এরই মাঝে স্বেচ্ছাসেবী দল গঠিত হয়েছে ডলু, ধুমকর, উজান নগর, জারৈলতলা, সোনাপুর, বিক্রমপুর, ভাঙ্গারপার, জাটিঙ্গামুখ এবং নদী পেরিয়ে অরুণাচল পর্যন্ত। গ্রামে ঘন ঘন পদযাত্রা, মাদক দ্রব্য নিবারণী অভিযান, পুকুর ও জলাশয় সংস্কার, মশক নিবারণ অভিযান তো আছেই। এদিকে কাছারি বস্তিতে আফিমের ব্যাপক ব্যবহার দেখে ওঁরা নিজেরাও আতঙ্কিত। স্বেচ্ছাসেবীদের দলে নাম লেখানো হল যজ্ঞ বর্মন, সম্পূর্ণ বর্মন, নিশিকান্ত বর্মনের। এরা উজানগ্রাম, চন্দ্রপুর, ডলু, বড়রামপুর, ধুমকর ঘুরে ঘুরে তালিকা বানালেন, কারা এর গ্রাহক। সত্তর আশি উর্ধ্বের আফিমসেবীদের আবগারি লাইসেন্সের ব্যবস্থা রেখে বাকি সবাইকে এ থেকে দূরে থাকার প্রচারাভিযান নিয়ে এখন ব্যস্ততা।
সস্ত্রীক রমেশচন্দ্র ভট্টাচার্য সাহিত্যসরস্বতীর উৎসাহে জাতীয় বিদ্যালয়ের কাজ আবার শুরু হল। মেয়েদের লেখাপড়া, আত্মনির্ভরতার প্রশিক্ষণ পরিকল্পনায় অনুজপ্রতীম যতীন্দ্রমোহন এগিয়ে এলেন। নিজ বাড়িতে তো বটেই গ্রামেও একাধিক বাড়িতে বসল তাঁত। মেয়েরা সূতা কাটার সঙ্গে সঙ্গে একটু একটু করে লেখাপড়াও শুরু করলেন। ঘরে কনিষ্ঠ ভ্রাতার তত্ত্বাবধানে বাড়ির বউরা নতুন উদ্যমে লেখা পড়ায় মন দিলেন। যতীন্দ্রমোহনের স্ত্রী তো বাংলা লিখতেনই। এবার চিঠির খামে ইংরেজিতে বারনামা লিখে ডাকবাক্সে পাঠাতে শুরু করলেন। বাড়ির মেয়েদের মধ্যে ‘দামোদর গ্রন্থাবলী’, ‘রূপের মূল্য’ প্রভৃতি বই নিয়ে গোপনে কাড়াকাড়িও চলল।
এতসব কিছুর মধ্যে যামিনীমোহনের কলিকাতা গিয়ে পরীক্ষা দেওয়া আর হয়ে উঠছে না। ডাক্তারি সার্টিফিকেট হাতে না এলেও প্রয়োজনে টুকটাক ঔষধ দেওয়া শুরু করতেই হল। বাড়ির একটি কক্ষ ঔষধের বাক্স, আলমারি, বই, নানা সাইজের শিশি দিয়ে সাজানোও হল। সঙ্গে সহকারি হিসেবে জুটল গ্রামের খেয়ালি ব্যক্তি রূপনাথ দেবের পুত্র রক্ষনাথ।