পাতা:ষষ্ঠীতৎপুরুষনামা - সঞ্জীব দেবলস্কর (২০২৩).pdf/১০৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১০৮
ষষ্ঠীতৎপুরুষনামা

 খান সাহেবের রসিকতার পরে সভার কাজ যেন স্তিমিত হয়ে যাচ্ছিল।

 জুলাইর অধিবেশনে ব্রজেনবাবুর প্রস্তাবের সঙ্গে নতুন কিছু আর সংযোজনের প্রয়োজন আছ কি না জিজ্ঞেস করা হলে বিপিনচন্দ্র বললেন ‘কাছাড়ের বিষয়টি তো এখনও আলোচনায় এল না।’ ওদিকে আসাম উপত্যকার একজন সদস্যও এলেন না দেখে তো স্পষ্ট বোঝা গেল, এ ব্যাপারে তাঁরা আপাতত মুখ খুলতে রাজি নন। কিন্তু এ নিয়ে ইতিমধ্যেই দুই উপত্যকার মধ্যে যেমন একটা শীতল যুদ্ধ শুরু হয়েছে, তেমনি কাছাড় এবং সিলেট দ্বন্দ্বের একটা আভাসও স্পষ্ট হচ্ছে।

 —আসাম উপত্যকার মনোভাব মোটামুটি এরকম—সিলেট তো যাবেই, কাছাড়ও যদি যেতে চায় যাক, আমাদের বলার কী থাকতে পারে? তা’ই নয় কি?

 বৈঠকে ১৮৭৪ সালের বিষয়টি নিয়েও পুনরায় আলোচনা উঠল। সিলেট তো বরাবরই বাংলার অংশ। কাছাড়ও তো তাই। আসলে সাবেক পাঁচটি জেলা নিয়ে প্রস্তাবিত অঞ্চলটিকে চিফ কমিশনার শাসিত রাজ্য হিসাবে গঠন করতে হলে রাজস্ব ঘাটতি মিটাতে যে ভূ-পরিমাণ যে জনসংখ্যার প্রয়োজন ছিল তা মিটাতেই সিলেট-কাছাড়—গোয়ালপাড়া আর খাসিয়া জয়ন্তীয়া পাহাড়কেও টেনে নিতে হল। সেদিন তো প্রতিবাদ উঠেছিল। কিন্তু নর্থব্রুক সাহেব এতে কানও দিলেন না। শুধু প্রতিশ্রুতি দিলেন আসামে এলেও বঙ্গদেশীয় অপরাপর সুযোগসুবিধা থেকে তাঁদের বঞ্চিত করা হবে না। এমনকি ‘বেঙ্গল ল্যাণ্ড রেভিনিউ রেগুলেশন’ এর সুবিধাও তাঁরা লাভ করবেন। এদিকে আবার আসামের সঙ্গে থেকে থেকে কতিপয় সিলেটি কিছুটা সমৃদ্ধির মুখও দেখলেন। এবং ক্রমে এদের কেউ কেউ দেখলেন বৃহৎ একটা প্রশাসনিক পরিকাঠামোর চেয়ে ছোট একটা ইউনিটে থাকাটা বেশ সুবিধাজনকও বটে। এ বিবেচনায়ও সুরমা উপত্যকার