পাতা:শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত - উত্তরাংশ.pdf/৫৯১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১৬৩ উপসংহার 0 শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত “বঙ্গদেশে মহাপ্রভু হইলা প্রবেশ। অদ্যাপিও সেই ভাগ্যে ধন্য বঙ্গদেশে ।” অপিতু— অদ্যাপিও সেই ভাগ্যে সবর্ব বঙ্গ দেশে। শ্রীচৈতন্য সঙ্কীৰ্ত্তন করে স্ত্রীপুরুষে।” প্রাজ্ঞ গ্রন্থকার কর্তৃক “সৰ্ব্ব বঙ্গদেশ” পদের প্রয়োগ হওয়ায়, কেবল পদ্মাতীরবর্তী ফরিদপুরাদি নহে, শ্রীহট্ট ময়মনসিংহাদি সমস্ত পূৰ্ব্ববঙ্গ উদ্দিষ্ট হইয়াছে বলিয়াই বোধ হয়। শ্রীহট্টে গমন প্রাচীন প্রেমবিলাসাদি গ্রন্থে শ্রীগৌরাঙ্গের যে শ্রীহট্টগমন সংবাদ লিখিত আছে, তাহা হইতে জানা যায় যে, প্রথমতঃ তিনি পদ্মাতীরে অনেক ছাত্রকে শিক্ষাদান করেন, তৎসঙ্গে ঐ সকল স্থানে তিনি হরিনাত সংকীৰ্ত্তনও প্রচার করেন। পূৰ্ব্ববঙ্গেই তাঁহার কীৰ্ত্তন-বিলাস প্রথমে প্রকটিত হয়। আশ্চর্যের বিষয যে নবদ্বীপে থাকাকালে বা ইহার পরে তথায় গিয়া তিনি ভ্ৰমেও হরিনাম করেন নাই। নিমাইর তাবৎ চরিত্রই অভিনয়বৎ। পদ্মাতীরে অবস্থিতিকালে মহাপ্রভুর মনে পিতৃ জন্মভূমির দর্শনাভিলাষ জন্মে, তাহাতেই তিনি বিক্রমপুরের নুরপুর উপস্থিত হন ও তথা হইতে যাত্রা করিয়া সুবর্ণগ্রামে উপস্থিত হন। এই স্থান হইতে উত্তরপূবৰ্বাভিমুখ হইয়া ব্ৰহ্মপুত্রতীরে লাঙ্গলবন্দে পৌছেন ও ব্রহ্মপুত্র স্নানান্তে এগারসিন্দুর আগমন করেন। পরে এগারসিন্দুর হইতে তৎপূৰ্ব্ববৰ্ত্তী প্রসিদ্ধ বেতাল গ্রামে বাস করেন; ইহার অল্পদুরে ঢোলদিয়া, ভিটাদিয়া প্রভৃতি প্রাচীন পল্লী। মহাপ্রভু ভিটাদিয়াতে লক্ষ্মীনাথ লাহীড়ির গৃহে অতিথিরূপে উপনীত হন। লক্ষীনাথ পরম বৈষ্ণব ও শুদ্ধচরিত্র ব্যক্তি ছিলেন, তিন বিশেষ যত্নের সহিত মহাপ্রভুর আতিথ্যসৎকার করেন। মহাপ্রভু লক্ষ্মীনাথের গুণে—বিশেষতঃ ভক্তিতে মুগ্ধ হইয়া তাহার গৃহে কয়েক দিবস অতিবাহিত করেন; তাহার পর তিনি শ্রীহট্টে ৬ “নাম সঙ্কীৰ্ত্তন প্ৰভু নৌকা সাজাইয়া। ৯ “ব্রহ্মপুত্রে লাঙ্গলবন্দে করেন স্নান তৰ্পণ। পাব কৈল সব লোকে আপনি যাচিয়া। লোহিত্যকেনারারূপে করেন স্তবন।। —চৈতন্যমঙ্গল । তথা হইতে মহাপ্রভু পঞ্চমী ঘাট গেলা। নাম সংস্কীৰ্ত্তন প্রচার করিতে লাগিল। ৮ অধুনা ইহা পদ্মাগর্ভে বিলুপ্ত। তথা হইতে মহাপ্রভু ঘিঘাট আইলা ৭ “কিছুদিন থাকি প্রভু ভাবিলা মনেতে। সেই স্থানে পরশুরাম যজ্ঞ কৈরা ছিলা। যাইতে হইল মোর শ্রীহট্ট দেশেতে। সেই স্থানে কৈলেন প্ৰভু স্নানাদি তৰ্পণ। পিতৃ-জন্মস্থান পিতামহের দেখিয়া। এগারসিন্ধুর দেশে পরে উপস্থিত হন।”—স্বরূপ চরিত পদ্মাবতী তীরে ঝাট আসিব চলিয়া” গ্রন্থ। —-প্রেমবিলাস। (স্বরূপ চরিত ময়মনসিংহের জনৈক ব্যক্তি কৃত একখানা প্রাচীনকুলগ্রন্থ)