পাতা:শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত - উত্তরাংশ.pdf/৭৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

তৃতীয় ভাগ-প্রথম খণ্ড 0 শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত ৫৬ বিদ্যানিধি রতাইর জ্ঞান গৌরবে বিমোহিত হইয়া সহযে পরাজয় স্বীকার করিলেন; আর বিচার চলিল না, বিদ্যানিধি বেগমপুরের রাজপণ্ডিতি পাইলেন না;রতাই সদাশিবের মাটির সম্মান রাখিয়া দিলেন। অরঙ্গপুরীর চাতুৰ্য্য সদাশিবের মাটির কিয়দংশ পরে অরঙ্গপুর গ্রাস করিয়া ফেলে। কথিত আছে, অরঙ্গপুরের এক মোসলমান মহিলার বেগমপুরে এক “ভাইনারি” অর্থাৎ সখী বা সই ছিলেন, স্বপুত্রের বাসের জন্য র্তাহার নিকট উক্ত মোসলমান মহিলা কিছু ভূমি দান প্রার্থনা করিয়া দুইহাল ভূমি দান প্রাপ্ত হন; এবং তথায় উঠিয়া গিয়া বাস করেন। এই দুই হাল ভূমির উপলক্ষে মোসলমানগণের সংখ্যা বেগমপুরে পরে ক্রমশঃ বৃদ্ধি পাইতে থাকে। তখন বেগমপুর হইতে আপত্তি উত্থাপিত হয়। প্রাতঃকৃত্য সম্পাদনের জন্য জলপূর্ণ ঘট সহ মাঠে যাওয়ার রীতি গ্রাম্য অঞ্চলে অনেক স্থলেই আছে। একদিন বেগমপুরবাসিগণ মাঠে গিয়া স্তুপীকৃত মৃত্তিকার এক দীর্ঘ জাঙ্গাল অবলোকন করিল ও অনেকে কৌতুহল প্রযুক্ত কাছে গিয়া দেখিল যে নিম্নে এক খাল কৰ্ত্তন করা হইয়াছে। তখন আর বুঝিতে বাকি থাকিল না যে, অরঙ্গপুরের মোসলমানগণ বরাকনদী হইতে পশ্চিমমুখে অনেকদূর পর্যন্ত রাতারাতি এই খাল কাটিয়া অন্যায়রপে সীমা নির্দেশ করিয়া লইয়াছে। অরঙ্গপুরের লোকেরাও আসিল। উভয়পক্ষেএতদুপলক্ষে প্রথমতঃ বাগবিতণ্ডা ও ক্রমে বিবাদ বাধিয়া পরে লোষ্ট্ৰক্ষেপণ আরম্ভ হইল;অরঙ্গপুরের দল অচিরেই পৃষ্ঠভঙ্গ দিল। বেগমপুরের দল জয়শ্রী লইয়া ঘরে আসিল, কিন্তু সেই পৰ্য্যন্তই। স্থান দখল বিষয়ে আর কিছুহইল না। সেই খনিত খালই অরঙ্গপুরের ২. পূৰ্ব্বোক্ত অজ্ঞাতনামা কবি বলিতেছেন ঃ– “ভহনারী আইলা বাটী, পাতি বহলা পাটি। চাইলা একখান চাটি, পাইলা দুইহাল মাটি।” অর্থাৎ সই বাটিকাতে আসিলেন, (বসিতে তাহাকে পাটি দেওয়া হইলে) তিনি পাটি পাতিযা বসিলেন। এবং (তিনি) একখানা চাটি (বা চাটাই) বিছাইবার উপযুক্ত মাটি (অর্থাৎ সামান্য একটুকু ভূমি) চাহিলেন, (তাহাতে) দুইহাল ভূমি (দানস্বরূপ) প্রাপ্ত হইলেন। পূৰ্ব্বোক্ত অজ্ঞাত কবি এ ঘটনাও স্মবণ বাখিযাছেন ঃ– “একহাতে ইটা, আর হাতে লোটা । বুকে পিঠে ইটা, সে সয কয়টা ? এ কি আর মরদানি ?—-রাইতে মাটি কাটা ।

  • চাবি চোখে কবে কাম, সেইত বাপের বেটা।”

অর্থাৎ বেগমপুবীদেব একহাতে লোটা ছিল, তাহাবা অন্য হাতে ইটা (লোষ্ট্র) লইয়া (অরঙ্গপুবীব প্রতি) ক্ষেপণ কবিয়াছিল। (প্রতিপক্ষেব) বুকে ও পিঠে (অর্থাৎ পথে পশ্চাতে সমানে) এটা (পতিত হইতে লাগিল; কে কতটি সহিবে ? (কাজেই পলাযন কলিল ) ( তাহালা) বাত্রে মাটি কাটিয়া ছিল (ও চোবেব মত খাল খনন কবিযা সীমা নির্দেশ কবিয়াছিল) ইহাতে আর পুরুষ্যত্ব কি? যে ব্যক্তি চক্ষুব সম্মুখে প্রকাশ্যে কাৰ্য্য কবিতে পাবে, সেই তো (প্রকৃত) পিতাব পুত্র, সেই তো পুরুষ। এই কবিতা দ্বারা গ্রাম্য কবি বেগমপুত্ববাসীগণেব সাহসেব প্রশংসা ও অবঙ্গপুবীদেব চাতুৰ্য্যেব কথাই প্রকাশ করিয়াছেন। I