পাতা:শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত - উত্তরাংশ.pdf/৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

উত্তরাংশে সন্নিবেশিত হয়েছে বংশ বর্ণনা ও জীবন বৃত্তান্ত। উভয় বাংলায় শ্ৰীহট্ট বা সিলেটের গুরুত্ব অপরিসীম। অতীত কথা, পারিপাশ্বিক চিত্র, প্রাকৃতিক সম্পদ, প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন সর্বোপরি হিন্দু-মুসলিম— দুই সম্প্রদায়ের বহু প্রাতঃস্মরণীয় মানুষের পুণ্যভূমি শ্রীহট্টের গৌরবগাথা রচনা তাই জরুরি ছিল। তত্ত্বনিধি মহাশয় লিখেছেন– “এই শ্ৰীহট্ট কেবল শ্রীচৈতন্যের পিতৃভূমি নহে, ইহা শ্রীঅদ্বৈতাদিরও জন্মস্থান ; এখানে বহু পার্ষদ, বহু পদকৰ্ত্তা ও বহু গ্রন্থকার জাত হইয়াছেন ; যখন জানিলাম, এই শ্রীহট্টের স্থানে স্থানে কত পূণ্যভূমি পড়িয়া রহিয়াছে, কত মহাপুরুষের কত পূণ্যকথা তাহাতে জড়িত যখন জানিলাম, কেবল স্বভাব-সম্পদে ও প্রাচীনত্বে নহে,— ধৰ্ম্মে ও জ্ঞানানুশীলনে, বিদ্যাবৈভবে ও রাজকীয় পদগৌরবে, শিল্প ও ব্যবসায়ে, সাহস বা শৌর্যবীর্য্যে সবৰ্বদিকেই শ্রীহট্টের প্রতিভা সমুজ্জ্বল রেখা পাত করিয়া চলিয়া গিয়াছে। তখন দেশের গৌরবে হৃদয় ভরিয়া গেল। ... তখন সংকল্প করিলাম— শ্রীহট্টের অতীত কথা কিছু কিছু সংগ্ৰহ করিব।” বাংলাভাষী সকল পাঠকের জন্য সেই গৌরবকথা সংবলিত শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত গ্রন্থটির পুনর্মুদ্রণের সিদ্ধান্ত আমরা গ্রহণ করেছি। এক্ষেত্রে যথাসম্ভব মূলানুগ করার চেষ্টা হয়েছে। এ কাজ দুরূহ কিন্তু অসাধ্য নয়। তবে কালের নিয়মে কিছু ক্ষেত্রে পরিবর্তন করতেই হয়েছে। যেমন, উৎস সংস্করণটি তিনটি খণ্ডে প্রকাশিত হয়েছিল। প্রথম খণ্ড পূর্বাংশ। এখানে প্রথম ও দ্বিতীয় ভাগ সন্নিবেশিত হয়েছিল। দ্বিতীয় খণ্ড উত্তরাংশ। এখানে তৃতীয় ভাগে ছিল বংশ বর্ণনা এবং চতুর্থ খণ্ড চতুর্থ ভাগে ছিল জীবন বৃত্তান্ত। পাঠকের সুবিধার্থে বর্তমান সংস্করণে তৃতীয় ও চতুর্থ ভাগ একত্র করে উত্তরাংশ একটি খণ্ডে প্রকাশ করা হল। মূল গ্রন্থের কোনও কপি বিচ্যতি না ঘটিয়েও এ কাজ সম্ভব হয়েছে মুদ্রণ ব্যবস্থার প্রভূত উন্নতির কারণে। উৎস সংস্করণে ফুটনোটে যে সব সংকেতচিহ্ন ব্যবহার করা হযেছিল, সেগুলি বর্তমানে অপ্রচলিত। তাই ফুটনোট নম্বর দেওযা হয়েছে। পুরনো হিসেব হুবহু রাখার জন্য স্ক্যান প্রযুক্তির সাহায্য নেওয়া হয়েছে। আর উৎস সংস্করণে ব্যবহৃত ছবিগুলিব মান তেমন উন্নত নয়। বেশির ভাগ ছবি অস্পষ্ট ও মলিন। সেক্ষেত্রে যে ছবিগুলি অপেক্ষাকৃত সুস্পষ্ট, সেগুলিই বর্তমান সংস্করণে দেওয়া হল। এসব সত্ত্বেও কিছু ভুল ভ্রান্তি থেকে যেতে পারে। সেটা আমাদের অনবধানবশত ও অনিচ্ছাকৃত। এই মহাগ্রন্থটি শুধু সিলেটবাসী নয়, বাংলার অগণিত পাঠকের কাছে সমাদর পেলে আমাদেব পরিশ্রম সার্থক হবে। >\ー ধন্যবাদান্তে -- জানুয়ারি ২০১০ প্রকাশক