পাতা:শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত - উত্তরাংশ.pdf/৬৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

তৃতীয় ভাগ-প্রথম খণ্ড 0 শ্ৰীহট্টের ইতিবৃত্ত ৪৬ স্বপ্নটি দেওয়ানের মানসিক সন্দেহ জনিত চিন্তা প্রসূত বা যাহাই হউক, এই স্বপ্নের জন্যই তিনি দেবতাকে আর সেই মন্দিরে রাখা সঙ্গত বোধ করিলেন না। তিনি স্বয়ং স্থান পর্যবেক্ষণ পূৰ্ব্বক পূজকদের গৃহপাশ্বে একটি স্থান মনোনীত করিলেন ও অনতিবিলম্বেই নূতন ইষ্টক দ্বারা এক সুন্দর মন্দির প্রস্তুত করাইলেন। অতঃপর দেবতাকে সেই নবনিৰ্ম্মিত মন্দিরে স্থানান্তরিত করা হয়। ফলতঃ যে কারণেই হউক, দেওয়ান কত্ত্বক দেবতাকে পর্ণকুটীর হইতে আর এক মন্দিরে এবং অচিরেই সেই মন্দির হইতে অন্য নূতন মন্দিরে নেওয়া হয়।” নূতন বাড়ীর সম্মুখে দেওয়ান কর্তৃক এক বিস্তুত দীঘীও খনিত হইয়াছিল। বৰ্ত্তমানে শ্ৰীমহাপ্ৰভু যে বাড়ীতে আছেন, উহাই সেই বাড়ী। দেওয়ানের দীর্ঘিকাতীরেই “শ্রীচৈতন্যগঞ্জ” নামে বাজার বসিয়াছে। আর দেওয়ান কৃত সেই জাঙ্গালের ভগ্নাবশেষ বৰ্ত্তমানে “দেওয়ানের শড়ক" নামে খ্যাত আছে। ঐ শড়ক বাউশীর নিকট দেওরভাগা ছড়া পার হইয়াছে, তথাকার উচ্চ ইষ্টক সেতু “দেওয়ানের পোল” নামে খ্যাত। দেওয়ানের শড়ক শ্রীহট্ট শহর হইতে নদীর দক্ষিণতীরের ধারে ধারে চলিয়া সুলতানপুরের নিকট বৰ্ত্তমান শ্রীহট্ট কাছাড় রোড পার হইয়া ঢাকাদক্ষিণ চলিয়াছে ও বৰ্ত্তমানে প্রতি বৎসরই ক্রমশঃ কৃষক কত্ত্বক ক্ষয় পাইতেছে। ১৭৪০ খৃষ্টাব্দের পূৰ্ব্বে কোন এক সময় উক্ত দেওয়ান শ্রীহট্টে সাময়িক ভাবে আগমন করিয়াছিলেন।” উপেন্দ্র মিশ্রের বংশে বহুতর প্রধান পুরুষ জন্মগ্রহণ করেন, কিন্তু র্তাহাদের বিবরণ অতি সামান্যই জানিতে পারা যায়। বংশাখ্যান-হরিনাথ শ্ৰীমহাপ্রভু যখন ঢাকাদক্ষিণে আগমন করেন, পরমানন্দের পুত্র রামরত্ব ও তাহার পুত্র নীলরত্ন তখন বৰ্ত্তমান। নীলরত্বের বৃদ্ধ প্রপৌত্রের নাম হরিনাথ ন্যায়বাগীশ । ইনি মিথিলা দেশে গিয়া ন্যায়শাস্ত্র অধ্যায়ন করতঃ ন্যায়বাগীশ উপাধি প্রাপ্ত হন ও দেশে আসিয়া সৰ্ব্বপ্রথম ন্যায়শাস্ত্রের এক টোল সংস্থাপন কবেন। শ্রীহট্টের ছাত্র দেশে থাকিয়া ন্যায়শিক্ষার সুবিধা পাইয়াৰ্তাহার টোলে অনেকেই ভৰ্ত্তি হইয়াছিল। তিনি নিজ পুত্র গোপীনাথকে স্বয়ং ন্যায়শাস্ত্রে সুশিক্ষিত করিয়া উপাধি দান করিয়াছিলেন। ইহার খুল্লতাত-ভ্রাত রামজীবনের পুত্র জগজীবন “মনঃসন্তোষণী”নামে এক গ্রন্থ রচনা করেন, ঐ গ্রন্থেও শ্রীচৈতন্যের শ্রীহট্টাগমন বৃত্তান্ত লিখিত আছে।” ২৭ বৰ্ত্তমানে শ্রীবিগ্রহ দেওয়ানের নিৰ্ম্মিত উক্ত মন্দিরে নহেন, কিঞ্চিৎ পরে বিনিৰ্ম্মিত তৎপাশ্বপত্তী এক মন্দিরে আছেন। দত্তবালিব দেববংশীযমণিরামেবভ্রাতা লঘাটিনামক স্থানের জনৈকসাহ-কন্যাবিবাহ কবিয অবস্থার উন্নতির সহিত মিশ্রবংশীয পবশুরামেরযত্নে এই মন্দিরনিৰ্ম্মাণকবিয়াদিঘাছিলেন।মণিবামেরবৃদ্ধ প্রপৌত্র জীবিতআছেন। ভোগমন্দিরটিঢাকাদক্ষিণের বায়গডনিবাসীসাহু জাতীয় জিতবাম প্রায ১২০ বৎসর পূৰ্ব্বেনিৰ্ম্মাণ করাইয়া দেন। দেওযানের প্রাচীন মন্দিরও তৎপার্শ্ববর্তী মন্দিরের চিত্র প্রদত্ত হইল। ২৮. পৰ্ব্বাংশের ৪র্থ অধ্যায়ে দেওয়ান গোলাবরামের নামোল্লেখ আছে, সেই স্থলে উল্লেখিত তারিখটাতে ছপাব গুরুতর হইয়াছে। ২৯ ভুটিয়াকাগজে লিখিত জগজীবনেব পুথি আমলা পাইযাছিলেম এবং বিশ্বকোষ কাৰ্য্যালযে তাহা প্রেরণ করিযাছিলাম। তখন আমবা জ্ঞাত হই যে, এ গ্রন্থ প্রায় দ্বিশত বর্ষ পুৰ্ব্বেকার। বন্ধুবর শ্রীযুক্ত দীনেশচন্দ্র সেন তাহাব “বঙ্গভাষা ও সাহিত্য” গ্রন্থেও ইহার প্রাচীনত্তেল নির্দেশ কলিয়াছেন। কিন্তু মিশ্র বংশাবলীতে দুই জগজীবনের নাম পাওয়া যায়। তন্মধ্যে