পাতা:শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত - উত্তরাংশ.pdf/৫১১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৮৩ জীবন বৃত্তান্ত 0 শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত লক্ষ্মীনাথের পিতা বন্ধু-পুত্রকে সস্ত্রীক প্রাপ্ত হইয়া একমাস কাল পরম যত্নে আপন গৃহে বাখিয়াছিলেন। বল্লভাচার্যের সহিত বনমালী ও কাশীনাথ নামে নবদ্বীপ প্রবাসী আরও দুইজন শ্রীহট্টীয় ব্রাহ্মণ ছিলেন। বল্লভের দ্বিবর্ষীয়া লক্ষ্মীপ্রিয়া নামী কন্যাটি প্রকৃতই লক্ষ্মীরূপিনী ছিলেন, কেননা এই একমাস কাল মধ্যে লক্ষ্মীনাথের গৃহ ধনধান্যে পরিপূবিত হইয়া উঠিযাছিল।” বল্লভাচার্য তথা হইতে স্ত্রীকন্যাদি সহ নবদ্বীপে গিয়া বাস করেন। বল্লভাচার্যের এই কন্যাকেই শ্রীগৌরাঙ্গ মহাপ্রভু বিবাহ করিয়াছিলেন। এই ঘটনার প্রায় বার পৎসর পরে শ্রীগৌরাঙ্গ পিতৃভূমি শ্রীহট্টে আগমন করেন। এই আগমন বৃত্তান্ত চৈতন্যভাগবতাদি গ্রন্থে আছে, কিন্তু তিনি যে শ্রীহট্ট পৰ্য্যন্ত গিয়াছিলেন, তাহা সুস্পষ্টভাবে বর্ণিত হয় নাই; যাহা হউক আগমন কালে পথিমধ্যে লক্ষ্মীনাথের সহিত দৈবক্রমে তাহার দেখা হয়, লক্ষ্মীনাথ পরম পণ্ডিত ও ভক্ত ছিলেন। শ্রীগৌরাঙ্গের আকার প্রকার ও ভাব স্বভাব দর্শনে তাহার বোধ হয় যে এই পরম সুন্দর যুবক মনুষ্য নহেন,—ইনি নরবেশী নারায়ণ; কাজেই তিনি এই পরমপণ্ডিত যুবককে সশিষ্য নিমন্ত্রণ করিয়া নিজ গৃহে লইয়া যান।” তাহার গৃহে শ্ৰীগৌরাঙ্গ চারিদিন অবস্থিতি করেন। পূৰ্ব্ববঙ্গ ভ্রমণ কালে শ্রীগৌরাঙ্গ কোন কোন সুপাত্রকে হরিনাথ গ্রহণের উপদেশ দেওয়ার প্রমাণ পাওয়া যায়। এই স্থানে ভক্ত লক্ষ্মীনাথকে পাইযা তিনি সংকীৰ্ত্তন রসে দেশ ভাসাইয়া দিয়াছিলেন; ইহাই বোধ হয়, তাহার প্রথম কীৰ্ত্তন। 亨 একদিন কথা প্রসঙ্গে লক্ষ্মীনাথ মহাপ্রভুকে নবদ্বীপ-প্রবাসী শ্রীহট্ট দেশীয় ব্যক্তিবর্গের কথা জিজ্ঞাসা করেন, কথাপ্রসঙ্গে বল্লভাচার্য্য-সুতা লক্ষ্মীপ্রিয়ার কথাও উপস্থিত হয়। লক্ষ্মীরূপিনী সেই মেয়েটি কেমন আছে, শ্রীগৌরাঙ্গ তাহাকে চিনেন কি না এবং তাহার কোথায় বিবাহ হইয়াছে ইত্যাদি জিজ্ঞাসা করেন। লক্ষ্ণীনাথের প্রশ্নে শ্রীগৌরাঙ্গ ঈষদ্বাস্য সহকারে বলেন যে ইহাদিগকে তিনি বিলক্ষণ রূপেই জানেন, লক্ষ্মীপ্রিয়া তাহারই পত্নী "" এই উক্তি শ্রবণে লক্ষ্মীনাথ অতিশয প্রীতিলাভ কবেন। শ্ৰীমহাপ্রভুর বাক্যে জানা যায় যে তখন নবদ্বীপে শ্রীহট্টবাসীর পৃথক একটি সমাজ গঠিত হইয়াছিল এবং তাহদের মধ্যেই আদান প্রদানাদি চলিত।** চারিদিন লক্ষ্মীনাথের গৃহে অৱস্থিতি বলিয়া শ্ৰীমহাপ্রভু বাজিতপুরের পথে শ্রীহট্টের বুরুঙ্গা ৯০. “দ্বিবর্ষীয়া এক কন্যা আছিল সঙ্গিনী। লক্ষীপ্রিয়া নাম তার লক্ষ্মী স্বরূপনী।। পরমাসুন্দরী কন্যা যার ঘরে রয়। ধনধান্যে পবিপূর্ণতাব ঘর হয়।—স্বরূপ চরিত ৯১. “লক্ষ্মীনাথ বলে প্ৰভু দেখি যে লক্ষণ। তাহাতেই বোধ হয় তুমি নারায়ণ।” —স্বরূপ চবিত। ৯২ “প্রভুকে সঙ্গে করি লক্ষ্মীনাথ লাহিড়ী। লইয়া গেলেন তিনি আপনার বাড়ী।”—ঐ ৯৩. "সেই লক্ষ্মীনাথ ভক্ত পণ্ডিত প্রধান। দিনচারিতার ঘরে প্রভু বিশ্রাম।”—ঐ ৯৪ “প্ৰভুবলে লক্ষ্মীপ্রিয়াপত্নী, বল্লভমিশ্র শ্বশুর হয়।”—ঐ ৯৫ "বহু শ্ৰীহটিয়া বিপ্র নবদ্বীপে কৈসে।সম্বন্ধবাদ চলে তথা দেশে নাহি আইসো।...ঐ