পাতা:শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত - উত্তরাংশ.pdf/৫৯৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১৭১ উপসংহার 0 শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত শ্ৰীমহাপ্রভু ঢাকাদক্ষিণে আগমন করিলে, তৎসহ এদেশের রামদাস, মাধব ও জ্ঞানবর, কল্যাণবর প্রভৃতি অনেক ভক্ত আসিয়া সম্মিলিত হন, ইহাদিগকে তিনি স্থানে স্থানে প্রচারকার্য্যে প্রেরণ করিয়াছিলেন; সেই প্রচারের নিদর্শন দ্বার পর্যন্ত হয় নাই। উত্তরে হাজঙ্গ জাতি এই সময়েই বৈষ্ণবধৰ্ম্মে বঞ্চিত হয়, শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত উত্তরাংশে ৩য় ভাগ ২য় খণ্ড ১ম অধ্যায়ে তাহা বিবৃত করা হইয়াছে পাঠক মহাশয় অনুগ্রহপূর্বক তাহা পুনৰ্ব্বার দেখিয়া লইবেন। শ্ৰীমহাপ্রভু সন্ন্যাসের পরে শান্তিপুর হইতে ঢাকাদক্ষিণে গিয়া যেমন পিতামহীর মনোরথ সিদ্ধ করিয়াছিলেন, সেই সময় তেমনি যশোড়া গ্রামে গিয়া জগদীশ পণ্ডিতেরও মনোবাঞ্ছনা পূর্ণ করেন; এই জগদীশের নিমাই বাল্যে বিষ্ণুর নৈবেদ্য গ্রহণ করিয়াছিলেন। জগদীশগৃহে শ্রীচৈতন্য উপস্থিত হইলে যশোড়া পাঠ প্রসিদ্ধ হইয়া উঠে।" শ্রীচৈতন্য আসামে শ্ৰীমহাপ্রভু ঢাকাদক্ষিণ হইতে আসাম গমন করিয়াছিলেন। আসামে (হাজোতে) মাধবের মন্দির অতি প্রসিদ্ধ। প্রথমতঃ তিনি এই মন্দিরে আসিয়া, বরাহ কুণ্ডের উপরে একটি গোফাতে অবস্থিতি করিয়া মাধবদর্শন করেন। এই স্থানে রত্নেশ্বর বিপ্র তাহার ভক্তরূপে গণ্য হন, ইহাকে তিনি ভাগবত শিক্ষা দিয়া “রত্নপাঠক” উপাধি প্রদানান্তর মাধবের মন্দিরে পাঠক নিযুক্ত করেন। তদবধি তথায় ভাগবত পাঠ ও সংকীৰ্ত্তন প্রবৰ্ত্তিত হয়। তাহার পর মহাপ্রভু পরশুরামকুণ্ডে গমন করেন ও তথা হইতে ব্ৰহ্মকুণ্ডে গমন ও স্থানান্তর প্রত্যাবৰ্ত্তন করেন। তিনি পুনৰ্ব্বার হাজোতে আসিয়া সেই গোফাতেই অবস্থিতি করেন, সেই পবিত্র স্থান তদবধি “শ্রীচৈতন্যের গোফা” নামে খ্যাত হইয়া আসিতেছে। এই স্থানে তিনি মাগুরীয় তর্কভূষণ ও কবিশেখরকে ভাগবত শিক্ষা দেন। কথিত আছে এই সময়ে তিনি নারদের ন্যায় বীণাবাদনপূৰ্ব্বক হরিনাম গান করিয়াছিলেন। দামোদর আসামে দামোদরীয় সম্প্রদায়ের প্রবৰ্ত্তক, তিনি মাধবদর্শনে আসিয়া সাক্ষাৎ মাধব শ্রীচৈতন্যের কৃপা ও উপদেশ লাভে কৃতাৰ্থ হইয়াছিলেন।” তাহার পর প্রসিদ্ধ শঙ্করদের শ্ৰীমহাপ্রভুকে সন্ন্যাসের পূৰ্ব্বে এবং তৎপত্নী সন্ন্যাসের পরে ঢাকাদক্ষিণে পরলোকগমন করেন। প্রেমবিলাসে একস্থানে উভয় রটনা বর্ণিত হইয়াছেমাত্র। শ্ৰীকৃষ্ণচৈতন্যোদয়াবলী গ্রন্থে সন্ন্যাসের পরবর্তী আগমন বর্ণনই উদ্দেশ্য বলিয়া তদীয় প্রথমবারের শ্রীহট্টগমন কীৰ্ত্তিত হয় নাই। ২২. ইহার নামোল্লেখ পূৰ্ব্বে করিয়াছি। নিমাইর সন্ন্যাস গ্রহণ কবার সংবাদ শ্রবণে বৃদ্ধ জগদীশ গৌবশূন্য নদীয়া, বাসের অযোগ্য বোধে তাহা হইতে সস্ত্রীক যশোড়াতে গিযা গৃহ প্রস্তুত করিযা বাস করেন। “শ্রীজগদীশ চরিত্র বিজয়” নামক প্রাচীন গ্রন্থে তাহা বর্ণিত আছে। ২৩. দামোদরের শিষ্য প্রসিদ্ধ ভট্টদেব কবিরতন খৃঃ ১৫শ শতাব্দীতে আসামীভাষায় “সৎসম্প্রদায় কথা” গ্রন্থ প্রণয়ন কবেন, তাহাতে ইহা লিখিত আছে, যথাঃ “শ্রীচৈতন্য কেশব ভারতীয় শিষ্য হই সৌমার (uppor Assam) পৰ্য্যস্ত প্রেমভক্তি প্ৰবৰ্ত্তাইলা। প্রত্যেক পূৰ্ব্বদেশের আচাৰ্য চৈতন্য প্রখ্যাত ভৈল৷ + + পাছে চৈতন্য ভারতী প্ৰভু মাধব দর্শনে মনিকুটে (হাজোতে মাধব মন্দিব যে পবর্বতে) আসিলা বরাহ কুণ্ডর উপবে গোফাত রহিমাধব দর্শন হৈল, পাচে রত্নেশ্বর বিপ্রক শরণ লগাই ভাগবত পড়াই বতুপাঠক নাম দি মাধলর দ্বারত ভাগবত পড়িবে দিলা আরু যাত্রামহোৎসব সংকীৰ্ত্তন কৰ্ম্মকো মারধর দ্বাবত প্ৰবৰ্ত্তাইলা। পরে মহাপ্রভু পশুকুটারে (পরশু রামকুণ্ডে) যাই নামর নির্ণয় লেখি ব্রহ্মকুণ্ডত স্নান করি উলটি আসি সেই গোফাতে বহিলা। পাচে মাগুরীয় কণ্ঠভূষণক আর কবিশেখবা