ঘোরালেন। বের করে এনে এগিয়ে দিলেন ভেতরের সম্পদ। পরম যত্নে বিদ্যাবিনোদ হাতে তুলে নিলেন জমিদার বিপিনচন্দ্রের পূর্বপুরুষের সযত্ন রক্ষিত সম্পদ, লালসালুতে মোড়া একটি পেটিকা। একশো সত্তর বছর ধরে রক্ষিত দুটি মহামূল্যবান রাজকীয় সনন্দ।
উন্মোচিত হতে চলেছে এক অন্ধকারের যবনিকা। তক্তপোশে বিছানো সাদা চাদরের উপর মেলে রাখা হল দু’খানা ভূর্জপত্রের টুকরো। দুটো প্রাচীন বঙ্গলিপির নথি।
মহামহোপাধ্যায়ের কাপড়ের ঝুলি থেকে বেরোল একটি ম্যাগ্নিফায়িং গ্লাস, গোল আতসকাচ। এটা তাঁর বিদেশি বন্ধু উইলিয়ম ক্রুকের উপহার। প্রত্নতত্ত্ব ঘাঁটাঘাটি করতে হলে কত কি সরঞ্জাম লাগে তিনি শিখে নিয়েছেন সাহেবদের সঙ্গে থেকে থেকে।
ঘরের ভিতর স্তব্ধ নীরবতা। পণ্ডিতমশাই কাচ নিয়ে ঝুঁকে পড়েছেন নথিগুলোর উপর। অক্ষরগুলো ঝাপসা, পত্রগুলো ভেঙে ভেঙে পড়ে যাছে।
বুক কাঁপছে জমিদারমশাইর।
অনেকক্ষণ পর ওদিক থেকে আওয়াজ শোনা গেল,
—আমার সঙ্গে তো সব সরঞ্জাম নেই। আতি সন্তর্পণে নাড়াচাড়া না করলে পত্রগুলো ভেঙে গুড়ো গুড়ো হয়ে যাবে। পাঠোদ্ধার করা যাবে না।
বিপিনচন্দ্র বুঝতে পারছেন এ কাজ সহজ নয় মোটেই। এও বুঝতে তাঁর বাকি নেই বিদ্যাবিনোদ ছাড়া আর কেউ এর পাঠোদ্ধারও করতে পারবে না।
—আপনি দয়া করে এতদূর এসেছেন, এত ক্লেশ স্বীকার করেছেন। যদি এই নথিগুলো আপনি নিয়ে যান, পাঠোদ্ধার করেন তবে আমি চিরকৃতজ্ঞ থাকব। এ বুঝি এতদিন আপনার জন্যই অপেক্ষায় ছিল। নিয়ে