পাতা:শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত - উত্তরাংশ.pdf/৫৫১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১২৩ জীবন বৃত্তান্ত 0 শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত রাজীবলোচন দাস মৈনা নিবাসী পণ্ডিত রাজীবলোচন দাস আধুনিক উচ্চশিক্ষা প্রাপ্ত না হইলেও স্বচেষ্টায় ও প্রগাঢ় অধ্যয়নে পাণ্ডিত্যলাভ করিযা বিদ্বৎসমাজে পরিচিত হইয়াছিলেন। করিমগঞ্জ শহব যখন প্রথম প্রতিষ্ঠিত হইয়া নদীর উত্তরতটে জকিগঞ্জ নামক স্থানে ছিল, তখন তথাকার মাইনর স্কুলে, তিনি কিছুদিন প্রধান পণ্ডিতের কাজ করিয়াছিলেন। এই সময়ে তিনি “পদ্যপ্রসূন” নামে একখানা কবিতা পুস্তক প্রণয়ন ও প্রকাশ করেন (১২৮৫ বাংলা।) স্বচেষ্টায় সংস্কৃত ভাষাতেও তাঁহার অধিকার জন্মিয়াছিল। শ্রীহট্ট শহর হইতে প্রকাশিত “শ্রীহট্ট দৰ্পণ” মাসিকপত্রে তিনি “দৃষ্টান্ত শতক’ নামক বিবল-প্রচারিত সংস্কৃত উপাদেয় গ্রন্থ খানা স্বকৃত অনুবাদ সহ ক্রমশঃ প্রকাশিত করিয়াছিলেন, (১৩০৬ বাংলা ) তিনি তখনকার শ্রীবিষ্ণুপ্রিয়া পত্রিকা, সজ্জনতোষণী, আনন্দবাজার প্রভৃতি বৈষ্ণব পত্রে রাশি রাশি বৈষ্ণব ধৰ্ম্ম সম্বন্ধীয় প্রবন্ধ প্রকাশ করিয়া গিয়াছেন। বৈষ্ণব সাহিত্যে র্তাহার অনুরাগের নিদর্শনস্বরূপ কবি লোচন দাসের শ্রীচৈতন্য মঙ্গল গ্রন্থ র্তাহারই সম্পূর্ণ অর্থব্যয়ে বহরমপুরবাধারমণ যন্ত্রাধ্যক্ষ কর্তৃক প্রকাশিত হয়। তিনি পদসমুদ্র নামক মহাগ্রন্থ প্রকাশের ব্যয়বহনে স্বীকৃত হইয়া অগ্রিম ৫০ টাকা প্রেরণ করিয়াছিলেন, কিন্তু উদ্যোক্তার পরলোকগমন ঘটায় উহা হইয়া উঠে নাই। এই সময়ে তিনি একজ গোস্বামী সন্তানের বিবাহ ব্যয় এবং একজন ব্রাহ্মণ তনয়ের উপনয়ন ব্যয় সম্পূর্ণ বহন করিয়া স্বীয় ধৰ্ম্মনিষ্ঠার পরিচয় প্রদান করেন। “পঞ্চাশোদ্ধে বনং ব্রজেৎ” ইতি নীতি স্মরণে বানগ্রস্থধৰ্ম্মের অনুকরণে তিনি ৫২ বৎসর বয়সে সস্ত্রীক বৃন্দাবনে গমন করেন। তথায় প্রায় দুই বৎসর পরমানন্দে বাস করার পব গণ্ডমালা রোগে শয্যাগত হইয়া পড়েনও মৃত্যুর কয়েক মাস পূৰ্ব্বে ভেখআশ্রয়পূৰ্ব্বক রাধাপদ দাস নাম ধারণ করেন। এই সময় খাওয়া পরার জন্য যৎসামান্য অর্থ স্ত্রীকে দিয়া অবশিষ্ট সমুদয় অর্থ (১২০০০ টাকা) গুরুদেবের পদে সমর্পণ করিয়া বিষয় হইতে সম্পূর্ণ নির্লিপ্ত হন। ৪২২ গেীবাদে (১৩১৪ বাংলা) ২০ শে বৈশাখ তাবিখে তিনি ব্রজলাভ করেন। তাহার ভেখ গ্রহণে তদীয় পত্নীও ভেখগ্রহণপূৰ্ব্বক পৃথক গৃহবাসিনী হইয়াচিলেন, তিনিও পরলোক গত হইয়াছেন। রাধাগোবিন্দ পুরকায়স্থ করিমগঞ্জের অন্তর্গত দত্তগ্রামের দত্তবংশীয়গণ অতি সন্ত্রান্ত। এই বংশে রাধাগোবিন্দ পুরকাস্থের জন্ম; রাধাগোবিন্দ তত্ৰত্য জমিদার ছিলেন। তিনি পরম ধাৰ্ম্মিক ছিলেন; তাহার বাড়ীতে শ্রীধর, বাসুদেব ও মধুসূদন প্রভৃতি দেববিগ্রহ নিত্য পূজিত হইতেন। তাহার ধৰ্ম্মনিষ্ঠায় আকৃষ্ট হইয়া সন্ন্যাসী বামায়ত প্রভৃতি র্তাহার বাড়ীতে প্রায়ই আতিথ্য গ্রহণ করিতেন। একদা এক দীৰ্ঘবাহু গীেরকান্তি মহাতেজা সন্ন্যাসী তাহার গৃহে আতিথ্য গ্রহণ করেন। রাজপুত্রের ন্যায় তাহার লাবণ্যদর্শনে ও তদীয় মধুময় ধৰ্ম্মকথা শ্রবণে প্রত্যহ বহুলোক তথায় সমবেত হইত। একদিন তত্রত রামগোবিন্দ পুরকায়স্থ, জয়গোবিন্দ পুরকায়স্থ প্রভৃতি ভব্যব্যক্তিবর্গ উপস্থিত হইলে সন্ন্যাসী বলিলেন “এস্থানে আসিবার সময় আমি যে এক অপূৰ্ব্ব বস্তুর দর্শন পাইয়াছি, তাহাই আপনাদিগকে বলিব।” এই বলিয়া সন্ন্যাসী চুপ করিয়া রহিলেন। এস্থলে বলা আবশ্যক যে সন্ন্যাসী আমান্নভোজ ছিলেন দুগ্ধ পর্যন্ত অন্নপুষ্ট করিতেন না এবং তিনি,সাধনসম্পন্ন ছিলেন। দত্ত গ্রামের