পাতা:শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত - উত্তরাংশ.pdf/৫৮৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১৫৫ জীবন বৃত্তান্ত 0 শ্ৰীহট্টের ইতিবৃত্ত গোপীমোহন হরনাথকে স্বপ্নবৃত্তান্ত বলিলেন, শুনিয়া হরনাথ যেন একটু ধ্যানস্থ হইলেন, তারপর বলিয়া উঠিলেন “মন্দির সন্নিকটে মলত্যাগ করিয়াছিলে কেন? এখন শিবের কাছে দুধকলা মানস করিয়া শুইয়া থাক।” গোপীমোহনের বহির্দেশ গমনের কথা মনে হইলে, তিনি অপরাধযুক্ত মনে শিবকে প্রণাম করিয়া মানস করিলেন ও তৎপরে শয্যায় গিয়া শুইলেন। এবার আর তিনি স্বপ্ন দেখিলেন না। গোপীমোহন যে মন্দির সন্নিকটে বাহ্যে গিয়াছিলেন, হরনাথ ইহা দেখেন নাই, কিন্তু তিনি সাধনবলে তাহা জানিতে পারিয়াছেন দেখিয়া গোপীমোহন চমৎকৃত হইলেন এবং তিনিই পরে একথা অনেককে বলিলেন। একবার শীতকালে হরনাথ গোবৰ্দ্ধন বিদ্যাবাগীশ প্রমুখ তত্ৰত ১০/১২ জন ব্রাহ্মণ সহ বাদলাগ্রামে শ্রাদ্ধোপলক্ষে যাইতেছিলেন; বাদলার মাঠ তখন জঙ্গলময় ও ব্যাঘ্ৰাদির বসতিস্থল ছিল। শ্রাদ্ধের পরদিন পুনঃসকলে একত্রে যখন এই মাঠ পার হইতেছিলেন, একটা প্রকাণ্ড শূকর তখন তাহাদের প্রতি ধাবিত হইল। তদৃষ্টে সকলেই উদ্ধশ্বাসে দৌড়িলেন, হরনাথ তাহাদিগকে থামাইতে পারিলেন না, কিন্তু তিনি দাড়াইয়া রহিলেন। দূরে গিয়া তাহারা দেখিলেন যে হরনাথ শূকরের শরীরে হাত বুলাইয়া দিলেন, আর সে নাচিতে নাচিতে চলিয়া গেল!* তাহারা সকলেই তদবধি হরনাথকে সিদ্ধপুরুষ বলিয়া জানিল। হরনাথ যখন মাতুলালয়ে আসিতেন, তখন লাতুনিবাসী মোনশী গৌরীচরণের কাছেই অধিকাংশ সময় অতিবাহিত করিতেন; উভয়ে অত্যন্ত প্রণয় ছিল বলিয়া তিনি প্রায়শঃ লাতুতে আসিতেন ও প্রতিবারেই বহুদিন করিয়া থাকিয়া যাইতেন। হরিচরণ রায়বাহাদুর মহাখল গ্রামে সাহুবংশে হরিচরণ দাস রায়বাহাদুরের জন্ম হয়। ইহার ভ্রাতা গোলোকচন্দ্র একজন প্রতাপশালী ও ব্যয়ী ব্যক্তি ছিলেন। হরিচরণ ইহার কনিষ্ঠ । হরিচরণ বি এ পরীক্ষায় যোগ্যতার সহিত উত্তীর্ণ হইয়া আইন অধ্যয়নপূৰ্ব্বক বি এল হইয়া দেশে আসেন ও শিলচরে গিয়া উকালতি ব্যবসায় আরম্ভ করেন। আইনে তাহার বেশ অভিজ্ঞতা ছিল, তিনি অনতিবিলম্বে শিলচরের গবর্ণমেন্ট প্লিডার নিযুক্ত হন। র্তাহার কার্য্যদক্ষতা ও সদগুণে তুষ্ট হইয়া গবর্ণমেন্ট তাহাকে “রায়বাহাদুর” উপাধি দানে সম্মানিত করেন। _ হরিচরণবাবু অতি চরিত্রবান, সদালাপপরায়ণ ও সদ্ব্যয়ীব্যক্তি ছিলেন। দরিদ্রের প্রতি দয়া ও সাধারণ জনহিতে র্তাহার মতি ছিল। বিগত ১৩২২ সনের ভাদ্র মাসে তিনি পরলোকগত হইয়াছেন। হরি ঠাকুর পরগণা দিনারপুরে হরিঠাকুর নামে এক সিদ্ধপুরুষ ছিলেন, ইনি ব্রাহ্মণবংশ প্রসূত ও তরফ পরগণার খরিয়া গ্রামবাসী ছিলেন। রামেশ্বর পুরের তরফদার বংশীয়গণ র্তাহার শিষ্য ছিলেন, কিন্তু তিনি কাহারও গৃহে যাইতেন না। আবশ্যক হইলে শিষ্যদের পুকুরের পারে আসিয়া একটা নিমগাছের ১৫৩ শ্রীচৈতন্য চরিতামৃতেব পাঠক জানেন লীলাপুরুষোত্তম শ্রীচৈতনা মহাপ্রভুব পুষ্ট জলকণা স্পর্শে বন্য হস্তীযুথ বনপথে নৃত্য করিয়াছিল।