পাতা:শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত - উত্তরাংশ.pdf/৬৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৪৫ তৃতীয় অধ্যায় ; উপেন্দ্র বংশ বর্ণন ✉ শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত । Wo মুলবাড়ী নহে। শ্ৰীমহাপ্রভুর শ্রীচরণরজো ভূষিত সেই পুণ্যস্থান পরিত্যক্ত হইয়া জঙ্গলাচ্ছাদিত নবদ্বীপে মায়াপুরে শচীভবন অপরিচিত হইয়াছিল, লাউড়ের অদ্বৈতগুহ গহনবনে আচ্ছন্ন হইয়াছিল, শ্রীহট্টের গ্রীবাপীঠ গুপ্ত হইয়াছিল, ঢাকাদক্ষিণের শ্রীসেবা জাগ্রত থাকিলেও উপেন্দ্র মিশ্রের মূলবাড়ী জঙ্গলের অন্তরালবৰ্ত্তী হইবে, বিচিত্র নহে।” যদি তাই, তবে শ্রীবিগ্রহ নূতনবাড়ীতে আসিলেন করূপে ? মোসলমান আমলে শ্রীহট্টে একজন দেওয়ান রাজস্ব বিভাগে সৰ্ব্বোচ্চ পদে নিযুক্ত থাকিতেন, ইহা শ্রীহট্টের ইতিবৃত্তের দ্বিতীয়ভাগে স্থানে স্থানে উল্লেখ করা গিয়াছে। এক স্থানে (৫ম খণ্ডে) ইহাও বলা গিয়াছে যে, ১৭৭৮ খৃষ্টাব্দে মাণিকচাদ নামে একজন দেওয়ান লিণ্ডসে সাহেবকে আপন চার্জ সমজাইয়া ঢাকায় গিয়াছিলেন। ইহাদের পদ বংশানুক্রমিক ছিল এবং কার্যানুরোধ বিদায় কিম্বা অবসর গ্রহণ করিতেন, তখন সাময়িক ভাবে নুতনলোকও তাহাদের স্থলে প্রেরিত হইতেন। শ্রীহট্টের কালেক্টরীর কাগজ পত্রে গোলাবরাম নামে এক দেওয়ানের নাম পাওয়া যায়; ইনি ঐরাপ সাময়িকভাবে শ্রীহট্টে আগমন করিয়াছিলেন। ইহার বাড়ী কোন স্থানে ছিল জানিবার উপায় নাই; তিনি এদেশবাসী ছিলেন না। তিনি ধৰ্ম্মপরায়ণ ব্যক্তি ছিলেন ও মুর্শিদাবাদ হইতে শ্রীহট্টে প্রেরিত হন। তিনি গঙ্গা ছাড়িয়া নিত্যন্ত অনিচ্ছা পূৰ্ব্বকই শ্রীহট্টে আগমন করিয়াছিলেন। শ্রীহট্টে পৌছিয়া নিজপদে প্রতিষ্ঠিত হইয়াই তিনি অনুসন্ধান লন যে, নিকটে কোন বিখ্যাত “জাগ্রত’ দেবস্থান আছে কি না। তদনুসারে ঢাকাদক্ষিণের ঠাকুববাড়ীর সংবাদই তিনি প্রাপ্ত হইলেন। তিনি শুনিলেন যে এক ক্ষুদ্রায়তন বাটিকায় কাচা ঘরে ঠাকুর আছেন এবং ইহাও জানিলেন যে স্থলপথে শ্রীহট্ট হইতে তথায় যাইবার ভাল পথ নাই । ঠাকুরবাড়ীর বৃত্তান্ত জ্ঞাত হইয়া ধৰ্ম্মপরায়ণ দেওয়ানের ঠাকুর দর্শনের একান্ত অভিপ্রায় জন্মিল। কথিত আছে, তখন তিনি এই মৰ্ম্মে এই আদেশ লিপি প্রচার কবিলেন যে, শ্রীহট্ট হইতে ঢাকাদক্ষিণের ঠাকুরবাড়া পৰ্য্যন্ত একটি জাঙ্গাল (শড়ক) অতি সত্বর প্রস্তুত হইবে, শহর হইতে ক্রমশঃ যাহার যাহার ভূমিব উপর দিয়া ঐ জাঙ্গাল যাইবে, সেই সেই জমিদার তাহাদের নিজাধিকৃত ভূমির উপর রাস্তা বাধাইয়া দিবেন। তদ্ভিন্ন ঢাকাদক্ষিণের জমিদার প্রতি, সাত দিনের মধ্যে উত্তম স্থানে দেবতার জনা এক মন্দির নিৰ্ম্মাণের আদেশ হইল। আদেশ প্রতিপালিত হইতে বিলম্ব ঘটিল না। শড়ক, সেতু, মন্দির সমস্তই হইল। সংবাদ পাইয়া যথাকলে দেওয়ান দেবদর্শনে আগমন করিলেন ও দেবতা দেখিয়া পর সুখী হইলেন। পরদিন দেওয়ান ফিবিয়া যাইবেন, কিন্তু সে রাত্রে তিনি এক বিচিত্র স্বপ্ন দর্শন করিলেন, কথিত আছে দেওয়ান দেখিয়াছিলেন যে, দিব্যদৃষ্ট দেবমূৰ্ত্তি বিষাদ মলিন বদনে যেন বলিতেছেন, “এতদিন ব্রাহ্মণের পর্ণকুটীরে ভালই ছিলাম তুমি মোসলমানের মসজিদে আনিয়া কষ্ট দিতেছ।” নুতন মন্দির এত সত্বর কিরূপে প্রস্তুত হইল ? দেওয়ানের মনে একথা জাগিযাছিল; স্বপ্নে সন্দেহেব কারণ জন্মিল এবং তিনি ইহার তথ্য গ্রহণে জ্ঞাত হইলেন যে, যথায় মন্দির নিৰ্ম্মিত হইয়াছে, সেস্থানে এক পরিত্যক্ত মসজিদ ছিল, তাহারই উপকরণে এই মন্দির নিৰ্ম্মিত। =========-کی ১৬ শ্ৰীমহাপ্রভুব ইচ্ছায মূল বাড়ীব পরিচয পাওযায়, মিশ্ৰঠাকুরগণ উহা প্রকাশাথ চেষ্টান্ধিত হইযা কেহ উহাব একাংশ পবিষ্কৃত কবিযাছেন, ও ৩থায এক নুতন শ্রীবিগ্রহ স্থাপিত হইয়াছেন।