ভাব ঘটিল, সন্ধ্যাব অন্ধকারে দিঙমণ্ডল আবরিত হইতে না হইতে উষা বিকাশেব ন্যায় পূৰ্ব্বকাশে এক খণ্ড শুভ্ৰ জ্যোতির উদ্ভাসিত হইল,—ঠিক যেন চন্দ্রোদয় ! সভাসদ্বর্গ স্তম্ভিত ও চমকিত হইল, নবাব বিচলিত হইলেন ও পণ্ডিত সকলে উপস্থিত হইযা ক্ষমা প্রার্থনায় তাহাকে তুষ্ট কবিলেন। তিনি পণ্ডিতেব সম্মানের জন্য বহুধন ও ভূসম্পত্তি দিতে চাহিলেন। রাঘব তত্তাবৎ গ্রহণ না কবিয়া বুরুঙ্গা ও তৎপাশ্ববৰ্ত্তী কয়েক খানা গ্রাম মাত্র গ্রহণ করিলেন। অমাবস্যায় চন্দ্রোদয —এই অদ্ভূত ও অসম্ভব বৃত্তান্ত যে এস্থলে সন্নিবেশিত করিলাম, ইহার কারণ যে, এই বৃত্তান্তটি উল্লেখে এ জিলায় বহুতব সংশীযগণই স্বীয় কোন এক পুৰ্ব্বপুরুষের গৌরব খ্যাপন করিয়াছেন। যদি সত্যই এরূপ একটা অসম্ভব ঘটনা ঘটিয়াই থাকে, তবে বহুস্থানে বহু বংশেই এমনটা ঘটিযাছিল,তাহা বলা যায না। ইহাতে এই মাত্র বুঝা যায যে একটা প্রসিদ্ধ ঘটনা লইয়া বিভিন্ন সমযে বিভিন্ন স্থানে লোকে টানাটানি কবে । এই কথার উদাহরণ জন্যে এই এক ঘটনাই স্থানান্তবে উল্লেখ মাত্র কবিয়া পাঠকের স্মৃতিপথাকঢ় কবিব ! এই ঘটনা নিম্বাদিত্যের আখ্যানটিই প্রথমে স্মরণ করিয়া দেয় । ৮ বংশ তালিকা-ক পরিশিষ্টে দ্রষ্টব্য। পরবর্তী ৪র্থ অধ্যাযে ইহার অধোবংশ কথা বর্ণিত হইবে। তদ্বতীিত জানা যায় যে বুরুঙ্গা হইতে মধুকৰ বংশা বসন্ত বায নামক এক ব্যক্তি লংলাব পুৰ্ব্ব পাহাড়ে গিয়া আধিপত্য কবেন, তাহাব নামে "বসন্ত ছড়া” ”বসন্তেব পথ” প্রভৃতি তথায় বহিয়াছে। কিন্তু বুরুঙ্গাব বংশ তালিকায় বসন্ত বায়ের নাম পাওয়া যায় না। ১০ “গর-৬ পণ্ডিত লয়েন শ্রীনাথ মঙ্গল। নাম বলে বিয যারে না করিল বহু৷ ”-- শ্রীচৈতন্যচরিতামুত । છે.