পাতা:শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত - উত্তরাংশ.pdf/৫৩২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

চতুর্থ ভাগ 0 শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত ১০৪ শ্রীচৈতন্যমঙ্গল রচয়িতা লোচনদাস লিখিয়াছেন ঃ— “শ্রীমুরারিগুপ্ত যেবা বৈসে নবদ্বীপে। নিরন্তর থাকে গোরাচাদের সমীপে। + + + + শ্লোক বন্ধে কৈল পুথি চৈতন্য চরিত। দামোদর সংবাদ মুরারির মুখোদিত। শুনিয়া আমার মনে বাড়িল পীরিত। পাঁচালী প্রবন্ধে কহো গৌরাঙ্গ চরিত।” মুরারি গুপ্ত কেবল সংস্কৃত শ্রীচৈতন্য চরিত রচনা সমাপ্ত’ করিয়াই লেখনী ত্যাগ করেন নাই তাহার সরস লেখনী মাতৃভাষার সেবায়ও নিয়োজিত হইয়াছিল। বঙ্গভাষায় তাহার বিরচিত পদাবলী কবিত্বে অতুল্য; প্রাচীন কবি জয়ানন্দ স্বীয় চৈতন্য মঙ্গলে লিখিয়াছেন ঃ “মুরারি গুপ্ত কবীন্দ্রের কবিত্ব সুশ্রেণী। পরম অক্ষর তার পদে পদে ধবনী।” শ্রীহট্টবাসীর ইহা অল্প গৌরবের কথা নহে যে, যখন বঙ্গভাষা শৈশব অতিক্রম করে নাই, তখন তাহাদেরই স্বদেশবাসী জনৈক মহাত্মা কত্ত্বক ইহা পরিপুষ্ট হয়, এবং সেই মহাত্মা কত্ত্বক লীলাগ্রঃ লিখিবার সূত্রপাত করা হয়।’ যদুনাথ কবিচন্দ্র শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত ৩য় ভাঃ ১মঃ ৩য় অধ্যায়ে রত্নগর্ভ আচার্যের প্রসঙ্গে যদুনাথের নাম করিয়াছি কেহ কেহ শ্রীহট্টের বুরুঙ্গাকে ইহার জন্মস্থান বলেন। কিন্তু চৈতন্যভাগবতে দেখিতে পাওয়া যায় যে, তাহার পিতার “প্রভুর পিতার সহ জন্ম এক গ্রাম।” এবং শ্ৰীমহাপ্রভুর পিতামহ উপেন্দ্র মিশ্র যখন বুরুঙ্গা হইতে ঢাকাদক্ষিণ আগমন করিয়াছেন ও এই স্থানেই তাহার জগন্নাথাদি পুত্ৰগণের জন্ম হয়, তখন রত্নগর্ভ-তনয় কবিবর যদুনাথকে ঢাকাদক্ষিণবাসীই বলিতে হইবে।” যদুনাথের প্রসঙ্গ পূবেৰ্ব উল্লেখিত হইলেও এস্থলে বল অসঙ্গত নহে যে কবিচন্দ্রের কবিকীৰ্ত্তি শ্রীহট্টবাসীর পরম গৌরবের বিষয়। কবিচন্দ্র বঙ্গভাষা সুললিত পদাবলী লিখিয়া ভক্ত ও সাহিত্যসমাজের বরণীয় হইয়া রহিয়াছেন। গৌরঙ্গবিষয়ক পদে ১১২. চতুৰ্দ্দশ শতাব্দীতে পঞ্চত্রিংশতি বৎসর। আষাঢ়সিতসপ্তম্যাংগ্রস্থোহয়ং পূর্ণতাংগতঃ।”—শ্রীচৈতন্যচরিতম্। ১১৩. শ্রীহট্টদর্পণ পত্রে আমাদেব লিখিত প্রবন্ধ হইতে উদ্ধৃত। ১১৪. শ্ৰীগৌরপদ তরঙ্গিনী গ্রন্থেব সুবিস্তুত ভূমিকায পদকৰ্ত্তবর্গেব পরিচয় প্রসঙ্গে সম্পাদক জগবন্ধু ভদ্র বি এ মহোদ ইহার জন্মস্থান সম্বন্ধে আমাদের মতটি উল্লেখ করিয়াছেন। এবং মতান্তরের কথাও বলিয়াছেন বলিয়া এস্থ:ে দ্বিমতেরই উল্লেখ করা গেল।