পাতা:শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত - উত্তরাংশ.pdf/৫৪৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১১৯ জীবন বৃত্তান্ত 0 শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত রমানাথ বিশারদ শ্রীহট্টের ইতিবৃত্তের ৩য় ভাঃ ৪র্থ খঃ ৩য় অধ্যায়ে বেজোড়ার বিশারদ বংশের কথা প্রসঙ্গে উক্ত হইয়াছে। যে রমানাথ হইতে সেই বংশ “বিশারদের বংশ” বলিয়া খ্যাত হইয়াছে। রমানাথের পিতার নাম রতিদেব। রমানাথের বিদ্যাশিক্ষা নবদ্বীপে হইয়াছিল। রমানাথ অতুল প্রতিভাবলে অশেষ জ্ঞান বিজ্ঞানের অধিকারী হইয়া “বিশারদ” উপাধি লাভ করিয়াছিলেন; কিন্তু ইহাই মাত্র তাহার মহিমা নহে, তিনি একজন প্রসিদ্ধ সিদ্ধ মহাপুরুষ ছিলেন, তাহার জীবনের বিবিধ অলৌকিক ঘটনা অসীম মাহাত্ম্যের পরিচায়ক। একবার তিনি অধ্যাপকগৃহ হইতে একা বাড়ীতে আসিবার কালে, কথিত আছে যে, মেঘনাতীরে উপস্থিত হইলে সন্ধ্যা হইয়া যায়, অন্ধকারে বৃষ্টিপাত হইতে থাকে, তদবস্থায় নদী পার হইবার সময়ে হঠাৎ তাহার সাধনবিষয়ক একখানি তন্ত্রগ্রন্থ মেঘনা নদীতে ডুবিয়া যায়। কোন অলৌকিক ক্ষমতাপ্রভাবে একটাপ্ৰকাণ্ড কচ্ছপ তাহা পৃষ্ঠে লইয়া ফিরাইয়া দিয়া যায়। তিনি র্তাহার বংশ পরস্পরা “কচ্ছপ মাংস অভক্ষ্য’ বলিয়া নিদ্ধারণ করেন। বাণিয়াচঙ্গের মহাদেব পঞ্চানন ও বিশাবদের মধ্যে অত্যন্ত প্রণয় ছিল, এই ইতি যাহাতে হওয়াতে উভয় পরিবারে ঘনিষ্ঠতা বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হয়। নব্য হইতেই অনেক ব্রাহ্মণ এবং বেজোড়ার চন্দ্র প্রভৃতি এ বংশের শিষ্য ছিলেন। পূৰ্ব্বে দেশে আসিলে আরও বহু ব্রাহ্মণ শিষ্যত্ব গ্রহণ করেন। বিশারদের ইষ্টনিষ্ঠা অসাধারণ ছিল। দত্তবংশীয় তদীয় জনৈক শিষ্য যাহার নামে একটি তালুক কবিয়া দিয়াছিলেন। একদা এই তালুকের রাজস্ব আদায করিতে প্যাদা আসিলে তিনি ইহা জানিতে পারেন ও সেই তালুকের স্বত্ব তৎক্ষণাৎ ত্যাগ করেন। প্রধান ধারণার ও পূজাচ্চনার পরিপন্থি ভূসম্পত্তিসহ তাহাকে সম্পর্কিত করায় সেই শিষ্যের প্রতি তিনি বিতুষ্ট হন; কথিত আছে যে তাহাতেই না কি সেই ভদ্রলোকটি রক্ত বমন করিয়া প্রাণত্যাগ করেন। একজন সন্ন্যাসী বিশারদেব নিৰ্দ্দিষ্টদিনে অকালমৃত্যুর কথা বলিয়া সতর্ক করিয়া দিয়াছিলেন। কিন্তু তখন বিশারদের জীবনান্ত হয় নাই। যে মহাপুরুষের অনুগ্রহ নানা সময়ে নানারূপে লোকের প্রভূত কল্যাণ সাধিত হইবে, তিনি অকালে কাল-কবলিত হইলে তাহদের গতি কি হইত? যাহার ইঙ্গিতে অগণ্য শিষ্যমণ্ডলী আধ্যাত্মিক উন্নতি-পথে প্রধাবিত হইবে, দৈব্যপ্রেরিত হইয়াই তাহাকে রক্ষা করিতে সন্ন্যাসী যথাকালে সমুপস্থিত হইবেন আশ্চৰ্য্য নহে। নিরূপিত দিনে বিশারদ মূচ্ছিত হইয়া পড়িয়াছিলেন বলিয়অ কথিত আছে। এই মূৰ্চ্ছাই হয়তঃ মৃত্যুরূপে পরিণত হইত, যদি তান্ত্রিক প্রক্রিয়া বলে তাহা নিরাকৃত না হইত। তাই মূৰ্চ্ছাকেই সন্ন্যাসী অপমৃত্যু বলিয়া প্রকাশ করিয়াছিলেন। ১২৯ একপ ঘটনাও অবিশ্বাস্য বা অঘটনীয় না হইতে পারে। অনুরূপ একটি আধুনিক বৃত্তান্ত ১৩২০ বাংলার আষাঢ় মাসের “অলৌকিক বহস্য” নামক পত্রে প্রকাশিত হইয়াছে। উহা প্রায় ৪০ বৎসরের ঘটনা। বসুন্দিয়া বাসী শ্ৰীযুত বিধুভুষণ ঘোষ লিখিয়াছেন যে র্তাহার গুরুদেবে অকালে একটি নিদিষ্ট দিনে মৃত্যুমুখে পতিত হইবেন বলিয়া, সদিচ্চদানন্দস্বামীনামক জনৈক উপস্থিত হইলে, গুরুদেবকে সংযম কবাইযা একটি ঘরে জনৈক সতীর্থসহ আবদ্ধ করিয়া বাখেন ও নিজে অন্য ঘরে প্রবিষ্ট হন এবং প্রাণান্ত ঘটিলেও প্রভাত হইবার পূৰ্ব্বে র্তাহার কাছে যেন কেহনা