পাতা:শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত - উত্তরাংশ.pdf/৫৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩৭ তৃতীয় অধ্যায় ; উপেন্দ্র বংশ বর্ণন 0 শ্ৰীহট্টের ইতিবৃত্ত কংসারির কালক্রমে এক পুত্র হয়, তাহার নাম প্রদ্যুম্ন মিশ্র;ইহার কথা ৪র্থ ভাগে বর্ণিত হইবে। “শ্রীকৃষ্ণচৈতন্যোদয়াবলী” নামক সংস্কৃতগ্রস্থ ইহারই কৃত। পরমানন্দের বংশীয়গণ হইতেই ঢাকাদক্ষিণের মিশ্রবংশের বিস্তুতি। জগন্নাথ মিশ্র অতি তীক্ষ বুদ্ধিসম্পন্ন ছিলেন বলিয়া তিনি পিতা কর্তৃক বিদ্যাশিক্ষার্থ নবদ্বীপে প্রেরিত হইয়াছিলেন। রত্নগর্ভ প্রসঙ্গ এই সময়ে নবদ্বীপে শ্রীহট্টবাসী অনেকেই বাস করিতেন, কেহ বা বিদ্যার জন্য, কেহ বা গঙ্গাবাস হেতু। এই সকল নবদ্বীপ প্রবাসী ব্যক্তিদের মধ্যে রতুগর্ভ আচাৰ্য্য প্রধান। শ্রীচৈতন্য ভাগবতে লিখিত আছে ঃ— “রত্নগর্ভ আচাৰ্য্য বিখ্যাত তার নাম। প্রভুর পিতা সঙ্গে জন্ম এক গ্রাম। তিন পুত্র তার কৃষ্ণ-পদ-মকরন্দ কৃষ্ণানন্দ, জীব, যদুনাথ কবিচন্দ্র। ঢাকাদক্ষিণ ব্রাহ্মণ পণ্ডিতের স্থান, পণ্ডিতবর্গের বহু টোল ঢাকাদক্ষিণের গৌরব বৃদ্ধি করিত: রত্নগর্ভের বংশীয়গণ এথাকারই অধিবাসী; তাহারা বাৎস্য গোষ্ঠীর ব্রাহ্মণ ছিলেন। নবাগত জগন্নাথ মিশ্র সহ রত্নগর্ভের বিশেষ সদ্ভাব ছিল এবং উভয়েই নবদ্বীপের এক স্থানেই বাস করিতেছিলেন। রত্নগৰ্ভ শ্রীমদ্ভাগবতের পণ্ডিত ছিলেন, নবদ্বীপে র্তাহার ভাগবতের টোল ছিল। অনেক ছাত্রকে তথায় তিনি ভাগবত শিক্ষা দিতেন। তিনি অধ্যাপনা উপলক্ষে নবদ্বীপবাসী হইয়া থাকিলেও ঢাকাদক্ষিণেই তাহার মূল বাড়ী ছিল, তাহার বংশীয়গণ ঢাকাদক্ষিণেই ছিলেন এবং পরবর্তীকালে র্তাহার রত্নগর্ভের জ্যেষ্ঠপুত্র কৃষ্ণানন্দের নামে বংশপরিচয় দিয়া আসিতেছিলেন; প্রায় চল্লিশ বৎসর হইতে চলিল, উক্ত “কৃষ্ণানন্দ ভট্টের গোষ্ঠী” লোপ পাইয়াছে। তাহার দৌহিত্র, বংশীয়গণ এখনও তত্রত রায়গড় গ্রামে বাস করিতেছেন। পঞ্চ খণ্ডস্থ মিশ্রবংশীয় প্রখ্যাতনামা বিষ্ণু মিশ্রের পুত্র স্বগীয় রামলোচন মিশ্র ঐ বংশে বিবাহ করেন, পরে শ্বশুর বংশ লোপ হইলে সস্ত্রীক তথায় গমন করেন ও তত্ৰত্য অধিবাসী রূপে গণ্য হয়। কৃষ্ণানন্দের কনিষ্ঠ ভ্রাতা যদুনাথ কবিচন্দ্র প্রসিদ্ধ পদকৰ্ত্ত কবি ছিলেন, পদকল্পতরু প্রভৃতি ৪. ঢাকাদক্ষিণ তৎকালে যে এক পণ্ডিত প্রধান স্থান ছিল, শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত (পূবৰ্বাংশ) ২য় ভাগ ২য় খণ্ড ৭ম অধ্যায়ে তাহা বর্ণিত হইয়াছে। পরবত্তী ৫ম অধ্যায়ে ঢাকাদক্ষিণের নামতত্ত্ব কথিত হইবে। ৫. এস্থলে একটি বিলুপ্ত বৈদ্য বংশের কথা প্রাসঙ্গিক ভাবে উল্লেখ করিতে হইতেছে। উক্ত বাৎস গোত্রীয় ব্রাহ্মণগণের গুপ্ত খ্যাতি বিশিষ্ট এক ঘর যজমান ছিলেন। উক্ত যজমানদের শেষ বংশধর ধনরামের বিধবা পত্নী, পুরোহিতবর্গের শেষ বংশধর রুদ্রকান্ত ভট্টাচার্যকে তাহাদের ভূ-সম্পত্তি দান করিয়াছিলেন। এতদ্ব্যতীত বৰ্ত্তমান ঠাকুরবাড়ীর পূবর্বদিকে মিশ্র বংশীয় বর্গের যজমান আর একটি বিলুপ্ত বৈদ্যবংশের কথা শুনা যায়। কাহারও কাহারও মতে এই গুপ্ত বংশেই মুরারি গুপ্তের উদ্ভব। মুরারি গুপ্তের বংশ পরিচয় সম্বন্ধে পরবর্তী ৬ষ্ঠ অধ্যায় দ্রষ্টব্য।