পাতা:শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত - উত্তরাংশ.pdf/৫৯৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

চতুর্থ ভাগ 0 শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত ১৭০ ঢাকাদক্ষিণে যায় নাই, বরগঙ্গা হইতেই ফিরিয়া আসিয়াছে। আমারও গুরুজনের আদেশ রক্ষা করা হয় নাই। আমার এই পাপের ফলেই কি বিধাতা নিমাইকে ঘরের বাহির করিলেন। যাহাকে চক্ষের অন্তরাল করিতে ভয় হইত, তাহাকে গৃহে রাখিতে পারিলাম না। যাহা হবার হইয়াছে, এক্ষণে আমার দোষে আর যেন আমার সোণারচাদের কোন অনিষ্ট না ঘটে।” এই ভাবিয়া পুত্র-স্নেহ-কাতরা জননী গোপনে আপন পুত্রের কাছে সেই বৃত্তান্তটি বলিলেন—যেরূপ র্তাহাকে ঢাকাদক্ষিণে পাঠাইতে পূবেৰ্ব শাশুড়ী—সদনে প্রতিশ্রত হন, এবং তা তৎকালে পর্যন্ত বলেন নাই, ইহা জানাইলেন, ও সেই প্রতিশ্রুতি রক্ষার জন্য পুত্রকে অনুরোধ করিলেন। তখন নিমাই মাতৃ ইচ্ছায়, তথা হইতে পুনৰ্ব্বার শ্রীহট্টে গমন করেন।” ঢাকাদক্ষিণ গমন তিনি প্রথমতঃ বুরুঙ্গায় গিয়া, পরদিন ঢাকাদক্ষিণে সন্ধ্যার সময় উপস্থিত হইয়া, পিতামহীর মনোরথ সিদ্ধ করিয়াছিলেন, পিতামহীর সহিত সম্মিলিত হইয়া ছিলেন। আমরা শ্রীহট্টের ইতিবৃত্তের এই অংশে ৩য় ভাগ ১ম খণ্ড ২য় অধ্যায়ে বুরুঙ্গার কথা এবং ৩য় অধ্যায়ে ঢাকাদক্ষিণের কথা বিস্তারিতভাবে বলিয়াছি।” কৃপাপবাযণ পাঠক এই উপলক্ষে তাহা পুনৰ্ব্বার দেখিয়া লইলে ভাল হয়। ১৯ "তব পিতামহী আছে এক প্রতিজ্ঞা আছে, তোমাকে পাঠাতে তাব ঠাই। তথা যেয়ে একবাব, বাঞ্ছাপূর্ণ কব তার তব কাছে এই ভিক্ষা চাই।”-—শ্রীচৈতন্য বিলাস। ২০. ঢাকাদক্ষিণে আগমন সময়ে সন্ন্যাসী শ্রীচৈতন্যের সহিত তদীয মাতুল বিষ্ণুদাস আসিযাছিলেন বলিযাকথিত আছে। শ্রীচৈতন্যের সন্ন্যাস দুষ্টেইহাব মনে নিবের্বদ উপস্থিত হয় এবং তিনিও সন্ন্যাস গ্রহণ কবিতে ইচ্ছ কবেন। সন্ন্যাসেব পর শ্রীচৈতন্য আহারান্তে হবীতকী চবর্বর্ণ কবিতেন, বিষ্ণুদাস তাঙ্গ যুগাইতেন। পূৰ্ব্ববঙ্গে-মুখডোবায় উপস্থিত হইলে শ্রীচৈতন্যদেব হবীতকী প্রাপ্ত হইবাব কাবণ জিজ্ঞাসিলে বিষ্ণুদাস বলেন যে আপনাব সঞ্চযতৃষ্ণ তিবোহিত হয় নাই।” শ্রীচৈতন্যের আদেশে বিষ্ণুদাস ক্রন্দন কবিতে লাগিলেন ও সেই স্থানে থাকিয়া বিবাহ করিলেন। সেই হইতে |<క ংশতক পূৰ্ব্ববঙ্গে মুখডোবায রোপিত হয ও এ পর্যন্ত উহা তথাই পল্লবিত হইতেছে। এই আখ্যাযিকা তাহারাই প্রচাব করেন। ২১. শ্ৰীমহাপ্ৰভু স্বীয় পিতামহী শোভাদেবীব সহিত ঢাকাদক্ষিণে সম্মিলিত হয়। শ্ৰীমহাপ্রভুর পিতামহীর নাম কোথায়ও শোভাদেবী, কোন গ্রন্থে কলাবতী, কোন গ্রন্থে বা কমলাবতী বলিযা লিখিত। আমবা শ্রীহট্টের ইতিবৃত্তেব ৩য় ভাগ ১ম খণ্ড ১ম অধ্যানেল একটি টীকায দেখাইয়াছি যে উপেন্দ্র মিশ্র ও তৎপিতা মধুকর মিশ্র বিভিন্নগ্রন্থে বিভিন্ন নামে উল্লেখিত হইয়াছেন, তদবস্থায় উপেন্দ্ৰ-পত্নীব নাম সম্বন্ধে তদ্রুপ না থাকিলেই আশ্চর্যের কথা হইত, বস্তুতঃ উপেন্দ্রপত্নীর একাধিক নাম থাকাই সম্ভব। শ্ৰীমহাপ্রভুব পুৰ্ব্ববঙ্গ ভ্রমণোপলক্ষে পিতামহ ও পিতামহীর সহিত মিলন প্রসঙ্গ ও উভয়ের নিত্যাধামে ঢাকাদক্ষিণে শ্ৰীমহাপ্রভুব পিতামহী সম্মিলন ঘটিলে কিরূপে প্রাচীন গ্রন্থ পত্রের বচনা অনেক স্থানে জটিল, প্রেম বিলাসে সেই জটিলতা অত্যধিক । (অনুরাগবল্লী নামক প্রাচীন গ্রন্থ শ্ৰীবিষ্ণুপ্রিযা পত্রিকায আমাদেব "প্রেমবিলাস গ্রন্থ ’প্ৰবন্ধ এবং বঙ্গ ভাষা ও সাহিত্য গ্রন্থ দেখ।) প্রেমবিলাসে সংক্ষিপ্ত ভাবে এক স্থানে (শ্রীগৌরাঙ্গ সম্মিলন ও তদনন্তর পতিপত্নীব পরলোক গমন) দুই বিভিন্ন কালের ঘটনা একত্রে বর্ণিত হওযায় জটিলতা পদিও হইযাছে। ফলতঃ পৌত্রের সম্মুখে এক সঙ্গে পিতামহ ও পিতামহী পরলোক গমন করেন নাই। তখন কেবল উপেন্দ্র মিশ্রই পরলোক গত হন। তিনি